ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদে রুদ্ধদ্বার বৈঠক
Published: 6th, May 2025 GMT
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রুদ্ধদ্বার আলোচনা হয়েছে। এ সময় পরিষদের সদস্যদেশের প্রতিনিধিরা উত্তেজনা কমাতে ও সংলাপে বসতে দুই দেশের প্রতি আহ্বান জানান।
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ সভার পর কোনো বিবৃতি প্রকাশ করেনি। তবে পাকিস্তান দাবি করেছে, তাদের নিজেদের লক্ষ্যগুলোর বেশির ভাগই পূর্ণ হয়েছে। সভায় পরিষদের স্থায়ী ৫টি দেশ ও অস্থায়ী ১০ দেশের সব প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনভারতের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে যাচ্ছে পাকিস্তান০৪ মে ২০২৫জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস পেহেলগামে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, হামলাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। ভারত ও পাকিস্তানকে সামরিক সংঘর্ষ এড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভুল করবেন না। সামরিক সংঘর্ষ কোনো সমাধান নয় এবং আমি শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দুই দেশের সরকারকেই সহায়তায় প্রস্তুত আছি।’
পেহেলগামে হামলাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। ভুল করবেন না। সামরিক সমাধান কোনো সমাধান নয় এবং আমি শান্তিপ্রতিষ্ঠার জন্য দুই দেশের সরকারকেই সহায়তায় প্রস্তুত আছি।আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ মহাসচিবদ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের অনুরোধে নিরাপত্তা পরিষদ জরুরি ভিত্তিতে রুদ্ধদ্বার বৈঠকটি করেছে। বৈঠকে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আসিম ইফতিখারের বক্তব্য শোনা হয়।
এক সংবাদ সম্মেলনে ইফতিখার বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা যে ধরনের মনোযোগ ও সম্পৃক্ততা দেখিয়েছেন, তার জন্য পাকিস্তান কৃতজ্ঞ। তিনি কাশ্মীর ইস্যুকে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ৭০ বছর ধরে চলমান একটি দীর্ঘস্থায়ী বিরোধ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
আরও পড়ুনসরকার যুদ্ধংদেহী হলেও পাকিস্তানের মানুষ কেন ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চান না২০ ঘণ্টা আগেভারতের সাম্প্রতিক একতরফা পদক্ষেপের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন ইফতিখার। বলেন, নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে জোরালোভাবে কথা বলেছে পাকিস্তান। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান সব সময় তার সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় প্রস্তুত আছে।
দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের অনুরোধে নিরাপত্তা পরিষদ জরুরি ভিত্তিতে রুদ্ধদ্বার বৈঠকটি করেছে। বৈঠকে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আসিম ইফতিখারের বক্তব্য শোনা হয়।দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাশ্মীর ইস্যুর সমাধানের ওপর জোর দেন ইফতিখার। বলেন, ‘কাশ্মীরি জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া এ বিরোধের সমাধান করা সম্ভব নয়।’
আরও পড়ুনভারত–পাকিস্তান উত্তেজনা: আতঙ্কে দিন কাটছে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখার দুই পাশের বাসিন্দাদের০৩ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইফত খ র
এছাড়াও পড়ুন:
শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চল, ৬৬ জনের মৃত্যু
ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে কমপক্ষে ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ এ সংখ্যা জানিয়েছে। এটি চলতি বছর ফিলিপাইনে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়গুলোর একটি। ঘূর্ণিঝড়কে কেন্দ্র করে কয়েক হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছেন।
কালমায়েগি নামের এ ঘূর্ণিঝড়ে ফিলিপাইনের জনবহুল দ্বীপ সেবুর সব শহর প্লাবিত হয়ে গেছে। সেখানে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার এক রেডিও সাক্ষাৎকারে বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, আরও ২৬ জন নিখোঁজ।
বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, লোকজন ছাদের ওপর আশ্রয় নিচ্ছেন। রাস্তায় গাড়ি ও শিপিং কনটেইনার ভেসে যাচ্ছে।
সরকারি হিসাব অনুসারে, মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে একটি সামরিক হেলিকপ্টারের ছয়জন ক্রুও আছেন। সেবুর দক্ষিণে মিন্দানাও দ্বীপে ত্রাণ তৎপরতায় সহযোগিতার জন্য হেলিকপ্টারটিকে পাঠানো হয়েছিল।
গতকাল মঙ্গলবার আগুসান দেল সুর এলাকার কাছে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নেওয়া চারটি হেলিকপ্টারের একটি ছিল এটি।
ফিলিপাইন বিমানবাহিনী বলেছে, ‘হেলিকপ্টারটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর পরপরই তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়।’ পরে বিমানবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, ছয়টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলো পাইলট ও ক্রুদের বলে মনে করা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়টি গতকাল ভোরে স্থলভাগে আঘাত হানে। এরপর এটি কিছুটা দুর্বল হয়েছে। তবে এখনো ঘণ্টায় ৮০ মাইলের (১৩০ কিলোমিটার) বেশি বেগে বাতাস বয়ে যাচ্ছে।
পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঝড়টি আজ বুধবারের মধ্যে ভিসায়াস দ্বীপপুঞ্জ অতিক্রম করে দক্ষিণ চীন সাগরের দিকে এগিয়ে যাবে।
বেসামরিক প্রতিরক্ষা কার্যালয়ের উপপ্রশাসক রাফায়েলিতো আলেজান্দ্রো আজ স্থানীয় রেডিও স্টেশন ডিজেডএমএম-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সর্বশেষ হতাহতের তথ্য জানিয়েছেন।
রাফায়েলিতো আলেজান্দ্রো বলেন, উদ্ধারকর্মীরা ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য আকাশ পরিষ্কার হওয়ার অপেক্ষায় আছেন।
আলেজান্দ্রো আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বড় বাধা হলো রাস্তায় পড়ে থাকা ধ্বংসাবশেষ ও গাড়িগুলো। আমাদের প্রথমে সেগুলো সরাতে হবে।’
প্রাদেশিক গভর্নর পামেলা বারিকুয়াত্রো এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘সেবুর পরিস্থিতি আগে এমন কখনোই হয়নি।’
আজ জাতীয় দুর্যোগ সংস্থা প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়কে কেন্দ্র করে চার লাখের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
ফিলিপাইনে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ২০টি ঝড় আঘাত হানে।
কালমায়েগি ভিয়েতনামের দিকে অগ্রসর হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এর কারণে ইতিমধ্যে সেখানে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে।