গুম হওয়া বিএনপি নেতা সাজেদুলের বাসায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে যাওয়ায় এসআই প্রত্যাহার
Published: 9th, May 2025 GMT
প্রায় এক যুগ আগে গুম হওয়া বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম ওরফে সুমনকে ধরতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে তাঁর বাসায় যাওয়ার ঘটনায় রাজধানীর তেজগাঁও থানা–পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আকরাম হোসেনকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার (ক্লোজ) করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান আজ শুক্রবার এই তথ্য জানান।
ঢাকা মহানগর পুলিশ বলছে, যে পুলিশ সদস্যরা সাজেদুলের বাসায় গিয়েছিলেন, তাঁরা ডিএমপিতে নতুন যোগদান করেছেন। এ কারণে তাঁরা জানতেন না যে বাসাটি প্রায় এক যুগ ধরে নিখোঁজ থাকা সাজেদুলের।
গতকাল বুধবার রাতে সাজেদুলের তেজগাঁওয়ের শাহীনবাগের বাসায় গিয়েছিল পুলিশ। এ সময় পুলিশ সদস্যরা সাজেদুলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় সমালোচনার মুখে তেজগাঁও থানার এসআই আকরামকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করল ডিএমপি।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারগুলো নিয়ে গড়ে তোলা সংগঠন ‘মায়ের ডাক’-এর অন্যতম সমন্বয়কারী সাজেদুলের বোন সানজিদা ইসলাম। এই সংগঠন গড়ে তোলার পেছনে সাজেদুলের পরিবার মূল ভূমিকা পালন করে। প্রায় এক যুগ ধরে এই সংগঠন গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফেরত পেতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
ডিএমপির দুঃখ প্রকাশ
আজ শুক্রবার ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল তেজগাঁও থানার এসআই আকরামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ মুলতবি ওয়ারেন্ট তামিলের জন্য শাহীনবাগ এলাকায় যায়। একপর্যায়ে তারা নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুলের খোঁজে তাঁর বাসায়ও যায়। এই দলের সদস্যরা সবাই ডিএমপিতে নতুন যোগ দেওয়ায় তাঁদের কেউ জানতেন না এটা এক যুগের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ সাজেদুলের।
সাজেদুল সম্পর্কে তাঁদের পূর্ব ধারণা না থাকায় এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট এসআইকে তাঁর দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য ডিএমপি আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছে। পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার প্রত্যেক ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের প্রতি ডিএমপি সহমর্মিতা প্রকাশ করছে। তাঁদের নিরাপত্তায় ডিএমপি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
আরও পড়ুনএক যুগ আগে গুম হওয়া সাজেদুলকে ধরতে পরোয়ানা নিয়ে বাসায় পুলিশ১৫ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পর ব র এক য গ ড এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু: সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে মো. আবদুল্লাহ (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মহিম উদ্দিনকে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সাময়িক বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়ি ও গুইমারার পরিস্থিতি থমথমে, নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর
ঠাকুরগাঁওয়ে মা-মেয়ের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে মারা যান আব্দুল্লাহ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফাঁড়িতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্যাতন করা হয় আবদুল্লাহকে।
মারা যাওয়া আবদুল্লাহ বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে।
সূত্র জানায়, সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড়াইল গ্রামে একটি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্দেহভাজন হিসেবে স্থানীয়রা আব্দুল্লাহকে আটক করে মারধর করে। পরে তাকে আহত অবস্থায় সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফাঁড়িতে সোপর্দ করার পর পুলিশ তার ওপর আরো নির্যাতন চালায়। এতে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে আবদুল্লাকে চারদিন আটকে রাখা হয়। ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মহিম উদ্দিন এ ঘটনা নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কিংবা থানার ওসিকে অবগত করেনি।
আব্দুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় তার ছোট ভাই সাকিল মিয়া বাদী হয়ে সোমবার নবীনগর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় সলিমগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মহিম উদ্দিন, স্থানীয় বাসিন্দা তবি মিয়া, আলামিন, আয়নাল হককে আসামি করা হয়। ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘মামলা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত এসআই মহিম উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ