হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার সংযোগ সড়ক পানিউমদা-শমশেরনগর সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। ব্যস্ত এ সড়কে প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। অবিলম্বে সড়কটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 
স্থানীয়দের অভিযোগ, নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা বাজার থেকে মৌলভীবাজার জেলার শমশেরনগর পর্যন্ত সড়কে গত ১০ বছরেরও কোনো সংস্কারকাজ হয়নি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের লোকজন নিয়মিত মাপজোক করে সংস্কারের আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এ সড়কে চলাচলে কষ্টের শেষ থাকে না। 
সরেজমিন দেখা যায়, প্রায় ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কে ছোট-বড় খানাখন্দে ভরপুর। কয়েকটি গর্ত বেশ গভীর। যার মধ্যে দুই ও তিন চাকার যান উল্টে যেতে পারে। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় চালক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, এ সড়কে চলাচল করতে তাদের কষ্টের পাশাপাশি সবসময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি তাড়া করে বেড়ায়। 
নবীগঞ্জ উপজেলা সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনু আহমদের ভাষ্য, গত এক মাসে মৌলভীবাজার-শমশেরনগর টু নবীগঞ্জ পানিউমদা সড়কে ২০টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে অন্তত ৫০ জন আহত হন। বিশেষ করে সড়কের টঙ্গিটিলা, ভেড়ামারা, মোকামবাজার, পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকা, শমশেরনগর লেবু বাগান এলাকায় সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। বর্ষা মৌসুমে খানাখন্দে পানি জমলে গাড়ি চালানো সম্ভব হয় না। 
পানিউমদা গ্রামের ব্যবসায়ী অনু আহমদ জানান, এই সড়কের গুরুত্ব শুধু স্থানীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়। এটি হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার মানুষের যোগাযোগের অন্যতম সড়ক। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ সব শ্রেণির মানুষের যাতায়াত এই পথেই। অথচ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। 
স্থানীয় এক বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসীর চলাচলের এটিই একমাত্র সড়ক। প্রতিদিন এ সড়কে চলাচল করতে গিয়ে তাদের কষ্টের শেষ থাকে না। ক’দিন পরপর মাপজোক হয়; কিন্তু সংস্কার আর হয় না। 
অটোরিকশা চালক কুদ্দুছ মিয়া জানান, রাস্তায় বড় বড় গর্ত হওয়ায় যাত্রী সংখ্যা কমে গেছে। এতে তাদের আয়-রোজগারও কমে গেছে।
পানিউমদা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইজাজুর রহমান বলেন, বেহাল সড়কটি এলাকাবাসীর দুঃখকষ্টের অন্যতম কারণ। তিনি মাসিক উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় সড়কটি সংস্কারের কথা অসংখ্যবার বলেছেন। বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
নবীগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মো.

জোনায়েদ আলম বলেন, গুরুত্ব বিবেচনা করে পানিউমদা-শমশেরনগর সড়ক সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের প্রাক্কলন তৈরি করে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক শমশ রনগর এ সড়ক র সড়ক

এছাড়াও পড়ুন:

ঘুষে চলে যায় বরাদ্দের অর্ধেক

সড়ক পাকাকরণের কাজ হয়েছে ৬০ শতাংশ। ঠিকাদার মোট বিলের ৮০ শতাংশ তুলে নিয়ে তিন বছর ধরে লাপাত্তা। এক কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণের কাজ থমকে যাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। 
এ চিত্র দেখা গেছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নওগাঁ মাজার থেকে রংমহল পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের। ইতোমধ্যে সড়কে বিছানো খোয়া উঠে গেছে। ধুলাবালি জমে সামান্য বৃষ্টিতে কাদাপানিতে একাকার সড়ক। 
এ বিষয়ে কথা বলতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাব্বির এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আলম হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে কল রিসিভ করলেও তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন জানান, কার্যাদেশ পাওয়ার মোট বরাদ্দের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ প্রকৌশলী,  অফিস সহকারীসহ বিভিন্ন জনকে দিতে হয়। কাজ চলাকালে উপজেলা প্রকৌশল অফিসের যেসব কর্মকর্তা বা কর্মচারী সাইটে যান, তাদের ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা হাজিরা হিসাবে দিতে হয়। এভাবে বরাদ্দের অর্ধেক টাকা চলে যায় ঘুষের পেছনে। যে টাকা থাকে, তা দিয়ে মানসম্মত কাজ করা সম্ভব হয় না। এ কারণে অনেক ঠিকাদার কিছুদিন কাজ করার পর বরাদ্দের টাকা তুলে লাপাত্তা হয়ে যান। কর্তারা তাদের কীভাবে বিল ছাড় করেন, তারাই বলতে পারবেন। অবৈধ আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশল অফিসের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী স্বীকার করেননি।
২০২১-২২ অর্থবছরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প ৩-এর আওতায় নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ মাজার থেকে রংমহল পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এ কাজের প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৬৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৯৪ টাকা। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ৬৬ লাখ ১১ হাজার ৮৯৯ টাকায় কার্যাদেশ পায় মেসার্স সাব্বির এন্টারপ্রাইজ। ২০২২ সালের ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা। এর পর তিন বছর পেরিয়ে গেলেও তা শেষ হয়নি।
২০২১ সালের ২২ অক্টোবর তৎকালিন সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ সড়ক পাকাকরণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর পর ঠিকাদার সড়কের উভয় পাশে মাটি খুঁড়ে বালু ফেলে খোয়া বিছিয়ে দেন। এর মধ্যে সড়কের কাজ হয়েছে ৬০ শতাংশ। কিন্তু ঠিকাদার ৮০ শতাংশ কাজের বিল তুলে লাপাত্তা। তিন বছর ধরে সড়কটি বেহাল পড়ে আছে। 
সড়কের কাজ শেষ করতে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বারবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিলেও 
সাড়া মেলেনি। নিরুপায় হয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ কার্যাদেশ বাতিল করেছে। এখন চলছে পুনঃদরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া। 
সড়কটি দিয়ে নওগাঁয় হজরত শাহ শরিফ জিন্দানী (র.)-এর মাজার, নওগাঁ জিন্দানী ডিগ্রি কলেজ, নওগাঁ ফাজিল মাদ্রাসা, নওগাঁ হাটবাজার, নওগাঁ সোনালী ব্যাংক, নওগাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ অফিসে যাতায়াত করতে হয়। 
উপজেলা প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেন, ‘প্রকল্প পরিচালক সড়কটি পরিদর্শন করেছেন। ঠিকাদার প্যালাসাইডিং, সাববেজ, সেন্ট ফিলিং ও ডব্লিউবিএম করেছে। সে অনুযায়ী বিল পাঠিয়েছি। বাকি কাজ না করায় বেশ কয়েকবার তাগাদা দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সাড়া না পাওয়ায় ঠিকাদারের চুক্তিপত্র বাতিল করা হয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামে আ.লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটার সময় গ্রেপ্তার ২
  • টানলেই উঠছে কার্পেটিং, কাজ বন্ধ করে দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশে ওসি পর্যায়ে ব্যাপক রদবদল
  • ধর্মপাশা-মধ্যনগর সড়ক খানাখন্দে বেহাল, ক্ষোভ
  • ঘুষে চলে যায় বরাদ্দের অর্ধেক