টেস্ট ক্রিকেট থেকে গতকাল বিরাট কোহলির অবসর ঘোষণায় অবাক হয়েছেন অনেকেই। আগামী মাসে টেস্ট সিরিজ খেলতে ইংল্যান্ড সফরে যাবে ভারত। অথচ তার আগে কিনা এ সংস্করণ থেকে সরে দাঁড়ালেন কিংবদন্তি।

ইংল্যান্ডের সাবেক ব্যাটসম্যান কেভিন পিটারসেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘বিরাট’ লিখে পাশে প্রশ্ন ও বিস্ময়বোধক চিহ্ন বসিয়ে বুঝিয়েছেন তাঁর অবসরের এ সিদ্ধান্তে তিনি অবাক। ভারতের সাবেক স্পিনার হরভজন সিং সরাসরি লিখেছেন, ‘কেন অবসরের সিদ্ধান্ত?’

এমন প্রশ্ন তুলেছেন আরও অনেকেই। কিন্তু অবসরের সিদ্ধান্ত নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে গতকাল জানানোর পর কোহলি আর এ নিয়ে মুখ খোলেননি।

তাই ৩৬ বছর বয়সী ক্রিকেটারকে নিয়ে ভক্তদের মুখে মুখে ঘুরে ফেরা একটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। প্রশ্নটি হলো—কেন টেস্ট ছাড়লেন কোহলি?

আরও পড়ুনটেস্ট ক্রিকেটের হৃদয়ে বিরাট শূন্যতা১৮ ঘণ্টা আগে

সংবাদমাধ্যমটি নিজেদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত মাসের প্রথম সপ্তাহে বিসিসিআইয়ের প্রধান নির্বাচক অজিত আগারকার এবং ভারতীয় ক্রিকেটের ক্ষমতাবান এক প্রশাসক কোহলির একটি খুদে বার্তা পান। সেই খুদে বার্তায় কোহলি টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার ইচ্ছা জানানোর পাশাপাশি ওয়ানডে চালিয়ে যাওয়ার কথাও বলেন।

পরিবারের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটানোর ইচ্ছা টেস্ট থেকে কোহলির সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, বিসিসিআই কোহলির টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্তের জন্য প্রস্তুত ছিল না। বিশেষ করে যখন ইংল্যান্ড সফর দোরগোড়ায়।

আগারকার এবং বোর্ড কর্তারা কোহলিকে অনুরোধ করেছিলেন, তাড়াহুড়া করে এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে। কোহলিকে আরেকটু সময় নেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু কোহলি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেন ও বিসিসিআই কর্তারাও তাঁকে সেখান থেকে সরাতে পারেননি।

গত ৭ মে কোহলি আবারও বিসিসিআই কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন তিনি তাঁদের জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবসরের ঘোষণা দিতে চান। বিসিসিআই থেকে তখন তাঁকে আবারও বলা হয়, জনসমক্ষে ঘোষণাটি দেওয়ার আগে কিছুদিন সময় নিতে। তখন ভারত-পাকিস্তান সংঘাতও চলছিল।

টেস্ট থেকে অবসরের সিদ্ধান্তের বিষয়টি বিসিসিআইয়ের প্রধান নির্বাচক অজিত আগারকারকে জানিয়েছিলেন বিরাট কোহলি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব স স আই অবসর র ক হল র

এছাড়াও পড়ুন:

নীরবতা ভেঙে হঠাৎ রাজনীতিকে ‘না’ বলে দিলেন শমসের মুবিন চৌধুরী

বছর দুয়েক আগেও দেশে ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত ও ‘দলছুট’ হিসেবে পরিচিত সাবেক কূটনীতিক শমসের মুবিন চৌধুরীর রাজনৈতিক অবসরের হঠাৎ ঘোষণা ছড়িয়ে পড়েছে রবিবার রাতে। 

২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দেশ যখন টালমাটাল তার কয়েক মাস আগে নামকাওয়াস্তে দল ‘তৃণমূল বিএনপি’র নেতৃত্বে আসেন শমসের মুবিন, যার পদ ছিল চেয়ারপার্সন। 

আরো পড়ুন:

‘আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে’  

একটি দল বেহেস্তের টিকিট দেখিয়ে ভোট চাচ্ছে: আমান উল্লাহ

এই দলের মহাসচিবের দায়িত্বে ছিলেন বিএনপির নারায়ণগঞ্জের আরেকজন আলোচিত নেতা তৈমূর আলম খন্দকার। রবিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে তৈমূর আলমের কাছে চিঠি দিয়ে রাজনীতিকে বিদায় বলে দিয়েছেন শমসের মুবিন।

শমসের মুবিন ও তৈমূর খন্দকারের নেতৃত্বাধীন ‘তৃণমূল বিএনপি’ ডামি দল হিসেবে আখ্যা পায়। তখন অনেকে বলেছিলেন, বিএনপি ভাঙার অপচেষ্টা হিসেবে দলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নাম ও পদ ব্যবহার করে তৃণমূল বিএনপি তৈরি করা হয়েছে। একে অনেকে ‘কিংস পার্টি’ নামে অভিহিত করেছিলেন। বিএনপি-জামায়াতসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বর্জনে ঘোষণার পরও তখন বেশ কয়েকটি দল রাতারাতি গজিয়ে ওঠে, যার একটি এই তৃণমূল বিএনপি। এসব দল অভিনব কায়দায় নির্বাচনে প্রার্থী দিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে আসার চেষ্টা করেছিল।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে, বদলে গেছে রাজনীতির হাওয়া; নিষিদ্ধ হয়েছে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম। এখন আর তৃণমূল বিএনপি বলে কোনো দলের কার্যক্রম মাঠে দেখা যায় না; শোনা যায় না তাদের দলের নেতাদের নাম। গণমাধ্যমেও তাদের কোনো উপস্থিতি নেই।

এখন নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে বিএনপি। অথচ কোথাও শমসের মুবিন চৌধুরীর নাম উচ্চারিত হয় না। রাজনীতির আড়ালেই পড়ে ছিলেন তিনি। হঠাৎ সরব হলেন; তবে রাজনৈতিক বিদায়ের ঘণ্টা ধ্বনি শোনাতেই যেন অচমকা গভীর রাতে গণমাধ্যমে হাজির হলেন তিনি।

তৈমূর খন্দকার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শমসের মুবিন চৌধুরী অনেক দিন ধরেই দলে নিষ্ক্রিয়। তাদের দলও অনেক দিন ধরে নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে। তিনি (শমসের মুবিন) ফোন করে অবসরের কথা জানিয়েছেন এবং তার কাছে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন।

তৈমূর খন্দকার বরাবর চিঠিতে শমসের মুবিন লিখেছেন, “এই মর্মে আপনাকে এবং আপনার মাধ্যমে সকলকে অবগত করছি যে, শারীরিক কারণে আমি শমসের এম চৌধুরী রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একই সঙ্গে তৃণমূল বিএনপির সকল পদ থেকে আমি পদত্যাগ করিলাম। আমার এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ইং থেকে কার্যকর হইল।”

“আমার উপরে উল্লেখিত সিদ্ধান্ত দলের সংশ্লিষ্ট এবং গণমাধ্যমে অবগত করার জন্য আপনাকে সবিনয় অনুরোধ করিলাম”, লেখেন তিনি।

সাবেক কূটনীতিক শমসের মুবিন চৌধুরী একসময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। পরে তিনি বিএনপি ছেড়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ‘বিকল্পধারা বাংলাদেশ’ নামে দলেও যোগ দিয়েছিলেন।

বিকল্পধারা ছেড়ে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তৃণমূল বিএনপি নামে দলটির চেয়ারপারসন হন শমসের মুবিন।

ঢাকা/রায়হান/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শমসের মুবিন চৌধুরী: বীর বিক্রম কূটনীতিকের ‘দলছুট’ রাজনীতি
  • নীরবতা ভেঙে হঠাৎ রাজনীতিকে ‘না’ বলে দিলেন শমসের মুবিন চৌধুরী