পরমাণু বোমার জনক ওপেনহাইমার সম্পর্কে কতটা জানেন
Published: 15th, May 2025 GMT
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিযেছিল পারমাণবিক বোমা। এই বোমার আবিষ্কারক জে রবার্ট ওপেনহাইমার। জার্মানি থেকে অভিবাসী হয়ে আমেরিকায় আসা এক ইহুদি পরিবারে ১৯০৪ সালে জন্ম নেন ওপেনহাইমার। বিলাসিতার মধ্যে বড় হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তিনি ছিলেন লাজুক। অন্যদিকে তিনি ছিলেন খুবই বুদ্ধিমান। খেলাধুলায় তার কোনো আগ্রহ ছিল না। মাত্র ৯ বছর বয়সে ওপেনহাইমার গ্রিক এবং লাতিন দর্শন পড়েছিলেন। ভারতীয় ধর্ম ও দর্শন সম্পর্কেও ছিল অগাধ জ্ঞান। আর তার আগ্রহ ছিল খনিজ পদার্থের প্রতি।
হার্ভাডে ও কেমব্রিজে পড়াশোনা করেছেন ওপেন হাইমার। হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নে স্নাতক করেন তিনি। এরপর স্নতোকোত্তর করেন ইংল্যান্ডের কেমব্রিজে। তবে উদ্ধত ব্যক্তিত্বের জন্য নানা সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল তাকে। ল্যাবরেটরিতে কাজের আগ্রহ না থাকলেও শিক্ষকের জোরাজুরিতে তা করতে হতো। এজন্য একদিন শিক্ষকের ওপর রেগে একটি আপেলের ভেতর বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ভরে তার ডেস্কে রেখে দেন। সৌভাগ্যবশত শিক্ষক আপেলটি খাননি। কিন্তু ওপেনহাইমারের কেমব্রিজে পড়া এজন্য ঝুঁকির মুখে পড়ে। শেষে মনোবিজ্ঞানীর কাছে যাওয়ার শর্তে কেমব্রিজে পড়া চালিয়ে নেওয়ার অনুমতি পান তিনি।
এরপরে আরেকটি ঘটনা ঘটান ওপেন হাইমার। এক বন্ধু তার বান্ধবীর কাছে প্রেম নিবেদন করলে বন্ধুকে তিনি শ্বাসরোধ করে মরার চেষ্টা করেন। এরপরে নিজেকে শুধরে নেওয়া চেষ্টা শুরু করেন ওপেন হাইমার। এই সময় তার দার্শনিক এবং আধ্যাত্মিক বই পড়া অভ্যাস হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৪০ সালে জীববিজ্ঞানী ক্যাটরিন কিটি হ্যারিসনকে বিয়ে করেন তিনি।
এদিকে বিশ্ব রাজনীতিতে আমেরিকা অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠার নানা কৌশল খুঁজে বেড়াচ্ছিলো। তারা বোমা বানানোর উদ্যোগ নিল। প্রথম যখন বোমা বিজ্ঞানীর প্রধান হিসেবে ওপেনহাইমারের নাম প্রস্তাব করা হয় তখন নান দিক থেকে আপত্তি উঠেছিল। কিন্তু ওপেনহাইমারের জ্ঞান, বিশ্বস্ততা ও উচ্চাভিলাসীর কারণে মার্কিন জেনারেল লেসলি গ্রোভস তাকে নেবার পক্ষেই মত দেন।
বদলে যাওয়া ওপেনহাইমার
যুদ্ধের পর পারমানবিক বোমা সম্পর্কে ওপেন হাইমারের মত পাল্টে গিয়েছিল। এই ধরণের কাজকে শয়তানের কাজ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। ১৯৬০ এর দশকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিষ্ফোরণের পরপরই তার মনে হয়েছিল হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ভগবত গীতার একটি লাইন ‘এখন আমি পরিণত হয়েছি সাক্ষাৎ মৃত্যুতে, বিশ্ব ধ্বংসকারীতে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান ১৯৪৫ সালের অক্টোবরে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমার মনে হয় যে, যেন আমার হাতেই রক্ত লেগে আছে।’’
প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ‘‘রক্ত লেগেছে আমার হাতে। ওটা নিয়ে আমাকেই ভাবতে দাও।’’
আমেরিকা যখন হাইড্রোজেন বোমা তৈরির উদ্যোগ নিল, সেই উদ্যোগ থামিয়ে দিতে বলেছিলেন ওপেনহাইমার। এই বিরোধিতার কারণে ১৯৫৪ সালে মার্কিন সরকার তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে এবং তার সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স কেড়ে নেয়।
ওপেনহাইমার উপলব্ধি করতে পেরেছিরেন শুধু কাজ করলে হয় না, কাজের প্রভাব নিয়ে ভাবতে হয়। তিনি বলেছিলেন, ‘‘একই ভুল পুনরায় করা না করাই হচ্ছে বিজ্ঞানের কাজ।’’
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক মব র জ বল ছ ল ন
এছাড়াও পড়ুন:
হালুয়াঘাটে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাট উপজেলায় এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক অটোরিকশাচালকের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালায়। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করতে পারেনি।
পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মেয়েটি উপজেলার একটি উচ্চবিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। সোমবার দুপুরে সে তার বন্ধুর সঙ্গে একটি পার্কে বেড়াতে যায়। বিকেলের দিকে সেখান থেকে বাড়ি পৌঁছে দিতে কিশোরীকে একটি অটোরিকশায় তুলে দেয় বন্ধু। এ সময় অটোরিকশাচালক হালুয়াঘাট উপজেলা শহরে পূজামণ্ডপ দেখানোর কথা বলে মেয়েটিকে নিয়ে ঘুরতে থাকেন। একপর্যায়ে মেয়েটিকে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর রাত ১১টার দিকে গামারীতলা এলাকায় মেয়েটিকে নামিয়ে দিয়ে অটোরিকশাচালক চলে যায়। এরপর মেয়েটিকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান।
খবর পেয়ে পুলিশ সোমবার রাতেই অভিযুক্ত আবুল বাশারের (২৫) বাড়িতে যায়। তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি। ওই সময় পুলিশ তাঁর অটোরিকশাটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় থানায় অভিযোগ দিতে যায় মেয়েটির পরিবার। এ বিষয়ে রাতে হালুয়াঘাট থানার ওসি হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘নিজেদের কমিউনিটির লোকজনের সঙ্গে আলোচনা করে মেয়েটির মা বাদী হয়ে অভিযোগ দিচ্ছেন। অভিযোগ হাতে পেলেই আমরা রাতেই মামলা হিসেবে গ্রহণ করব। অভিযুক্তকেও আমরা ধরে ফেলব।’