গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মাছের ঘের কাটাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে।

শুক্রবার (১৬ মে) দুপুরে কোটালীপাড়া উপজেলার বর্ষাপাড়া গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদের মধ্যে গুরুতর আহত পলাশ ফকির (২৬), জালাল ফকির (৪৫), মেহেদী ফকির (৩০) ও মানসুর ফকিরসহ (৪০) সাত জনকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার বর্ষাপাড়া গ্রামে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম ফকির না জানিয়ে কয়েকজনের জমি নিয়ে একটি মাছের ঘের কাটেন। এ দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। শুক্রবার দুপুরে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম ফকির ও তার লোকজন বিরোধীয় জমিতে ঘের কাটতে গেলে লায়েক ফরিক ও তার লোকজন বাধা দেয়।”

তিনি আরও বলেন, “কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দুই গ্রুপের সমর্থকেরা অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ধরে চলা এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হন। এদের মধ্যে মারাত্মক আহত সাত জনকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।”

ওসি জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এখন পযর্ন্ত কোন পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেনি।

ঢাকা/বাদল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ প লগঞ জ স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

হামাগুড়ি দিয়ে চলতে হবে না মনার, স্নাতকে ভর্তি নিয়েও দুশ্চিন্তা কেটেছে

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার কলেজছাত্রী মনা বেগমকে (১৮) আর হামাগুড়ি দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হবে না। প্রথম আলোয় সংবাদ প্রকাশের পর রাজধানীর দুজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের সহযোগিতায় তাঁকে একটি তিন চাকার বৈদ্যুতিক সাইকেল তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি ও শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে তাঁকে আর্থিকভাবে সহায়তাও করা হয়েছে।

গতকাল রোববার বিকেলে শাহ নিমাত্রা সাগরনাল-ফুলতলা কলেজের অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন ও কয়েকজন শিক্ষক এলাপুর ফাঁড়ি চা-বাগানে মনার বাড়িতে গিয়ে বিশেষ যানটি তুলে দিয়েছেন।

মনাকে সহায়তাকারী দুই শিক্ষক হলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক এস এস এম সাদরুল হুদা ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আফসানা আক্তার।

আরও পড়ুনহামাগুড়ি দিয়ে কলেজে যেতেন মনা, এখন অর্থাভাবে স্নাতকে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তা২৮ অক্টোবর ২০২৫

জহির উদ্দিন বলেন, কীভাবে সাইকেলটি চালাতে হবে, চার্জ দিতে হবে—এসব মনাকে শিখিয়েছেন মিস্ত্রি। কিছুদিন বাড়িতে চেষ্টা করতে হবে। প্রতিবন্ধিতাকে হার মানিয়ে এত দূর আসতে পেরেছে ওই ছাত্রী। সাইকেল চালানোও তাঁর পক্ষে অসম্ভব কিছু নয়।

জহির উদ্দিন আরও বলেন, প্রথম আলোয় সংবাদ পড়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মনার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর (মন) স্নাতকে ভর্তিসহ লেখাপড়ার ব্যয়ভার বহনের কথা জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া সম্প্রতি ঢাকার এক ব্যবসায়ীও মনার পাশে দাঁড়াতে তাঁকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। এসব সহায়তা পেয়ে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মনা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার পাশে যাঁরা দাঁড়িয়েছেন সবাইকে কৃতজ্ঞতা। আমি স্নাতকে ভর্তি হব, লেখাপড়া বন্ধ করব না।’

মনা এলাপুর বাগানের বাসিন্দা দিন মজুর হারিছ মিয়া ও আমিনা বেগম দম্পতির মেয়ে। মনা এবার স্থানীয় শাহ নিমাত্রা সাগরনাল-ফুলতলা কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ–২ দশমিক ৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। জন্মের পর থেকে বাঁ হাত, বাঁ পা, কোমরে জোর না পাওয়ায় সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন মনা বেগম। ডান হাত আর ডান পায়ের শক্তিতে হামাগুড়ি দিয়ে চলাচল করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার সময় হামাগুড়ি দিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা অতিক্রম করে বাসে উঠতেন। চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তিনি এবার শাহ নিমাত্রা সাগরনাল-ফুলতলা কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ভবিষ্যতে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখে মনা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ