বারবার নিলামের দিন শেষ, সর্বোচ্চ দর দিয়ে প্রথম নিলামেই পণ্য কেনার সুযোগ
Published: 15th, May 2025 GMT
নিলামে পণ্য কিনতে হলে এখন থেকে প্রথমবার সর্বোচ্চ দরদাতা হলেই চলবে। সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে পণ্য বিক্রি করার বাধ্যবাধকতা দিয়ে বিশেষ আদেশ জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গতকাল বুধবার এনবিআর এ আদেশ জারি করে।
চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার–জট নিরসনে এই বিশেষ আদেশ জারি করা হয়েছে। বিশেষ আদেশ অনুযায়ী, চট্টগ্রাম কাস্টমসের মাধ্যমে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আমদানি হওয়া নিষ্পত্তিযোগ্য পণ্যের নিলামে এই সুযোগ রয়েছে। অবশ্য এই বিশেষ আদেশের মধ্যে সব ধরনের যানবাহন বাদ দেওয়া হয়েছে।
আগের নিয়মে বারবার নিলামে তুলেও পণ্য বিক্রির হার ছিল কম। কারণ, আগের নিয়মে কাস্টমস কোনো পণ্যের প্রথম নিলামে সংরক্ষিত মূল্যের ৬০ শতাংশের বেশি দর পেলে পণ্য বিক্রি করতে পারত। অর্থাৎ সর্বোচ্চ দরদাতা হলেও ৬০ শতাংশের বেশি দর না দিলে পণ্য বিক্রির সুযোগ ছিল না। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সংরক্ষিত মূল্যের ৬০ শতাংশ বাজারদরের চেয়ে বেশি হতো। এর ফলে প্রথমবার নিলামে পণ্য বিক্রির নজির ছিল কম। দ্বিতীয়বার অবশ্য প্রথমবারের চেয়ে বেশি এবং সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে পণ্য বিক্রির সুযোগ ছিল। এর ফলে কোনো পণ্য বিক্রি করতে হলে বারবার নিলামে তুলতে হতো। নতুন আদেশে এই জটিলতা কাটল।
নতুন আদেশে নিলাম ছাড়াও বিকল্প উপায়ে পণ্য হস্তান্তরের সুযোগ রাখা হয়েছে। যেমন চিনি, ডাল, তেলসহ পচনশীল পণ্য ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) কাছে প্রস্তাবিত মূল্যে বিক্রি করতে হবে। সব ধরনের সুতা তাঁত বোর্ডের অফার মূল্যে তাঁত বোর্ডকে প্রদান করতে হবে। মদ ও মদজাতীয় পানীয় বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন বা লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্ডেন্ড প্রতিষ্ঠানের কাছে অফার মূল্যে বিক্রি করতে হবে। সার বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার সমিতির সদস্যদের কাছে অফার মূল্যে বিক্রি করতে হবে। এ ছাড়া বিস্ফোরক, ওষুধের কাঁচামালও সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার কাছে বিক্রি করার কথা বলা হয়েছে আদেশে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বিশেষ আদেশের কারণে বন্দর থেকে অন্তত তিন হাজার কনটেইনার পণ্যের দ্রুত নিলাম সম্পন্ন করা যাবে। এতে বন্দরে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা কনটেইনার অপসারণের সুযোগ হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথমবার রিটার্ন দেওয়ার সময় যে ৫টি ভুল করা যাবে না
প্রথমবার আয়কর রিটার্ন দেওয়ার সময়ে একটু সাবধান হতে হবে। অনেকেই প্রথমবার রিটার্ন দেওয়ার সময় সঠিকভাবে দেন না এবং কৌশলী হন না। এ জন্য পরে বিপাকে পড়েন তাঁরা।
প্রথমবার রিটার্ন দেওয়ার সময়ে অনেকে ভুল করেন। তাঁদের অনেকের কাছেই অজানা যে প্রথম আয়কর রিটার্নে ঠিক কী কী দেখাতে হয়? প্রথমবার ভুল আয়কর রিটার্ন জমা দিয়ে বড় জরিমানার শিকার হন অনেক করদাতা।
মনে রাখবেন, এ বছর আপনি ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত আয়–ব্যয়ের বিবরণী দেবেন।
এবার দেখা যাক, প্রথম রিটার্ন দেওয়ার সময় যে পাঁচটি ভুল করা যাবে না।
১. নগদ টাকা
আপনার হাতে যত নগদ টাকা থাকুক না কেন, এর পুরোটাই দেখিয়ে দেবেন। অনেকে মনে করেন, নগদ টাকা বেশি দেখালে ঝামেলায় পড়তে পারেন। কিন্তু এই ভাবনা ঠিক নয়। আপনার আয় যদি বৈধ হয়, তাহলে দেখালে কোনো ভয় নেই। আয়কর ফরমে ‘ক্যাশ ইন হ্যান্ড’ ঘরে নগদ টাকা দেখিয়ে দেবেন।
২. সঞ্চয়পত্র, এফডিআর, ডিপিএস, শেয়ার
এত দিন আপনার কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ছিল না কিংবা রিটার্নও দেননি। কিন্তু কয়েক বছর ধরে আপনি সঞ্চয়পত্র, ডিপিএস, স্থায়ী আমানত (এফডিআর), শেয়ার ইত্যাদিতে বিনিয়োগ করেছেন। এবার প্রথম রিটার্ন দিতে যাচ্ছেন, তাহলে রিটার্নে অবশ্য এসব সম্পদ দেখাবেন। এগুলো রিটার্ন ফরমে আর্থিক পণ্য খাতে দেখাতে হবে।
৩. জমি–ফ্ল্যাট
আপনার নিজের নামে যদি জমি, ফ্ল্যাটসহ স্থাবর সম্পত্তি থাকে, তাহলে এনবিআরকে জানিয়ে দেবেন। এমনকি উত্তরাধিকার সূত্রে কিংবা উপহার বা দান সূত্রে পেলেও তা রিটার্নে উল্লেখ করে দেবেন। এখানে মনে রাখা দরকার, যদি আপনার সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ টাকার বেশি হয়, তাহলে রিটার্নে আলাদাভাবে সম্পদের বিবরণী দিতে হবে। সম্পদের বিবরণী দেওয়ার জন্য আইটি ১০বি ফরম ব্যবহার করতে হবে।
৪. গাড়ি
আপনার নামে কোনো গাড়ি, মোটরবাইক অথবা এ ধরনের সম্পদ থাকে, তাহলে তা অবশ্যই আয়কর নথিতে দেখাতে হবে। কারণ, গাড়ির জন্য প্রতিবছর আপনি অগ্রিম আয়কর দেন, যা বছর শেষে রিটার্ন জমা দিয়ে যখন কর দেবেন, তখন তা সমন্বয় করতে পারবেন। গাড়ি দেখিয়ে দেওয়া লাভও বটে।
৫. স্বর্ণালংকার
প্রথমবার রিটার্ন দেওয়ার সময় নারী–পুরুষ করদাতা নির্বিশেষে স্বর্ণালংকারসহ দামি গয়না দেখিয়ে দেবেন। এমনকি উপহার পেলেও তা দেখাবেন। অনেক নারী করদাতার সোনার গয়নার পাশাপাশি ডায়মন্ডসহ দামি পাথরের গয়না থাকে। প্রথমবার রিটার্ন দেওয়ার সময় এসব দামি গয়না দেখাতে ভুলে যাবেন না।
মনে রাখতে হবেআপনি প্রথমবার আয়কর রিটার্নে নগদ টাকার পাশাপাশি যত সম্পদ দেখাবেন, এসব সম্পদ অর্জনের ব্যাখ্যা যেন থাকে। আয়ের উৎসের ব্যাখ্যাও দিতে হবে। এসব সম্পদের সপক্ষে যথাযথ প্রমাণ সংরক্ষণ করবেন।