তাই বলে মুখে ললিপপ! মজার ব্যাপারই বটে। আসছে জুলাইয়ের ১৩ তারিখ পা পড়বে আঠারোতে। স্পেনের আইনে তাই চুরুট মুখে দেওয়ার সময় হয়নি লামিনে ইয়ামালের। চ্যাম্পিয়ন প্যারেডে হুডখোলা বাসে চড়ে চুরুট মুখে দেওয়ার একটা রেওয়াজ চালু আছে ইতালি, স্পেন, জার্মানির ফুটবলে। নেভানো চুরুট হলেও অনেকে শখ করে তা মুখে দিয়ে থাকেন। 

তবে গতকাল বার্সার লা লিগা চ্যাম্পিয়নের প্যারেডে গিয়ে ললিপপ মুখে দিতে হয়েছে ইয়ামালকে। যাঁর মাথায় কিনা এরই মধ্যে স্প্যানিশ ফুটবলের রাজার মুকুট উঠে গেছে, সেই কিনা এখনও যুবরাজের পোশাকই ছাড়তে পারেননি। আসলে বছর সতেরোর ইয়ামাল কিংবা আঠারোর কুবার্সিকে দিয়েই এবার বিশ্বফুটবলের কাছে নতুন বার্তা দিয়েছে ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা। মিলিয়ন মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে তারকা খুঁজে আনার চেয়ে নিজেদের ‘লা মাসিয়া একাডেমি’ থেকেই প্রতিভা বাছাই করে দল গড়ো আর চ্যাম্পিয়ন হও– বার্সার জার্মান কোচ হ্যান্সি ফ্লিক এবার একঝাঁক তরুণ প্রতিভা দিয়েই দলকে লা লিগা চ্যাম্পিয়ন করেছেন। যেখানে তাঁর স্কোয়াডের ১০ খেলোয়াড়ই ছিল লা মাসিয়া থেকে গ্র্যাজুয়েট করা।

আসলে ইউরোপের অন্যান্য ক্লাবের সঙ্গে বার্সার পার্থক্যটা এখানেই। বার্সার যুব একাডেমির নাম লা মাসিয়া। লিওনেল মেসির নামেই এসেছে ‘মাসিয়া’। এই মুহূর্তে বিশ্বের প্রায় ৩০টি দেশে বার্সার এ একাডেমি আছে। ছয় বছর বয়সে এখানে ভর্তির জন্য আবেদন করা যায়। প্রতিবছর হাজারো ফুটবলার থেকে ২০০ জনকে আনুষ্ঠানিক একাডেমিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এবং সেখান থেকে মাত্র ৬০ জনকে বার্সেলোনার লা মাসিয়ায় থাকার সুযোগ দেওয়া হয়। এখান থেকেই উঠে এসেছিলেন মেসি, পিকে, ইনিয়েস্তারা। সোনালি সেই প্রজন্মের পর বেশ কয়েক মৌসুমে শূন্যতা ছিল। তবে এবার বার্সার স্কোয়াডে লা মাসিয়ার খেলোয়াড়রা দলকে ঘরোয়া আসরের তিনটি ট্রফি এনে দিয়েছেন। 

ইয়ামাল, পেদ্রি, ওলমো, গাভি, কুবার্সি, লোপেজ, কাসাডো, বালদে, মার্টিন আর বার্নাল– বার্সার বর্তমান দলটিতে লা মাসিয়ার এই ১০ ছাত্র এই মৌসুমে মাঠ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। বার্সার এই ‘মেইড ইন লা মাসিয়া’র গড় বয়স ২৫.

১ বছর, যা কিনা এবারের লা লিগা দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম। ফ্লিক প্রথমবার এসেই লা মাসিয়া দিয়েই বার্সাকে নতুন করে বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছেন। তবে এর পেছনে জাভির নামটি না নিলেই নয়। বছর পনেরোর ইয়ামালকে তিনিই প্রথমে মূল দলে সুযোগ দিয়েছিলেন। কুবার্সি, বালদে, হেক্টরকেও লা মাসিয়া থেকে উঠিয়ে এনেছিলেন। হয়তো নিজের সেই প্রথম মৌসুমে সফল ছিলেন না তিনি, কেউ কেউ এমনও বলে থাকেন যে জাভি বার্সার আত্মবিশ্বাস ভেঙে দিয়েছিলেন। 

তবে এটা মানতেই হবে লা মাসিয়া থেকে মূল দলে আসা তরুণ ফুটবলারদের ধরে ধরে কাজ করেন ফ্লিক। তিনি ফুটবলারদের জন্য তাঁর নির্দিষ্ট ভূমিকা ঠিক করে দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে এই বিশ্বাস বেড়ে উঠতে দিয়েছিলেন যে তারা শীর্ষপর্যায়ে খেলার অবস্থায় রয়েছে। আর সেটা করতে গিয়েই হাই প্রসিং ফুটবলের কৌশল কাজে লাগান জার্মান কোচ। আক্রমণাত্মক ফুটবল– যা কিনা তরুণদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা তৈরি করে, সেই কৌশলের স্বাধীনতা দেন তিনি। আর সেই কৌশলের সফলতা ধরা পড়ে এক মৌসুমেই চারবার প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে হারানোর মাধ্যমে। তবে বার্সার এই ইয়াং ব্রিগেডের পেছনে পোলিশ গোলরক্ষক সেজনি, স্ট্রাইকার লেভানডস্কি, বছর চৌত্রিশের স্প্যানিশ সেন্টারব্যাক ইনিগো মার্টিনেজ ও ডাচ মিডফিল্ডার ডি জংয়ের মতো অভিজ্ঞদের মিশ্রণও রেখেছিলেন ফ্লিক। পুরো ফুটবলবিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছিলেন ঘরের ছেলেদের তৈরি করেই ভালো ফল করা যায়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ টবল র এক ড ম

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্লোটিলা বহরে ভেসে চলা একমাত্র জাহাজ ম্যারিনেট কোথায়

ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-এর একটি মাত্র নৌযান এখনো আটক করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। এই নৌযানটি হলো দ্য ম্যারিনেট।

পোল্যান্ডের পতাকাবাহী এই নৌযানে ছয়জন আরোহী রয়েছেন ।

ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, ম্যারিনেট আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেসে চলেছে। এর গতি ঘণ্টায় প্রায় ২.১৬ নট (ঘণ্টায় প্রায় ৪ কিলোমিটার) , গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে ম্যারিনেটের দূরত্ব  প্রায় ১০০ কিলোমিটার।

বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাহাজটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। এটি  এখন সারানো  হয়েছে।

ফ্লোটিলা আয়োজকেরা বলছেন, ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত। এটি যোগাযোগের আওতার মধ্যেই রয়েছে। লাইভস্ট্রিমও সক্রিয় আছে।  

ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, অন্য জাহাজগুলো আটক করলেও ম্যারিনেট এখনো ভেসে চলছে।

ম্যারিনেট ফিরে যাবে না বলেও ওই পোস্টে জানানো হয়েছে।  পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়। ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।’

ফ্লোটিলা আয়োজকরা আরও লিখেছেন, ‘গাজা একা নয়।’ ‘ফিলিস্তিনকে কেউ ভুলে যায়নি। আমরা কোথাও যাচ্ছি না।’

ফ্লোটিলা বহরের প্রায় সব নৌযানে থাকা অধিকারকর্মীদের আটক করেছে ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে অনেক দেশ। বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভও হয়েছে।

আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের৬ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ