ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জাহাঙ্গীর হোসেনের নামে থাকা একটি দশতলা বাড়ি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এ ছাড়া হারুন অর রশীদের শ্বশুর সোলায়মানের পাঁচটি ব্যাংক হিসাব ও ভাই এ বি এম শাহরিয়ারের দুটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.

জাকির হোসেন আজ বৃহস্পতিবার এসব আদেশ দেন।

দুদক লিখিতভাবে আদালতকে জানিয়েছে, হারুন ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। হারুনের অন্যতম ঘনিষ্ঠ হচ্ছেন জাহাঙ্গীর হোসেন। তাঁর বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি থাকেন উত্তরা এলাকায়। হারুনের সহযোগী হিসেবে জাহাঙ্গীর কাজ করেছেন। তাঁর নামে-বেনামে অনেক সম্পদ রয়েছে। উত্তরায় সাড়ে ৮ কাঠা জমির ওপর ১০ তলা ভবন রয়েছে। এই ভবনটি জব্দের আবেদন করা হয়। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেন।

গত ২৪ এপ্রিল জাহাঙ্গীরের ফ্ল্যাট ও তিনটি প্লট জব্দের আদেশ আর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি হারুন ও তাঁর স্ত্রীর নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, হারুন অর রশীদের নামে থাকা প্রায় ১০০ বিঘা জমি, ৫টি ভবন ও ২টি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর ১০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে হারুন অর রশীদ ও তাঁর স্ত্রী এবং হারুনের ভাইয়ের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর মামলা করে দুদক। মামলায় হারুনের বিরুদ্ধে ১৭ কোটি ৫১ লাখ ১৭ হাজার ৮০৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।

অন্যদিকে হারুনের ছোট ভাই এ বি এম শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে ১২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৭ হাজার ৬০৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর হারুনের স্ত্রী শিরিন আক্তারের বিরুদ্ধে ১০ কোটি ৭৬ লাখ ১৫ হাজার ৫৪৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রাবিতে নিয়োগ পাননি জামায়াত নেতার সুপারিশপ্রাপ্ত সেই প্রার্থী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও চূড়ান্ত নিয়োগ পাননি আজমীরা আরেফিন।

গত ৩ আগস্ট জামায়াতের সাবেক এক এমপির সুপারিশ নিয়ে করা তার আবেদনপত্রটি  বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. মোহা. ফরিদ উদ্দীন খানের ফেসবুক স্টোরিতে প্রকাশ পায়, যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে, আজমীরা আরেফিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সে ৩.৮৬ পেয়ে বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। সফলতার সঙ্গে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও তিনি মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেন নি।

আরো পড়ুন:

কুবিতে র‍্যাগিং: ২ শিক্ষার্থী বহিষ্কারসহ বিভাগীয় প্রধান ও ছাত্র উপদেষ্টাকে শোকজ

ডাকসু নির্বাচনে নারী ভোটকেন্দ্র পরিবর্তনের দাবি গণতান্ত্রিক ছাত্র

গত ৪ আগস্ট বেলা ১১টায় ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং ওইদিনই বিকেল ৪টায় লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৩০ জনের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

গত ১২ আগস্ট আটজন শিক্ষকের নিয়োগ চূড়ান্ত হয়েছে এবং তারা যোগদানও করেছেন। কিন্তু এই তালিকায় আজমীরা আরেফিনের নাম নেই।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এম আল বাকী বরকাতুল্লাহ বলেন, “মোট ১৬৩ জন আবেদন করেছিলেন। তার মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ৩০ জনকে নির্বাচিত করা হয়। এখানে প্রথম, দ্বিতীয় কোনো বিষয় না।”

তিনি বলেন, “বিভাগে সপ্তম হয়েও অনেকে পাশ করতে পারে। যাকে নিয়ে সমালোচনা তৈরি হয়েছিল, সে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি। যে আটজন নিয়োগ পেয়েছে তারা ১২ তারিখ থেকে যোগদান করেছে।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান বলেন, “মৌখিক পরীক্ষায় ৩১ জন অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি কেনো নিয়োগ পাননি সে বিষয়ে আমি বলতে পারবো না। তিনি লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও হয়তো মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি, এজন্য পাননি।”

গত ৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. মোহা. ফরিদ উদ্দীন খানের ফেসবুক স্টোরিতে গভীর রাতে ভেসে ওঠে ওই ছাত্রীর প্রবেশপত্র। সেখানে দেখা যায়, জামায়াতের সাবেক এক এমপি তার আবেদনপত্রে সুপারিশ করেছেন। পরে সেটি নিয়ে দেশব্যাপী  আলোচনা-সমালোচনা দেখা যায়।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ