বন্দরে আইরিন ভেরাইটিজ ষ্টোরে চুরি ঘটনায় আরও একজন গ্রেপ্তার
Published: 6th, May 2025 GMT
বন্দরে নিউ আইরিন নামীয় ভেরাইটিজ ষ্টোরে চুরির ঘটনায় মহিদ (২৬)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত মহিদ বন্দর থানার একরামপুর ইস্পাহানী এলাকার ফজলুল হক মিয়ার ছেলে।
গ্রেপ্তারকৃতকে মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে বন্দর থানায় দায়েরকৃত ৫(৫)২৫ নং মামলায় আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। গত সোমবার (৫ মে) রাতে বন্দর থানার একরামপুর জেলেপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর আগে গত সোমবার (৫ মে) রাত ১টা হইতে সকাল ৮টা মধ্যে যে কোন সময়ে বন্দর থানার চৌরাপাড়াস্থ লক্ষনখোলা এলাকায় উল্লেখিত দোকানে এ চুরি ঘটনাটি ঘটে।
মামলার তথ্য সূত্রে জানাগেছে, বন্দর থানার চৌরাপাড়াস্থ লক্ষনখোলা এলাকার মৃত দাদম বেপারী ছেলে তাওলাদ মিয়া উল্লেখিত এলাকায় নিউ আইরিন ষ্টোর নামীয় একটি ভেরাইটিজ দোকান রয়েছে।
প্রতিদিনের ন্যায় সোমবার (৫ মে) রাত ১টায় দোকানী তাওলাদ হোসেন দোকানে তালা বন্ধ করে বাসায় ঘুমাতে যায়।
পরবর্তীতে একই দিন সকাল ৮টায় দোকানী তাওলাদ হোসেন দোকানে গিয়ে দেখতে পায় দোকানের টিনের চাল খোলা। তখন দোকানের তালা খুলে দোকানে প্রবেশ করে দেখতে পায় দোকানে থাকা বিভিন্ন দামি ব্যান্ডের পন্য, সিগারেট, ক্যাশবক্স থেকে নগদ টাকা এবং জমানো মাটির ব্যাংক ভেঙ্গে নগদ টাকাসহ সর্বমোট ৪,৬৫,০০০/- টাকা চুরি করে নিয়া যায় অজ্ঞাত চোরের দল।
এ ব্যাপারে দোকান মালিক তাওলাদ হোসেন আরো জানান, বন্দর থানার চৌরাপাড়া লক্ষনখোলা এলাকার তাইজুল ইসলামের ছেলে রাসু একই এলাকার মৃত আউয়াল মিস্ত্রি ছেলে আনু, মৃত আবুল মতিন মিয়ার ছেলে হাসান, আব্দুল খালেক মিয়ার ছেলে নূর ইসলাম ও একই এলাকার মৃত আলী আকবর মিয়ার ছেলে আল আমিন দীর্ঘ দিন ধরে আশেপাশের এলাকায় একাধিকবার চুরি করে হাতেনাতে ধরা পরে। আামার সন্দেহ তাহারা আমার দোকানে উক্ত চুরির ঘটনার সহিত জড়িত থাকতে পারে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, দোকানে চুরি ঘটনায় নূর ইসলাম ও আল আমিনের পর মহিদকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। চোরাইকৃত মালামাল উদ্ধারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যহত রয়েছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ এল ক র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
দাম্পত্য–জীবনে মতভেদ হলে ইসলামের নির্দেশনা
আল্লাহ বলেন, ‘আর তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে একটি হলো—তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকেই সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের মাধ্যমে প্রশান্তি লাভ করো। আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা রুম, আয়াত: ২১)
এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, দাম্পত্য জীবন মানে একজন আরেকজনের মধ্যে শান্তি খোঁজা, একে অপরকে ভালোবাসা ও দয়া দেখানো। সম্মান, বোঝাপড়া, সহানুভূতি—এই গুণগুলো ছাড়া সম্পর্ক টিকে থাকে না।
নরম স্বভাব যা কিছুতেই থাকবে, তা তাকে সুন্দর করে তোলে, আর যখনই তা থেকে তুলে নেওয়া হয়, তা কুৎসিত হয়ে যায়।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৫৯৪এক দম্পতির স্ত্রীর অভিযোগ, তাঁর স্বামী প্রতিটি বিষয়কে ‘ধর্মীয় দায়িত্ব’ বলে উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘আমি তো শুধু আল্লাহর সামনে দায়িত্ব পালন করছি, তুমি মানো বা না মানো, সেটা তোমার ব্যাপার।’
কিন্তু স্ত্রী এতে আহত হন, কারণ এতে তিনি বোঝেন—স্বামী আসলে তাঁর অনুভূতিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ইসলাম শিক্ষা দেয়—পরামর্শ যেন হয় কোমল ভাষায়, স্নেহ ও শ্রদ্ধার সঙ্গে। হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, নরম স্বভাব যা কিছুতেই থাকবে, তা তাকে সুন্দর করে তোলে, আর যখনই তা থেকে তুলে নেওয়া হয়, তা কুৎসিত হয়ে যায়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৫৯৪)
অন্য হাদিসে বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে তার পরিবারের জন্য উত্তম। আর আমি আমার পরিবারের জন্য সবচেয়ে উত্তম।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩,৮৯৫)
আরও পড়ুনআয়েশা (রা.) রাগ করলে নবীজি (সা.) কী করতেন১২ জুন ২০২৫পরামর্শ ও সমাধান কী হতে পারে?এমন পরিস্থিতি প্রায় দম্পতির মধ্যেই হয়। তাই একে জটিল করে দেখা উচিত নয়। পারস্পরিক কল্যাণ ভাবনার দিকে মনোযোগী হওয়া উচিত। কয়েকটি কথা বিশেষভাবে মনে রাখা দরকার:
আপনি যদি স্ত্রী হন, তবে শান্তভাবে বলুন—’আমি তোমার কথা শুনতে চাই, কিন্তু আমাকেও কথা বলতে দাও।’১. আলোচনার পথ খোলা রাখা
স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মতভেদ হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু সমস্যা হয় যখন একপক্ষ সবসময় আদেশ করে আর অন্য পক্ষ কথা বলার সুযোগই পায় না। ভালোবাসার সম্পর্কে এটি গ্রহণযোগ্য নয়। আপনি যদি স্ত্রী হন, তবে শান্তভাবে বলুন—’আমি তোমার কথা শুনতে চাই, কিন্তু আমাকেও কথা বলতে দাও।’ আর যদি স্বামী হন, তাহলে বুঝুন—আপনার স্ত্রীর মন খুলে কথা বলার প্রয়োজন আছে। আপনি তাঁর মালিক নন, বরং তাঁর সঙ্গী।
২. ‘পরামর্শ’ আর ‘নিয়ন্ত্রণ’ এক নয়
অনেকে পরামর্শের নামে স্ত্রীকে চাপে ফেলেন। সেটা ঠিক না। পরামর্শ তখনই কাজে আসে, যখন তা ভালোবাসা আর সম্মানের সঙ্গে দেওয়া হয়। কাউকে সম্মান করা মানে এই নয় যে তাঁর সব কথা মানতেই হবে। ইসলাম আমাদের চিন্তা ও বিচারবোধ দিয়েই সম্মানিত করেছে।
৩. বড় সিদ্ধান্তগুলো একসঙ্গে নিন
বিয়ের আগে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় না—যেমন: পোশাক, হিজাব বা নিকাব নিয়ে মতভেদ, সন্তান পালনের পদ্ধতি, সামাজিক আচার ইত্যাদি। এসব নিয়ে খোলামেলা আলাপ করুন। একসাথে বসে ঠিক করুন—কোন বিষয়গুলো তোমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং কোনগুলোতে একে অপরকে ছাড় দেওয়া সম্ভব।
আরও পড়ুনমহানবী (সা.) যেভাবে সমালোচনা মোকাবেলা করতেন২৫ জুন ২০২৫৪. সমঝোতা ও সহানুভূতির পরিবেশ তৈরি করুন
আপনার স্বামী যদি বলে, ‘আমি তো দায়িত্ব পালন করে দিচ্ছি, তুমি মানো বা না মানো সেটা তোমার ব্যাপার’, তখন আপনি বলতে পারেন: ‘আলহামদুলিল্লাহ, আপনি দায়িত্ব পালন করছেন। আমিও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই চিন্তা করি। আসুন আমরা একসাথে বুঝে নেই কী করলে আল্লাহ বেশি খুশি হবেন, আর আমাদের সম্পর্কটাও সুন্দর থাকবে।’
তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে তার পরিবারের জন্য উত্তম। আর আমি আমার পরিবারের জন্য সবচেয়ে উত্তম।সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩,৮৯৫৫. একান্ত প্রয়োজনে পারিবারিক পরামর্শ নিন
দাম্পত্যে কিছু সমস্যা এমন হয় যা বাইরের একজন বোঝাতে পারলে দুজনেই স্বস্তি পায়। একজন বিশ্বস্ত ইসলামিক কাউন্সেলর বা বুঝদার অভিভাবকের সহায়তা নিতে পারেন। বিয়ে মানে শুধু দায়িত্ব নয়, বরং একে অপরের অন্তরকে জানার, বোঝার এবং নিরাপদ আশ্রয় পাওয়ার সম্পর্ক।
মতভেদ থাকবেই। কিন্তু সেটা যেন ভালোবাসা ও সম্মানের ভিতরে থেকে সমাধান হয়। কারও মুখ বন্ধ করে দিয়ে, কাউকে নিচু দেখিয়ে কোনো সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয় না। একসাথে বসে কথা বলুন, ভুল বুঝলে ক্ষমা চান, একজন আরেকজনের হৃদয় খোলার সুযোগ তৈরি করুন।
আল্লাহ আমাদের সকলকে শান্তিপূর্ণ, ভালোবাসাময় দাম্পত্য জীবন গঠনের তাওফিক দিন।
আরও পড়ুনকোরআনের আয়াত ও দাম্পত্য সম্পর্কে সমঝোতা১৪ মার্চ ২০২৪