গণহত্যার আসামি সালাউদ্দিনের মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন আইনজীবী খোরশেদ মোল্লা
Published: 6th, May 2025 GMT
সাংবাদিকের উপর হামলা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণহত্যা মামলার আসামি সালাউদ্দীনের পক্ষে আইনি লড়াই থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছেন বিএনপিপন্থি সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লা।
মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে অনাপত্তি পত্র প্রদানের মাধ্যমে তিনি আইনজীবী হিসেবে আর মামলা পরিচালনা করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লা বলেন, সালাউদ্দীন সাংবাদিকের উপর হামলা মামলা এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণহত্যা মামলার আসামি বিষয়টি আমার জানা ছিলো না।
আসামিপক্ষ বিষয়টি আমার কাছে গোপন করেছেন। এখন আমি এই বিষয়টি জানতে পেরেছি। তাই আমি অনাপত্তি দিয়ে তার পক্ষে মামলা পরিচালনা থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। এখন থেকে আমি তার পক্ষে মামলায় লড়বো না।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকরা আমার ভাই। তাদের সাথে আমার আত্মার সম্পর্ক। তাদের বিপক্ষে গিয়ে মামলা পরিচালনা করবো এটা হতেই পারে না। বরং আমি সবসময় সাংবাদিকদের সাথে ছিলাম। সাংবাদিকদের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে লড়াইয়ের জন্য সবসময় প্রস্তুত রয়েছি।
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন মাসদাইর এলাকার সালাউদ্দিন একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং একাধিক মামলার আসামি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সে আজমেরী ওসমানের বাহিনীর সাথে ছাত্র জনতার উপর হামলা চালায়।
যে কারণে তার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণহত্যার মামলা হয়। সে মামলায় সালাউদ্দিন এজাহার ভুক্ত আসামি হিসেবে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় এবং কিছুদিন আগে জামিনে বের হয়।
আর জামিনে বের হয়েই সালাউদ্দিন আবারো সন্ত্রাসী কার্যক্রম অব্যাহত রাখে এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক উজ্জীবিত বাংলাদেশ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মিলন বিশ্বাস হৃদয় ও ফটো সাংবাদিক হাবিব খন্দকারের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে হত্যার চেষ্টা করে।
সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলা এবং হত্যা চেষ্টার অভিযোগে ফতুল্লা থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার করা হয় সালাউদ্দিনকে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: হত য ন র য়ণগঞ জ আইনজ ব আইনজ ব গণহত য র উপর
এছাড়াও পড়ুন:
আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই ১৮৭ শিক্ষার্থীর তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা নিতে নির্দেশ
সাভারের আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই ১৮৭ শিক্ষার্থী সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল—এই তিন বিষয়ে পরীক্ষায় বসতে পারবেন। তাঁদের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে হয়ে যাওয়া ভূগোল ও পরিসংখ্যান পরীক্ষা আবারও নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৭ ও ১০ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য সমাজকর্ম বিষয়ে ১৮৭ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন। ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা গত ২৬ জুন শুরু হয়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ১৮৭ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল পরীক্ষার আয়োজনে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. বাকির হোসেন মৃধা গত সপ্তাহে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও তানিম খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
আদেশের পর আইনজীবী মো. বাকির হোসেন মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৮৭ শিক্ষার্থী কলেজটির ভুলের কারণে সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল পরীক্ষা দিতে পারছিলেন না। কলেজটির এই বিষয়গুলোর অনুমতি ছিল না। যে কারণে নিজে আবেদনকারী হয়ে জনস্বার্থে রিটটি করেন। এই ১৮৭ জন শিক্ষার্থীর ওই তিন বিষয়ের পরীক্ষা নিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এখন ১৮৭ শিক্ষার্থী পরীক্ষাগুলো দিতে পারবেন।
সাভারের আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে। গত ১৪ জুলাই এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড জানায়, আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উচ্চমাধ্যমিক পাঠ্যক্রমে ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল বিষয়ে পাঠদানের কোনো অনুমোদন না থাকায় পরও কলেজ কর্তৃপক্ষ ১৮৬ জন শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন এবং ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করেছে কলেজের অনুমোদনপ্রাপ্ত ভিন্ন তিনটি বিষয়ে। কলেজ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা শুরুর অনেক আগেই পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র পেয়েছে এবং তাতে সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল বিষয়ে পরীক্ষাদানের সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও বোর্ডের সঙ্গে তারা কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি।
আদেশের বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৮৭ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে হয়ে যাওয়া ভূগোল ও পরিসংখ্যান পরীক্ষা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৭ ও ১০ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য সমাজকর্ম বিষয়ে ১৮৭ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসতে অনুমতি দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়ন বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের গত ১৪ জুলাইয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আবশ্যিক পাঁচটি পত্রের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ৯ জুলাই ২০২৫ তারিখে কলেজ কর্তৃপক্ষ (আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়) বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে ১৮৬ জন পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র পরিবর্তন করে দেওয়ার জন্য মৌখিকভাবে অনুরোধ করে। ইতিমধ্যে পূর্বনির্ধারিতসংখ্যক প্রশ্নপত্র সব কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠিয়ে দেওয়ায় বোর্ডের পক্ষে কিছু করার ছিল না। আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকা বোর্ডের আওতাধীন আরও ৬টি কলেজে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে তাঁদের সংখ্যা মাত্র ২২। অন্যদিকে আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৮৬ জন। উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ শতভাগ দায়ী।