পাকিস্তানের কৃষিজমিতে পানি সরবরাহ বন্ধে সীমান্তবর্তী একটি নদীর পানি সংগ্রহের পরিমাণ নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধির পরিকল্পনা বিবেচনা করছে। সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ভারতের ২৬ পর্যটক নিহত হয়। এ ঘটনায় পাকিস্তানের মদদ রয়েছে অভিযোগ করে ভারত। ওই দিনই ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেয় দিল্লি। এগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করা। এই সিন্ধু পানি চুক্তির বদৌলতে পাকিস্তানের ৮০ শতাংশ খামার সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাব নদীর পানি ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে। এছাড়া পাকিস্তানের অধিকাংশ হাইড্রোপাওয়ার প্রকল্প এই জলব্যবস্থার মাধ্যমে গড়ে উঠেছে।

চারটি সূত্র জানিয়েছে, চুক্তি স্থগিতের পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কর্মকর্তাদের সিন্ধু নদী ব্যবস্থার তিনটি জলাশয় চেনাব, ঝিলাম ও সিন্ধু নদীর উপর প্রকল্পের পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন দ্রুত করার নির্দেশ দিয়েছেন। আলোচনার অধীনে থাকা মূল পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে, চেনাব নদী থেকে প্রবাহিত রণবির খালের দৈর্ঘ্য দ্বিগুণ করে ১২০ কিলোমিটার করা। এই চেনাব নদী ভারতের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের কৃষিক্ষেত্র পাঞ্জাবে চলে গেছে। ১৯ শতকে খনন করা রণবির খালটি ভারতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

সিন্ধু পানি চুক্তিতে ভারতকে সেচের জন্য চেনাব থেকে সীমিত পরিমাণে জল নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে চেনাব নদী থেকে রণবির খালে প্রতি সেকেন্ডে ৪০ ঘণমিটার পানি প্রবাহিত হয়। ভারত খালটি সম্প্রসারিত করলে তা কয়েক গুণ বেড়ে হবে ১৫০ ঘণমিটার। অবশ্য এই খালটি সম্প্রসারণ করতে কয়েক বছর সময় লাগবে ভারতের।

এ ব্যাপারে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ রয়টার্সের প্রশ্নের কোনো উত্তর দেয়নি।

রয়টার্সের দেখা দুটি সরকারি নথি এবং বিষয়টির সাথে পরিচিত পাঁচজনের সাক্ষাৎকার অনুসারে, রণবির খাল সম্প্রসারণের পরিকল্পনার পাশাপাশি, ভারত এমন প্রকল্পও বিবেচনা করছে যা সম্ভবত পাকিস্তানে বরাদ্দকৃত নদী থেকে পানি প্রবাহ হ্রাস করবে।

একটি নথিতে দেখা গেছে, সিন্ধু, চেনাব এবং ঝিলামের পানি ‘সম্ভাব্যভাবে তিনটি উত্তর ভারতীয় রাজ্যে প্রবাহিত নদীতে বিতরণ করা হবে।’

একজন ব্যক্তি জানিয়েছেন, নথিটি ২২ এপ্রিলের হামলার পরে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।

ভারতের অন্যান্য সম্ভাব্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে, এমন বাঁধ নির্মাণ করা যা প্রচুর পরিমাণে পানি সঞ্চয় করতে পারে।

বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের নথি অনুসারে, ভারত কমপক্ষে পাঁচটি সম্ভাব্য জলাধার প্রকল্প চিহ্নিত করেছে, যার মধ্যে চারটি চেনাব এবং ঝিলাম নদীর উপনদীতে অবস্থিত।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রণব র খ ল প রব হ ত চ ন ব নদ প রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি

চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো ৪ শতাংশ।

এডিবি আরও বলেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘন ঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই চার কারণে প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে।

আজ মঙ্গলবার এডিবি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এডিবি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরে ভোগ্যব্যয় বাড়বে। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত নানা ধরনের খরচের কারণেও ভোগব্যয় বাড়াবে।

বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিনির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য জরুরি।

এডিবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে। এ জন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।

এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে ভোগব্যয়, যা শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের কারণে বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানি খাত এবং এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশে কফি–সংস্কৃতি প্রসারে ‘আমা কফি’
  • রাজশাহীতে আইনি ব্যবস্থা নিন
  • বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের ৩ প্যাকেজ ঘোষণা
  • চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি