‘আর-একটিবার আয় রে সখা, প্রাণের মাঝে আয়’
Published: 15th, May 2025 GMT
‘পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়/ও সেই চোখের দেখা, প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায়/আয় আর-একটিবার আয় রে সখা, প্রাণের মাঝে আয়/মোরা সুখের দুখের কথা কব, প্রাণ জুড়াবে তায়।’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমর সেই গানের আবহ যেন ছড়িয়ে ছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাঁজে ভাঁজে। বহুদিন পর বন্ধুকে পেয়ে কেউ গেয়েছেন গান; কেউ প্রিয় সহপাঠীকে দেখে হয়েছেন আবেগাপ্লুত।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পঞ্চম সমাবর্তনে এমন নানা দৃশ্য দেখা গেছে। ফরিদপুরের ছেলে ফজলে রাব্বি চবি ছেড়েছেন বেশ আগে। এর মধ্যে চুকিয়ে ফেলেছেন বিয়ের পাটও। যার সঙ্গে আটঘাট বেঁধেছেন, সেই সামিহা জান্নাতের বাড়ি চট্টগ্রামে। ছিলেন চবিরই ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী। এবার সমাবর্তনে একসঙ্গে এসেছেন স্বামী-স্ত্রী দু’জনে।
শুধু ফজলে রাব্বি কিংবা সামিহা জান্নাত নন, ২ হাজার ৩০০ একরের বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল দিনভর ছিল এমন অনেক ঘটনার ছড়াছড়ি। এদিন ২৩ হাজার শিক্ষার্থীর পাশাপাশি লাখো মানুষের পদচারণায় অন্যরকম আবহ সৃষ্টি হয়। দুপুর ১২ থেকে ১টা পর্যন্ত সমাবর্তন অনুষ্ঠানের প্যান্ডেলে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে মূল আয়োজন। বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা ড.
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইয়াহইয়া আখতার বলেন, ‘পঞ্চম সমাবর্তন শুধু চবিতে নয়, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যতিক্রম ও বিশাল পরিসরে হয়েছে। এতে এক লাখের মতো মানুষের সমাগম ঘটে। জানা মতে, আর কোনো সমাবর্তনে এত মানুষ দেখা যায়নি। এটা শিক্ষার্থীদের সারাজীবনের স্মৃতিতে জায়গা করে নেবে।’ তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ডি লিট উপাধি দিতে পেরে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। সবাই দারুণ একটি দিন পার করতে পেরেছেন।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মানববন্ধনে যাওয়া দোকান কর্মচারীকে পিটুনি
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আলোচিত শান্ত সরকার হত্যা মামলায় আসামিপক্ষের বিরুদ্ধে এক দোকান কর্মচারীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার বিকেলে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের হিরনাল এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ সময় আসামিরা হত্যা মামলাটি তুলে নিতে বাদী সালাউদ্দিন সরকারকে হুমকি দেয়।
গতকাল রোববার এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিয়েছেন সালাউদ্দিন সরকার। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ভাতিজা শান্ত সরকারকে গত ১১ এপ্রিল বিকেলে দাউদপুরের জিন্দা এলাকায় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তিনি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আসাদ ফকির (৪০), তাঁর ভাই নাঈম ফকির (৩৭), রানা ফকির (৩৫), রোকনউদ্দিনসহ (৪০) ১৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় সাত-আটজনের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গত ২২ এপ্রিল এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন করা হয়। এতে অংশ নেন সালাউদ্দিন সরকারের দোকানের কর্মচারী আনোয়ার হোসেন। এতে আসামিপক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, শনিবার বিকেলে আনোয়ার হোসেন দোকান থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন। হিরনাল মাজারের সামনে পৌঁছালে তাঁর ওপর হামলা হয়। এতে শান্ত হত্যা মামলার আসামি নাঈম ফকির, রানা ফকির, ফরহাদ, অনিক ফকিরসহ তাদের সহযোগীরা ছিলেন। তারা আনোয়ারের কাছ থেকে দোকানের পণ্য কেনার নগদ ৬৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। মারধরের শিকার হয়ে তিনি চিৎকার করলে সালাউদ্দিন সরকারসহ আশপাশের লোকজন আসেন। এ সময় হামলাকারীরা মামলা তুলে নিতে তাঁকে হুমকি দেয়। পরে আনোয়ারকে উদ্ধার করে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
দাউদপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আসাদ ফকিরের ভাষ্য, ‘একটি সাইনবোর্ড লাগানোকে কেন্দ্র করে তর্কাতর্কি হয়েছিল। তখন আমার ছোট ভাই নাঈম ও তাঁর লোকজন আনোয়ারকে মারধর করেছে।’ তিনি আনোয়ারের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বলেও দাবি করেন।
রূপগঞ্জ থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় তারা লিখিত একটি অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।