রংপুরের পীরগাছায় ৪১ একর ধানক্ষেত নষ্ট করা সেই ইটভাটাটি চালু করতে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। প্রশাসনের ভেঙে ফেলা চিমনি ও দেয়াল পুনর্নির্মাণ চলছে পুরোদমে। 
এমএসবি ব্রিকস নামে এ ভাটার মালিক মমিনুল ইসলাম বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি মহানগর ২৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক। দলের দাপট দেখিয়ে তিনি প্রশাসনের বন্ধ করে দেওয়া ভাটার কাজ শুরুর পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ কৃষকদের। কৃষক ও কৃষি রক্ষায় অবিলম্বে ইটভাটা চালুর প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবি জানান তারা। 
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে উপজেলার বামন সর্দার গ্রামে অবস্থিত এমএসবি নামে ইটভাটার অনুমোদন ছিল ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এর পর আর নবায়ন করা হয়নি। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও নেই ভাটাটির। আদালতে একটিমাত্র রিট করে চলছিল এর কার্যক্রম। এবারের বোরো মৌসুমে ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় ৭৮ জন কৃষকের ৪১ একর জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়। এ নিয়ে কৃষকরা আন্দোলন শুরু করলে সরেজমিন তদন্ত করে কৃষি অধিদপ্তর। সত্যতা পেয়ে ভাটা মালিককে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দিতে নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। 
ভাটা মালিক মমিনুল ইসলাম ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হলেও পরে একাধিকবার উপজেলা পরিষদে কৃষকদের ডেকে টাকা না দিয়ে টালবাহানা করেন। এ ঘটনায় গত ৪ মে কৃষকরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে বিক্ষোভ করেন। তারা ভাটা উচ্ছেদের দাবি জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ মে দুপুরে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে ইটভাটাটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। 
স্থানীয় কৃষক বাদশা মিয়া ও মদন মোহন জানান, ইটভাটা ভেঙে ফেলার এক মাসও পার হয়নি। এরই মধ্যে চিমনি ও দেয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন মমিনুল ইসলাম। এর জন্য প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেননি। 
সুশান্ত বর্মণ ও জয়নাল আবেদীন বলেন, ইটভাটার মালিক বিএনপির প্রভাবশালী নেতা। 
তিনি আইন-আদালতের তোয়াক্কা করছেন না। দলের প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ ইটভাটাটি আবার চালু করতে চিমনি নির্মাণ করছেন। এই ভাটা চালু হলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভবিষ্যতে কোনো ফসল ঘরে তোলা যাবে না। 
ইটভাটার কাজ শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা– জানতে চাইলে ব্যবস্থাপক মোনা চন্দ্র বর্মণ বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। কীভাবে নির্মাণ হচ্ছে সব মালিক জানেন। আপনারা তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। 
এ বিষয়ে কথা বলতে ইটভাটা মালিক মমিনুল ইসলামের ফোনে কল দেওয়া হয়। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এর পর একাধিকবার ফোন করলেও সাড়া মেলেনি। 
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হক সুমন বলেন, কৃষকদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এমএসবি ইটভাটার মালিককে চিমনি পুনর্নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়নি। সরেজমিন তদন্ত করে সত্যতা পেলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইট ভ ট ইটভ ট র র অন ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বন্ধ ইটভাটা চালু করতে নেতার তোড়জোড়

রংপুরের পীরগাছায় ৪১ একর ধানক্ষেত নষ্ট করা সেই ইটভাটাটি চালু করতে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। প্রশাসনের ভেঙে ফেলা চিমনি ও দেয়াল পুনর্নির্মাণ চলছে পুরোদমে। 
এমএসবি ব্রিকস নামে এ ভাটার মালিক মমিনুল ইসলাম বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি মহানগর ২৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক। দলের দাপট দেখিয়ে তিনি প্রশাসনের বন্ধ করে দেওয়া ভাটার কাজ শুরুর পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ কৃষকদের। কৃষক ও কৃষি রক্ষায় অবিলম্বে ইটভাটা চালুর প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবি জানান তারা। 
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে উপজেলার বামন সর্দার গ্রামে অবস্থিত এমএসবি নামে ইটভাটার অনুমোদন ছিল ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এর পর আর নবায়ন করা হয়নি। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও নেই ভাটাটির। আদালতে একটিমাত্র রিট করে চলছিল এর কার্যক্রম। এবারের বোরো মৌসুমে ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় ৭৮ জন কৃষকের ৪১ একর জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়। এ নিয়ে কৃষকরা আন্দোলন শুরু করলে সরেজমিন তদন্ত করে কৃষি অধিদপ্তর। সত্যতা পেয়ে ভাটা মালিককে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দিতে নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। 
ভাটা মালিক মমিনুল ইসলাম ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হলেও পরে একাধিকবার উপজেলা পরিষদে কৃষকদের ডেকে টাকা না দিয়ে টালবাহানা করেন। এ ঘটনায় গত ৪ মে কৃষকরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে বিক্ষোভ করেন। তারা ভাটা উচ্ছেদের দাবি জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ মে দুপুরে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে ইটভাটাটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। 
স্থানীয় কৃষক বাদশা মিয়া ও মদন মোহন জানান, ইটভাটা ভেঙে ফেলার এক মাসও পার হয়নি। এরই মধ্যে চিমনি ও দেয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন মমিনুল ইসলাম। এর জন্য প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেননি। 
সুশান্ত বর্মণ ও জয়নাল আবেদীন বলেন, ইটভাটার মালিক বিএনপির প্রভাবশালী নেতা। 
তিনি আইন-আদালতের তোয়াক্কা করছেন না। দলের প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ ইটভাটাটি আবার চালু করতে চিমনি নির্মাণ করছেন। এই ভাটা চালু হলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভবিষ্যতে কোনো ফসল ঘরে তোলা যাবে না। 
ইটভাটার কাজ শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা– জানতে চাইলে ব্যবস্থাপক মোনা চন্দ্র বর্মণ বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। কীভাবে নির্মাণ হচ্ছে সব মালিক জানেন। আপনারা তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। 
এ বিষয়ে কথা বলতে ইটভাটা মালিক মমিনুল ইসলামের ফোনে কল দেওয়া হয়। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এর পর একাধিকবার ফোন করলেও সাড়া মেলেনি। 
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হক সুমন বলেন, কৃষকদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এমএসবি ইটভাটার মালিককে চিমনি পুনর্নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়নি। সরেজমিন তদন্ত করে সত্যতা পেলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ