পঞ্চগড়ে সেনা অভিযানে জাল ডলারসহ আটক ৬
Published: 19th, June 2025 GMT
পঞ্চগড়ে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৮০ হাজার ইউএস ডলারের জালনোট উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় ডলার কেনাবেচা চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পঞ্চগড় শহরে এ অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এ দিন বিকেলে পঞ্চগড় সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ডলারের মূল্য ৯৭ লাখ ৭৯ হাজার ২৮০ টাকা।
আটকরা হলেন, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চেংঠি হাজরাডাঙ্গা ইউনিয়নের বাগদহ দিলালপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন ডিপজল (৪২), একই গ্রামের মইনুল ইসলামের ছেলে ইয়াসিন আলী (৩২), দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রামের মৃত মফিজুল ইসলামের ছেলে সোহেল ইসলাম (৩৪), একই গ্রামের মৃত প্রভাতের ছেলে রমেশচন্দ্র বর্মন (৩৫), বীরগঞ্জ উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার মোজাম্মেল হক (৫৫) এবং পঞ্চগড় পৌরসভার ইসলামবাগ গ্রামের সুলতা আলীর ছেলে হোসেন আলী বাবু (৩৬)।
আরো পড়ুন:
পুলিশের ব্রিফিং
নগদের কোটি টাকা লুটের ঘটনায় সাবেক সেনা ও পুলিশ সদস্য জড়িত
২৫৩ জন গুমের প্রমাণ মিলেছে
‘জঙ্গিবাদবিরোধী’ প্রচারণাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে: কমিশন
সেনাবাহিনী জানায়, গোয়েন্দা রিপোর্ট ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকাল থেকে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় পঞ্চগড় শরের চৌরঙ্গী মোড়ে একটি মাইক্রোবাসের গতিরোধ করে গাড়িতে থাকা আনোয়ার হোসেন ডিপজল, ইয়াসিন আলী, সোহেল ইসলামকে আটক করা করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যে রমেশচন্দ্র বর্মন, মোজাম্মেল হক ও হোসেন আলী বাবুকে শহরের সিনেমাহল রোড এলাকা থেকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছে থাকা জাল ডলার ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। এ দিকে আরো খবরের ভিত্তিতে আটক আনোয়ার হোসেন ডিপজল ও ইয়াসিন আলীর গ্রামের বাড়ি দেবীগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে মাদকদ্রব্য সেবনের আলামত জব্দ করা হয়।
তবে জাল ডলারগুলো কোথা থেকে আনা হয়েছে তা জানা না গেলেও সেনাবাহিনী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাল ডলারগুলো তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নে নিয়ে গিয়ে এক ব্যক্তির মাধ্যমে ভারতে পাচার করার কথা ছিল।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় আর্মি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর মেহেদী পিয়াস জয় জানান, আটক চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে পঞ্চগড়ে নকল টাকা ও ডলারের ব্যবসা পরিচালনা করেছেন। একইসঙ্গে নকল ডলারগুলো বাংলাদেশের পাশাপাশি দেশের বাইরে এবং পাশের দেশে অবৈধভাবে বিক্রি করতেন।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান জানান, সেনাবাহিনী জাল ডলার ও মালামালসহ ছয়জনকে থানায় হস্তান্তর করেছে। এ ঘটনায় আটকদের বিরুদ্ধে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ঢাকা/নাঈম/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক ল ইসল ম স ন আল
এছাড়াও পড়ুন:
রাকসু নির্বাচন পেছানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত বিকেলে
শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডাকা কম্পলিট শাটডাউনের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট প্রতিনিধি ভোট পিছিয়ে দেওয়া হবে কি না সে সিদ্ধান্ত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নেবে নির্বাচন কমিশন। বিকেল ৫টায় নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে সভা ডেকেছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এফ নজরুল ইসলাম দুপুর দেড়টায় সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
শাটডাউনের মধ্যে রাকসু নির্বাচন হতে পারে না
দুর্গাপূজার পরে রাকসু নির্বাচন চায় ছাত্রদল
তিনি বলেন, “বিকেলে নির্বাচন কমিশনের সভা ডাকা হয়েছে। শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শাটডাউন কর্মসূচির কারণে যদি নির্বাচনের পরিবেশ না থাকে, তাহলে সে বিষয়ে কমিশনে আলোচনা হবে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরই ভোট গ্রহণ হবে কিনা সে সিদ্ধান্তই সভায় নেওয়া হবে।”
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ব্রিফ করার আগে সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ, রাকসু ফর র্যাডিকাল চেঞ্জ, সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ ও ইউনাইটেড ফর রাইটস প্যানেলের প্রার্থীরা তাকে একটি স্মারকলিপি দেন। এতে তারা উল্লেখ করেন, পোষ্য কোটা ইস্যুতে শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চলমান আন্দোলন কর্মসূচির মধ্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে পারে না। তারা এ বিষয়টি বিবেচনার জন্য নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানান।
এর আগে, আজ দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মাকেটে প্যানেল চারটির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদের ভিপি প্রার্থী ও সাবেক সমন্বয়ক তাসিন খান।
তিনি বলেন, “আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর রাকসু নির্বাচন উপলক্ষ্যে আমরা সবাই উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচারণা করছিলাম। পোষ্য কোটাকে সামনে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়েছে সেখানে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাই পরষ্পরের মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে, যা আমাদের কখনোই কাম্য নয়। রাকসু আমরা চাই, রাকসু দিতে হবেই। নির্বাচন কোনোভাবেই বন্ধ করা চলবে না। নির্বাচনের প্রাণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ না হলে সেই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবেই।”
তাসিন বলেন, “পোষ্য কোটা ইস্যুতে ক্যাম্পাস কমপ্লিট শাটডাউনের শিক্ষার্থীরা অলরেডি বাসায় যাওয়া শুরু করেছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছুটির পাশাপাশি অনাকাঙ্ক্ষিত এই কমপ্লিট শাটডাউন আমাদের সব প্যানেলের, সব সতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারণায় বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে এবং দীর্ঘ ৩৫ বছর পর হতে যাওয়া রাকসু নির্বাচনকে সরাসরি প্রশ্নবিদ্ধ করবে।”
তিনি বলেন, “আমরা চাই শান্তিপূর্ণ, আনন্দমুখর পরিবেশে রাকসু নির্বাচন যা শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের নিয়েই সম্ভব যে পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় এখন নেই। বিশ্ববিদ্যালয়কে কমপ্লিট শাটডাউনে রেখে কোনোভাবে রাকসু নির্বাচন হতে পারে না। এটা সুস্পষ্ট রাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র।”
সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, রাকসু নির্বাচন হতে হবে এবং কোনোভাবে সেটা প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। তবে ক্যাম্পাস শাটডাউন, ক্লাস অফ রেখে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস বিমুখ রেখে কোনোভাবে রাকসু নির্বাচন হতে পারে না। সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু রাকসু নির্বাচন হবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অতি দ্রুত পোষ্য কোটা ইস্যু মিমাংসা করে ক্যাম্পাসের স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।
তাসিন বলেন, “লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড রেখে রাকসু নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। আমরা কোনোভাবে আমাদের প্রাণের রাকসু নির্বাচনকে একতরফা নির্বাচন হতে দিতে চাই না। ক্যাম্পাসের অস্থিতিশীল পরিবেশ, কমপ্লিট শাটডাউন, পূজার ছুটি সব কিছু বিবেচনা করে রাকসু নির্বাচন কমিশনারকে পরবর্তী পদক্ষেপ অতি দ্রুত নিতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে এই প্যানেলগুলোর তাপসি রাবেয়া, সোহরাওয়ার্দী হল, জিয়া হল, বিজয় ২৪ হল ও সৈয়দ আমির আলি হলের প্রার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।
রাকসু নির্বাচনে মোট ১১টি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে চারটি প্যানেল শাটডাউনের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে স্মারকলিপি দিল।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ