প্রায় সাড়ে আট ঘণ্টা পর সচল হয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা কার্যক্রম। আগামীকাল বুধবার সকাল থেকেই নির্বিঘ্নে সেবা পাবেন নাগরিকেরা। এনআইডি সার্ভারে লগইন (প্রবেশ) করার সময় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) না আসায় সারা দেশে সেবা বিঘ্নিত হয়।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

হুমায়ুন কবীর বলেন, আমাদের সার্ভারে লগইন করার জন্য ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দেওয়ার পর একটি ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ডের (ওটিপি) প্রয়োজন হয়, তা সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বন্ধ ছিল, এখন সচল হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এনআইডির ওটিপি সিস্টেমটা আমাদের এন্ডে (কাছে) না, আমরা যাদের কাছ থেকে এটা পারচেজ করি, ওদের সিস্টেমে একটু ঝামেলা হয়েছে, ওরা এটা মেরামত করেছে, এখন ওটিপি সেবা মিলছে।’

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, সকাল থেকে যে আবেদনগুলো পাঠানো হয়েছে, সেগুলো এখন ক্লিয়ার করা হচ্ছে। ওগুলো ক্লিয়ার হওয়ার পরই আবার নতুনগুলো চলে আসবে এবং আগামীকাল সকাল থেকে নাগরিকেরা নির্বিঘ্নে এনআইডি সেবা পাবেন।

এর আগে সকালে এ এস এম হুমায়ুন কবীর বলেছিলেন, ওটিপি না আসার কারণে কর্মকর্তারা সার্ভার ঢুকতে পারছিলেন না। তাই অনলাইন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ে। তবে ছবি তোলা বায়োমেট্রিক গ্রহণের কার্যক্রম চলমান ছিল।

সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শেষ হলে এতে আরও প্রায় ৬৩ লাখ ভোটার যুক্ত হতে পারেন বলে ধারণা ইসির।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বাবার জন্ম ১৯৫০ সালে, ছেলের ১৮৮৭-তে

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) জন্ম সাল ভুল হওয়ায় ছেলে-মেয়েকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে পারছেন না জিতু মিয়া নামে এক ব্যক্তি। এনআইডি কার্ডের তথ্য অনুযায়ী, তার বয়স ১৩৮ বছর, আর তার বাবার ৭৫ বছর। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। এনআইডি কার্ডের ভুল সংশোধনে নবীগঞ্জ ইউএনএর কাছে আবেদন জানিয়েছেন ওই ভুক্তভোগী। 

জিতু মিয়া নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ার ভাঙা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মান্দারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। জাতীয় পরিচয়পত্রে তার জন্ম তারিখ ১৮৮৭ সালের ২ মার্চ। অন্যদিকে জিতু মিয়ার বাবা হারিছ মিয়ার জন্ম তারিখ ১৯৫০ সালের ১ মার্চ। অর্থাৎ বাবার চেয়ে ছেলে ৬৩ বছরের বড়। 

ভুক্তভোগী জিতু মিয়া জানান, তিনি দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলেন। সম্প্রতি তার ১২ বছরের ছেলেকে মাদ্রাসায় ভর্তি করাতে গেলে এনআইডি কার্ডে বয়সের সমস্যা ধরা পড়ে। জন্মনিবন্ধন সঠিক না হওয়ায় মেয়েকেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে পারছেন না। তিনি বলেন, লেখাপড়া না করায় এনআইডিতে এত বেশি বয়স দেওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেননি তিনি। আইডি কার্ড সংশোধন করতে গত কয়েক মাস ধরে ইউনিয়ন পরিষদ ও নির্বাচন অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছেন। অনেক অর্থ ব্যয় করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না। আজ (মঙ্গলবার) হবিগঞ্জ জেলা জজ আদালতে তার বয়স এফিডেভিট করে এনআইডি সংশোধন করতে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করে এসেছেন। তিনি বলেছেন, এটা ঠিক করে দেবেন। 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কমিশনার উত্তম কুমার দাসের ভাষ্য, মূলত ২০০৭ সালে যখন সার্ভারে ভোটার তালিকা করা হয়েছিল, তখনই বয়স ভুলের সমস্যাটি হয়েছে। ভুক্তভোগী কেউ আবেদন করলে জন্মনিবন্ধন ছাড়া সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। ওই ব্যক্তির অনলাইন জন্মনিবন্ধনেরও সংশোধন থাকতে হবে। বয়স সংশোধনে জিতু মিয়ার আবেদন তারা পেয়েছেন। কিন্তু জন্মনিবন্ধন ছাড়া কিছু করতে পারছেন না। 

নবীগঞ্জ ইউএনও মো. রুহুল আমিন বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়সের ভুল কোনো ডকুমেন্টস ছাড়া সংশোধনের নিয়ম নেই। ওই ব্যক্তির আবেদন তারা পেয়েছেন। কিন্তু তার কোনো ডকুমেন্টস (প্রয়োজনীয় নথি) নেই, তিনি লেখাপড়া না করায় কোনো সার্টিফিকেট দিতে পারেননি। তাকে সিভিল সার্জনের কাছে থেকে বয়স সম্পর্কিত মেডিকেল রিপোর্ট নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। সিভিল সার্জনের রিপোর্ট পেলে জন্মনিবন্ধন সংশোধন করে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। বিষয়টি তিনি গুরুত্ব সহকারে দেখছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৮ ঘণ্টা পর সচল হলো এনআইডি কার্যক্রম
  • ভারতীয়কে এনআইডি দেওয়ায় ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা 
  • ভারতীয় নাগরিককে এনআইডি দেওয়ার অভিযোগে নির্বাচন কর্মকর্তাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
  • এনআইডিতে বাবার জন্ম ১৯৫০ সালে, ছেলের ১৮৮৭-তে!
  • বাবার জন্ম ১৯৫০ সালে, ছেলের ১৮৮৭-তে
  • ওটিপি না আসায় এনআইডি সেবায় বিঘ্ন
  • পাসওয়ার্ড থেকে পাসকিতে স্বয়ংক্রিয় রূপান্তর–সুবিধা চালু করছে গুগল