বিশেষ নিয়োগ ও সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা পর্যন্ত পদযাত্রা করতে চেয়েছিলেন প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। কিন্তু শাহবাগ মোড়ের আগে থানার সামনে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন। পরে শাহবাগ জাদুঘরের সামনে পুলিশ বাধা দেয়। এতে তারা সেখানেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

আরো পড়ুন:

অপরাধ: রাজধানীতে গ্রেপ্তার ১৩

রাজধানী থেকে যুবকের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবন্ধী ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী অর্ধশতাধিক তরুণ-তরুণী শাহবাগে অবস্থান নেন। তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেও চাকরির সুযোগ না পাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন।

শুক্রবার তারা যমুনার সামনে গিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিলে পুলিশ শাহবাগেই আটকে দেয়। এ সময় পুলিশ তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করেছে এবং কয়েকজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তরুণীকে জোরপূর্বক সরিয়ে নিয়েছে।

রমনা জোনের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো.

মাসুদ গণমাধ্যমকে বলেন, “আমরা তাদের রাস্তা থেকে সরে গিয়ে মিছিল করতে বলেছি। এ সময় নিজেদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তেমন কোনো ঘটনার উদ্ভব হয়নি।”

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর গণমাধ্যমকে বলেন, “তাদের কোনো ধরনের মারধর করা হয়নি। নিরাপত্তার স্বার্থে রাস্তা থেকে সরিয়ে জাদুঘরের সামনে নিরাপদ স্থানে নেওয়া হয়েছে।”

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা গত এক বছরের মধ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন।

কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না পাওয়ায় তারা আবারও রাস্তায় নেমেছেন। তাদের মূল দাবি তিনটি—প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ নিয়োগের মাধ্যমে চাকরির ব্যবস্থা করা; বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পরিবর্তন করে প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা বিশেষ পদ সৃষ্টি করা এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য শিক্ষক পদগুলোতে নিয়োগ দেওয়া।

ঢাকা/এমআর/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র স মন শ হব গ

এছাড়াও পড়ুন:

অন্তঃসত্ত্বা কুকুরের ওপর দিয়ে ধীরে চলে গেল গাড়ি, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু

চট্টগ্রাম নগরের ডিসি হিলের মূল ফটক দিয়ে বের হয় একটি সাদা রঙের পিকআপ ভ্যান। ঠিক সেই সময় ফটকের সামনে বসে ছিল একটি কুকুর। গাড়িটি থামেনি। ধীরগতিতে এসে সেটি সরাসরি কুকুরটির গায়ের ওপর দিয়েই চলে যায়। কুকুরটি ছটফট করতে থাকে, আর পেছনে দৌড়ে আসে আরও দুটি কুকুর।

পুরো ঘটনাটি ধরা পড়ে সিসিটিভি ক্যামেরায়, যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৪৪ মিনিটে। কুকুরটি অন্তঃসত্ত্বা ছিল। আহত হয়ে এটি ঘটনাস্থলেই মারা গেছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। পরদিন শুক্রবার থেকেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরিবেশকর্মী ও প্রাণী অধিকার নিয়ে কাজ করেন, এমন নাগরিকেরা সংশ্লিষ্ট গাড়িটির চালকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। থানায় এ নিয়ে লিখিত অভিযোগও দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ডিসি হিলে সরকারি শীর্ষ দুই কর্মকর্তা চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের বাসভবন। পথচারী ও এলাকার বাসিন্দারা ওই এলাকায় হাঁটতে যান। তবে ওই রাতে ডিসি হিলের প্রধান ফটক বন্ধ ছিল। গাড়িটি বের হওয়ার আগে নিরাপত্তাকর্মী ফটক খুলে দিন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাড়িটি সরকারি। একজন কর্মকর্তাকে নামিয়ে দিয়ে আসার পথে এ ঘটনা ঘটে। বিভাগীয় কমিশনার আজ রাত সাড়ে দশটায় প্রথম আলোকে বলেন, একজন কর্মকর্তাকে পৌঁছে দিয়ে গাড়িটি চলে যাচ্ছিল। এর মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক ওই চালককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। কুকুরটির মৃত্যুতে চালকের দায়–দায়িত্ব কতটুকু; তা বের করবে কমিটি। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পরিবেশকর্মী রিতু পারভী। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা গেছে, চালকের দায়িত্বহীনতায় কুকুরটির মৃত্যু হয়েছে। আমরা চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

১ মিনিট ৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিও দেখে সম্মিলিত পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি চিকিৎসক মো. মনজুরুল করিম গতকাল রোববার কোতোয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে জেনেছি, কুকুরটি অন্তঃসত্ত্বা ছিল। গাড়ির চাপায় কুকুরটি মারা গেছে। তাই অভিযোগ করেছি।’ তিনি জানান, ঘটনার পর মৃত কুকুরটিকে সিটি করপোরেশনের বর্জ্য সংগ্রহকারী গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়।

জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি যাচাই-বাছাই করছি।’

সম্প্রতি পাবনার ঈশ্বরদীতে আটটি কুকুরছানাকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনা হয়। সেখানে উপজেলা কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুল রহমানের সরকারি বাসভবনে জন্মানো ছানাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে হত্যা করা হয়। অভিযোগের পর হাসানুলের স্ত্রী নিশি রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার করা মামলায় তাঁকে আদালত জেলহাজতে পাঠান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অন্তঃসত্ত্বা কুকুরের ওপর দিয়ে ধীরে চলে গেল গাড়ি, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু