বিএনপি নেতাদের কবজায় ঢাকা দক্ষিণ সিটির কোরবানির পশুর হাট
Published: 1st, June 2025 GMT
বিগত বছরগুলোতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কোরবানির পশুর হাটগুলো ছিল আওয়ামী লীগের নেতাদের কবজায়। এবার সব হাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন বিএনপির নেতারা। এর মধ্যে নিয়ম ভেঙে সরকারি দরের চেয়ে অর্ধেক দামে বিএনপির নেতারা দুটি হাটের ইজারা বাগিয়ে নিয়েছেন।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে এ বছর ঢাকা দক্ষিণ সিটি এলাকায় ১১টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত ছিল। এর মধ্যে উচ্চ আদালতের নির্দেশে আফতাবনগর ইস্টার্ন হাউজিং ও মেরাদিয়া বাজারের পূর্ব পাশের খালি জায়গায় হাট না বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রত্যাশিত দর না পাওয়ায় শ্যামপুর–কদমতলী ট্রাকস্ট্যান্ডের খালি জায়গায় হাট বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি। এই তিন হাট বাদে এবার আটটি অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট বসবে।
আরও পড়ুনঢাকা উত্তরে গরুর ৮ হাটের ইজারাদারই বিএনপি নেতা৩ ঘণ্টা আগেঢাকা দক্ষিণ সিটির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আটটি হাটের সব কটির ইজারা বিএনপির নেতারা পেয়েছেন। তবে ইজারা পাওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির পদস্থ নেতাদের মাধ্যমে দরপত্র জমা না দিয়ে কিছু ক্ষেত্রে বিএনপি–সমর্থিত ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে দরপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। পরে স্থানীয় বিএনপি ও দলটির অঙ্গ–সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা মিলেমিশে হাট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
যেমন উত্তর শাহজাহানপুর মৈত্রী সংঘ ক্লাবের খালি জায়গার ইজারা কাগজে–কলমে বিএনপি–সমর্থিত ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান পেয়েছেন। তবে এর নেপথ্যে রয়েছেন শাহজাহানপুর থানা বিএনপি ও দলটির অঙ্গ–সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
গত বছর এ হাটের ইজারা পেয়েছিলেন সেখানকার আওয়ামী লীগের সাবেক কাউন্সিলর হামিদুল হক।
এর আগে সাত বছর ধরে শাহজাহানপুর থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল লতিফের নিয়ন্ত্রণে ছিল এ হাট।
ডেমরার আমুলিয়া আলীগড় মডেল কলেজের উত্তর পাশের খালি জায়গায় স্থাপিত অস্থায়ী হাটের ইজারা পেয়েছেন জয়নাল আবেদীন রতন। তিনি ডেমরা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি। গত বছর এ হাটের ইজারা পেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এস এম নেওয়াজ সোহাগ।
পোস্তগোলা শ্মশানঘাটের পশ্চিম পাশে নদীর পাড়ে খালি জায়গায় এবার পশুর হাটের ইজারা পেয়েছেন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত মুহাম্মদ আলী। নেপথ্যে রয়েছেন ওই এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদের বড় ছেলে ও স্থানীয় বিএনপির নেতা–কর্মীরা।
গত বছর এ হাটের ইজারা পেয়েছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মইন উদ্দিন চিশতী।
দনিয়া ক্লাবের পূর্ব পাশে ও ছনটেক মহিলা মাদ্রাসার পশ্চিমের খালি জায়গায় পশুর হাটের ইজারা পেয়েছেন স্থানীয় বিএনপির নেতা তারিকুল ইসলাম তারেক। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক নেতা নবীউল্লাহ ও ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক কাউন্সিলর জুম্মন মিয়া মিলেমিশে হাটটি নিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের নেতা কামরুজ্জামান গত বছর এ হাটের ইজারাদার ছিলেন।
লালবাগের পোস্তা এলাকায় রহমতগঞ্জ ক্লাবের খালি জায়গায় এবার কোরবানির পশুর হাটের ইজারা পেয়েছেন রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি টিপু সুলতান। তিনি চকবাজার থানা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি।
গত বছর হাটটির ইজারা পেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান সেলিম।
হাজারীবাগে ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজের পূর্ব পাশের খালি জায়গায় স্থাপিত অস্থায়ী হাটটির ইজারা পেয়েছেন মেসার্স সাফি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী নাফিজ কবির। কাগজে–কলমে নাম তাঁর হলেও বাস্তবে হাটটির কর্তৃত্বে রয়েছেন স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতা–কর্মীরা।
অর্ধেকেরও কম দরে দুটি হাট
ঢাকা দক্ষিণ সিটির ইতিহাসে এই প্রথম সরকারি মূল্যের চেয়ে অনেক কম দরে দুটি পশুর হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে।
দুটি হাটের মধ্যে একটি হলো রাজধানীর নারিন্দায় সাদেক হোসেন খোকা মাঠের দক্ষিণ পাশের খালি জায়গা ও ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল। অস্থায়ী এ হাটের সরকারি মূল্য ছিল ৪ কোটি ৬৪ লাখ ১৫ হাজার ২৮০ টাকা। কিন্তু হাটটি ২ কোটি ২৫ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। হাটটির ইজারা নিয়েছেন সৈয়দ মাসুদ রেজা। তিনি প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার গোপীবাগের বাসা দেখভাল করেন বলে স্থানীয় বিএনপির নেতারা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন।
সৈয়দ মাসুদ রেজা প্রথম আলোকে বলেন, তিনি সব নিয়মকানুন মেনে হাটের ইজারা নিয়েছেন। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সরকারি মূল্যের চেয়ে অর্ধেক দামে ইজারা নিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সিটি করপোরেশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবসংলগ্ন খালি জায়গার সরকারি মূল্য ছিল ৩ কোটি ৭৫ লাখ ২৪ হাজার টাকা। অথচ এ হাট ১ কোটি ২০ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। এ হাটের ইজারা পেয়েছেন মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তিনি স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ঢাকা দক্ষিণ সিটির বিএনপি–সমর্থিত সাবেক একজন কাউন্সিলর।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স থ ন য় ব এনপ র ব এনপ র ন ত র শ হজ হ ন র জন ত প রথম সরক র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
পায়রা বন্দরসহ দুই প্রকল্পের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন
পায়রা বন্দরের জন্য সংশ্লিষ্ট পরিসেবাসহ দুটি শিপ টু শোর ক্রেন সরবরাহ এবং নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। প্রস্তাব দুটিতে ব্যয় হবে ৪৫০ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার ২৫৪ টাকা।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রি পরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কমিটির সদস্য ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা সূত্রে জানা যায়, পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় সংশ্লিষ্ট পরিসেবাসহ দুটি শিপ টু শোর ক্রেন সরবরাহ এবং স্থাপন কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ৪টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) এইচপি এবং (২) এনজে, চায়না প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১৬২ কোটি ২ লাখ ১১ হাজার ৫৬৮ টাকা।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর দুইয়ের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এ জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ২টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। দরপত্রের সকল প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স এবং (২) এসএস রহমান ইন্টারন্যানাল লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ২৮৮ কোটি ৮ লাখ ৯৮ হাজার ৬৮৬ টাকা।
ঢাকা/হাসনাত//