ব্যাংকে ডলার কেনাবেচায় দামের বাইরে আর কোনো মাশুল নয়
Published: 17th, May 2025 GMT
ব্যাংক থেকে ডলার কেনাবেচায় এখন ডলারের দাম ছাড়া আর কোনো মাশুল আদায় করা যাবে না। তবে বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে পাসপোর্টে ডলার সংযুক্তি বা এনডোর্সমেন্টের মাশুল হিসেবে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা নিতে পারবে ব্যাংকগুলো। খোলাবাজারে ডলারের দামে অস্থিরতা দেখা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে এই নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ শনিবার এ–সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোর কাছে পাঁচ কোটি ডলার নগদ মুদ্রা রয়েছে। এরপরও অনেক গ্রাহক ডলার কেনাবেচার জন্য ব্যাংকে যাচ্ছে না। কারণ, অনেক ব্যাংক ডলার কেনাবেচার ক্ষেত্রে গ্রাহকের কাছ থেকে অতিরিক্ত মাশুল আদায় করছে। গ্রাহকেরা যাতে ডলার কেনাবেচার জন্য ব্যাংকমুখী হন, এ জন্য সব ধরনের মাশুল তুলে দেওয়া হয়েছে।’
জানা যায়, বিদেশ ভ্রমণের টিকিট, ভিসাসহ পাসপোর্ট জমা দিলে ব্যাংকগুলো থেকে বৈদেশিক মুদ্রা কিনতে পারছেন গ্রাহকেরা। এতে প্রতি ডলারের দাম পড়ছে ১২৩ টাকা। যদিও খোলাবাজারে ডলারের দাম ১২৫ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন হারে পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট ফি বা চার্জ আদায়ের পাশাপাশি পৃথকভাবে কমিশন আদায় করা হচ্ছে। এই কারণে ব্যাংক থেকে বৈদেশিক মুদ্রা কিনতে গ্রাহকেরা নিরূৎসাহিত হচ্ছেন। এ জন্য ব্যাংক থেকে বৈদেশিক মুদ্রা কেনা উৎসাহিত করতে এনডোর্সমেন্ট মাশুল ছাড়া অন্য কোনো কমিশন বা মাশুল আদায় করা যাবে না। আর পাসপোর্টে ডলার এনডোর্সমেন্ট মাশুল হবে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র হক র
এছাড়াও পড়ুন:
স্বপ্ন পূরণের পথে ফাহমিদুল
ফাহমিদুল ইসলাম। ইতালির পেশাদার ফুটবল ক্লাব ওলবিয়া ক্যালসিওতে খেলা এই তরুণ আগামী ১০ জুন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য আবারও বাংলাদেশ দলের ক্যাম্পে ডাক পেয়েছেন। ৪ জুন একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে দল। মূল ক্যাম্প শুরু হবে ৩১ মে থেকে। জাতীয় দলের জার্সি এখনও গায়ে না জড়ালেও দেশের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে পরিচিত এই তরুণকে নিয়ে লিখেছেন মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ
জাতীয় দলের জার্সি এখনও গায়ে না জড়ালেও ইতোমধ্যে দেশের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে পরিচিত নাম হয়ে উঠেছেন ইতালিপ্রবাসী ফুটবলার ফাহমিদুল ইসলাম। ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচের আগে গত মার্চে ক্যাম্পে ডাক পেলেও চূড়ান্ত দলে জায়গা হয়নি তাঁর। তখন তাঁকে বাদ দেওয়ায় উঠেছিল সমালোচনার ঝড়। এবার সুখবর, আসন্ন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য আবারও বাংলাদেশ দলের ক্যাম্পে ডাক পেয়েছেন ফাহমিদুল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তাঁর ক্লাব ওলবিয়া ক্যালসিও, যা ইতালির পেশাদার ফুটবল ক্লাব। ক্লাবটি নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ফাহমিদুলকে অভিনন্দন জানিয়ে তাঁর ক্যাম্পে ডাক পাওয়ার কথা জানিয়েছে। বাংলাদেশের হয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১০ জুন। এর আগে ৪ জুন একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে দল। মূল ক্যাম্প শুরু হবে ৩১ মে থেকে।
সৌদি আরবে ক্যাম্পে ডাক পেয়েও...
গত ২৬ মার্চ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সৌদি আরবে ক্যাম্পে ডাকলেও পরিকল্পনায় নেই বলে ফাহমিদুলকে বাদ দিয়েছিলেন কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। তখন তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এবার তিনি বলেন, শুধু ফাহমিদুল নন, শমিত সোমকেও জুনের ম্যাচে রাখার সব চেষ্টা করা হচ্ছে। এর জন্য সব প্রক্রিয়া সম্পন্নও করছে ফেডারেশন। ন্যাশনাল টিমস ম্যানেজমেন্ট কমিটির মিটিংয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের ভুলগুলো নিয়ে কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা তোপের মুখে পড়েন জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটির! ২৬ মার্চ শিলংয়ে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে বাংলাদেশের জেতা ম্যাচ ছিল বলে সবার অভিমত ছিল। সেখানে কোচের দল নির্বাচনে ভুল ছিল বলে অনেকেই মনে করেন। কোচও তাঁর যুক্তি তুলে ধরেন। তবে প্রশ্নবাণে জর্জরিত কোচ হয়তো বুঝতে পারেন দলে দরকার ফাহমিদুলকে!
যাত্রা শেষ হয়নি, একদিন লাল-সবুজ
জার্সিতে মাঠে নামব
এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে প্রাথমিক দলে জায়গা পেয়ে সৌদি আরবের অনুশীলন ক্যাম্পে থেকেও চূড়ান্ত স্কোয়াডে জায়গা না পেয়ে ফাহমিদুলকে ফিরে যেতে হয় ইতালিতে। এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা হয়। তবে নিজের ফেসবুকে এক আবেগঘন বার্তায় ফাহমিদুল জানান, এখনও থেমে যায়নি তাঁর স্বপ্ন, ভবিষ্যতে লাল-সবুজ জার্সিতে দেশের হয়ে মাঠে নামতে চান তিনি। ইতালির চতুর্থ স্তরের ক্লাব ওলবিয়া ক্যালসিও এফসিতে খেলা ১৮ বছর বয়সী এই তরুণ ফরোয়ার্ড লিখেন–‘আমি ফাহমিদুল ইসলাম, বাংলাদেশের সকল মানুষের ভালোবাসা, সমর্থন ও উৎসাহের জন্য সত্যিই আমি কৃতজ্ঞ। আমার প্রতি আপনাদের অটল বিশ্বাস আমার যাত্রাপথে বড় ছাপ ফেলেছে এবং যারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাদের সবাইকে মনের গভীর থেকে ধন্যবাদ জানাই।’
বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন স্পষ্টভাবে তুলে ধরে ফাহমিদুল বলেন, ‘বাংলাদেশ ফুটবল দলে খেলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম আমি। দুর্ভাগ্যবশত এবার সবকিছু পরিকল্পনা মতো এগোয়নি। তবে আমি বিশ্বাস করি, যা হয় সেটি কোনো না কোনো কারণে হয় এবং আমার পথচলা কোনোভাবেই শেষ হয়ে যায়নি। সৃষ্টিকর্তা যদি চান, একদিন আমি লাল-সবুজের জার্সি পরে মাঠে নামব, দেশ ও সমর্থকদের জন্য আমার সবকিছু উজাড় করে দেব। ততদিন পর্যন্ত, সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য কঠোর পরিশ্রম এবং প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’
একটু পেছনে ফিরে...
বাংলাদেশের ফুটবলে প্রথম প্রবাসী হিসেবে আবির্ভাব ঘটে জামাল ভূঁইয়ার। ২০১৩ সাল থেকে জাতীয় দলে খেলা ডেনমার্কপ্রবাসী এ মিডফিল্ডার এখন দলের অধিনায়কও। তাঁর পথ ধরে লাল-সবুজের জার্সিতে ২০২১ সালে অভিষেক ঘটে ফিনল্যান্ডপ্রবাসী তারিক রায়হান কাজীর। গত বছর তৃতীয় প্রবাসী হিসেবে বাংলাদেশ দল সুযোগ মেলে কানাডিয়ান বংশোদ্ভূত সৈয়দ শাহ কাজেমের। তিনি হলেন সাবেক ক্রিকেটার হালিম শাহর ছেলে। কাজেমের জন্ম বাংলাদেশে হলেও বেড়ে উঠেছেন কানাডায়। তাঁকে আনতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি বাফুফেকে। এর পেছনে বড় কারণ, কাজেমের জন্ম বাংলাদেশে আর কানাডার হয়ে যুব দলে না খেলা। ২০২৪ সালের ১১ জুন বিশ্বকাপ বাছাইয়ে লেবাননের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক ঘটে এ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের। তবে হামজা, শমিতের পর বাংলাদেশ দলে এখন বড় চমক ফাহমিদুল ইসলাম।
স্বপ্ন পূরণের পথে
ঘরের মাঠে অভিষেকের আরও এক ধাপ এগিয়েছেন ইতালিপ্রবাসী তরুণ ফুটবলার ফাহমিদুল ইসলাম। নিজেকে প্রমাণের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। এবার তাঁর সামনে নতুন করে সুযোগ এসেছে। তিনি চূড়ান্ত একাদশে নিশ্চয় জায়গা করে নিজেকে তুলে ধরবেন। সেটিই এখন দেখার বিষয়!