দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল নিউ জিল্যান্ড ‘এ’ দলের। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডে হেরে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার শঙ্কায় ছিল। শনিবার সেই শঙ্কা উড়িয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়েছে অতিথিরা। 

সিলেটে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ম্যাচ তারা জিতেছে ৪ উইকেটে। বাংলাদেশ ‘এ’ দল ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতলেও শেষ হাসিটা হেসেছে নিউ জিল্যান্ড ‘এ’ দল। ব্যাটিংয়ে এদিন নিষ্প্রভ দিন কাটিয়েছে স্বাগতিক দল। টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে বাংলাদেশ ‘এ’ দল গুটিয়ে যায় মাত্র ২২৭ রানে। বোলাররা স্বল্প পুঁজি নিয়ে লড়াই করেছিল। তুলে নিতে পেরেছিল ৬ উইকেট। কিন্তু নিউ জিল্যান্ড ‘এ’ দল অনায়েস জয় তুলে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়েছে।     

টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা আজও ইনিংস বড় করতে পারেননি। নাঈম শেখ ৪ ও এনামুল হক বিজয় ২ রানে ফেরেন ড্রেসিংরুমে। পারভেজ হোসেন ইমনের পরিবর্তে সুযোগ পাওয়া সাইফ হাসান ২৫ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৩১ রান করে বিদায় নেন। সুযোগ পাওয়া আফিফ হোসেন ধ্রুবর ব্যাটও হাসেনি। ফিরেছেন ১ রানে। 

আরো পড়ুন:

দেশে ফিরছেন নাহিদ-রিশাদ ও বাংলাদেশের দুই সাংবাদিক

আরব আমিরাতে হওয়ার ঘোষণা দিয়েও পিএসএল স্থগিত

দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বী। ডানহাতি ব্যাটসম্যান দৃষ্টিনন্দন সব শটে এগিয়ে যান। কিন্তু বাকিরা ছিলেন নিষ্প্রভ। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান কাজী নুরুল হাসান সোহান ১২ রানে থেমে যান। মোসাদ্দেক ভুল শটে থেমে যান ৪ রানে। ১০৪ রানে ৬ উইকেট হারানো বাংলাদেশ ‘এ’ দলের বড় স্কোরের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায় সেখানেই। 

তবুও চেষ্টা করে যান ইয়াসির। সপ্তম উইকেটে নাসুমকে সঙ্গে নিয়ে ৪২ রানের জুটি গড়েন। তাতে কিছুটা প্রতিরোধ পায় স্বাগতিকরা। কিন্তু ইয়াসির ৬৩ রানে হাল ছেড়ে দিলে আবার বিপর্যয়ে পড়ে ‘এ’ দল। সেখান থেকে নাসুমের একার ৬৭ রানের ইনিংসে বাংলাদেশ ২২৮ রানের মাঝারিমানের পুঁজি পায়। 

লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি খেলতে নাসুম ৯৬ বল খেলেন। ৯ চার ও ১ ছক্কায় সাজান ইনিংসটি। তাকে দশম উইকেটে সঙ্গ দেন ইবাদত হোসেন। ২৬ বলে ১২ রান করেন তিনি। 

নিউ জিল্যান্ড ‘এ’ দলের হয়ে লেগ স্পিনার আদী অশোক ৪৪ রানে ৩ উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন বেন লিস্টার, জায়ডেন লেনক্স ও ডিন ফক্সক্রফ্ট। 

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের পেসার ও স্পিনারদের কড়া শাসন করে ১১.

২ ওভারে ৭৭ রান তুলে নেন দুই ওপেনার রায়স মাইরু ও ডেলে ফিলিপস। তাদের আটকানোর কোনো উত্তরই শুরুর ওভারগুলোতে ছিল না বোলারদের। ব্যাটিংয়ে দায়িত্বশীল ইনিংস খেলার পর বোলিংয়ে এসে এই জুটি ভাঙেন নাসুম। ৩৩ বলে ৩৩ রান করা মারিয়ু এলবিডব্লিউ হন নাসুমের বলে। এরপর খানিকটা ধাক্কা খায় অতিথি দল। 

ফিলিপস (৩৪), জো কার্টার (৩৩), অধিনায়ক কেলি (১৯) ও আব্বাস (১৯) দ্রুত ফিরলে খেলায় উত্তেজনা ছড়ায়। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের স্পিনার মোসাদ্দেক, নাঈম হাসান জোড়া উইকেট নিয়ে কিছুটা চাপ তৈরি করে। কিন্তু পেস অলরাউন্ডার ফক্সক্রফটের অপরাজিত ৩৬ ও জ্যাক ফোলকসের ২৮ রানে নিউ জিল্যান্ড ‘এ’ দলকে বিপদে পড়তে হয়নি। দারুণ জয়ে শেষটায় অন্তত মাথা উচুঁ করে মাঠ ছাড়তে পেরেছেন তারা।

সীমিত পরিসরে তিন ওয়ানডে খেলার পর এখন দুটি চারদিনের ম্যাচ খেলবে দুই দল। সিলেটে প্রথম চারদিনের ম্যাচ শুরু হবে ১৪ মে থেকে।

ঢাকা/ইয়াসিন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

প্রত্যেক জেলায় হাসপাতালের মত সিনেমা হলও দরকার: জাহিদ হাসান

‘প্রত্যেকটা জেলায় শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য যেমন হাসপাতাল আছে তেমনি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সিনেমা হল থাকা দরকার। সুস্থ বিনোদন থাকলে মানুষ নেশা, হানাহানি ও মব জাস্টিস থেকে দূরে থাকবে। আমাদের যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থান দরকার তেমনি বিনোদনের জন্য সিনেমা হল দরকার।’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানী বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘উৎসব’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী শেষে কথাগুলো বলছিলেন নন্দিত অভিনেতা জাহিদ হাসান।

‘উৎসব’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান। চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। শুটিংয়ের বহুদিন পেরিয়ে গেলেও জাহাঙ্গীর চরিত্রের মধ্যে থেকে এখনো বের হতে পারেননি বলেন জানালেন এই অভিনেতা।

জাহিদ হাসান বলেন, ‘এখনো আমি এই চরিত্রটার মধ্যে ডুবে আছি। সিনেমার আমার চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। আসলে আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের মাঝে জাহাঙ্গীর লুকিয়ে আছে। কারণ, আমাদের প্রত্যেকটি মানুষের মাঝে হিরোইজম আছে, ভিলেন আছে। আছে উপলব্ধি করার ক্ষমতা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদের সেই রিয়েলাইজেশনের সময়টা আছে। কখন মৃত্যু হয় আমরা জানি না। এই রিয়েলাইজ যদি আমাদের মধ্যে থাকে তাহলে আজ আমরা যারা জাহাঙ্গীরের মত আছি, কাল আমরা ভালো হয়ে যাবো।’

ঈদের সিনেমা মানেই এখন যেন অ্যাকশন অথবা থ্রিলার। গত কয়েক বছরে ঈদে বাজিমাত করা সিনেমাগুলোর দিকে তাকালে এমনটাই মনে হতে পারে। সেসব থেকে বেরিয়ে হাস্যরস পরিবার এবং সম্পর্কের গল্পে এবার ঈদে বাজিমাত করেছে ‘উৎসব’। এই সফলতার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করলেন প্রত্যেক শিল্পীর সততাকে।

জাহিদ হাসানের কথায়, ‘প্রডাক্টশন বয় থেকে শুরু করে এই সিনেমার সঙ্গে আমরা যারা যুক্ত ছিলাম তারা প্রত্যেকেই অনেক সৎ ছিলাম। অভিনয় নিয়ে কোনো অসৎ অবস্থার মধ্যে আমরা যাইনি। এটাই মনে হয় আমাদের সফলতার বড় বিষয়। এই সিনেমার প্রত্যেকটি দৃশ্যের সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িয়ে আছে।’

করোনা মহামারির পর অভিনয়ে খুব একটা দেখা যায়নি জাহিদ হাসানকে। নির্মাতাদের সঙ্গে অভিনয় নিয়ে খুব একটা কথা হয়নি তার। কারোনার পর ‘উৎসব’-ই তার প্রথম সিনেমা।

তার ভাষ্য, ‘করোনার পর খুব একটা অভিনয় করা হয়নি। আমাকে অভিনয়ে নেওয়া বা না নেওয়াটা নির্মাতাদের দায়িত্ব। বলতে গেলে গত কয়েকবছর সেভাবে সুযোগও আসেনি। ‘উৎসব’ সিনেমার মধ্যে সেই সুযোগটা এলো। অভিনয় করলাম। দর্শক প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝেছি অনন্ত ফেল করিনি।’

সিনেমার হলের সংখ্যা কম হওয়ায় দেশের সিনেমা সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছচ্ছে না বলে দুঃখ প্রকাশ করেন জাহিদ হাসান। সেইসঙ্গে জেলা প্রশাসকদের বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ারও অনুরোধ জানান তিনি।

জাহিদ হাসান বলেন, ‘আমার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। আমার বোন ফোন করে বললেন এখানে তো সিনেমা হলে নেই। তাই আমরা সিনেমা দেখতে পারছি না। এই কথা শুনে কষ্ট পেয়েছি। এটা সত্য সিরাজগঞ্জের মত দেশের অনেক বড় শহরে সিনেমা হল নেই। জেলা প্রশাসকসহ দায়িত্বশীল পর্যায়ে যারা আছে তাদের সবাইকে অনুরোধ করবো তারা যেন প্রত্যেকটি জেলায় সিনেমা হলের ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়ে তার বাস্তবায়ন করেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ