ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
Published: 20th, June 2025 GMT
ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত করেছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র। দক্ষিণ ইসরায়েলের কিছু ভিডিও ফুটেজে বড় ধোঁয়ার কুণ্ডলী, জ্বলন্ত গাড়ি এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে জরুরি পরিষেবা কর্মীদের দেখা গেছে। ঘটনাস্থলটি একটি প্রধান সড়ক বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে ইরানের হামলা ঠিক কোথায় আঘাত করেছে, তা এখনো পরিষ্কার হওয়া যায়নি। আলজাজিরা লিখেছে, “এখনও পরিষ্কার নয়, কারণ আমরা এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাইনি যে, কোন লক্ষ্যবস্তুকে টিক আঘাত করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “ইসরায়েলের হোম ফ্রন্ট কমান্ড জানিয়েছে, এখন সুরক্ষিত আশ্রয়স্থল থেকে বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।” তবে তারা স্পষ্ট করে বলেনি, ঠিক কোথায় ওই ক্ষেপণাস্ত্র বা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো পড়েছে।
আরো পড়ুন:
যুদ্ধ বাধলে ইরান-ইসরায়েলের অর্থনীতির কী হাল হবে?
ইরানে রেজিম চেঞ্জ: পশ্চিমা বিশ্বের ‘ভন্ডামির ইতিহাস’
আলজাজিরা আরো লিখেছে, দক্ষিণ ইসরায়েল কেন্দ্রীয় অঞ্চলের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম ঘনবসতিপূর্ণ, যেখানে গত কয়েক দিনে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে।
১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে হামলার পর থেকে ইরানও পাল্টা হামলা চালাচ্ছে। দুই দেশের এই সংঘাতে ইসরায়েলের পক্ষে হামলা যুক্ত হওয়া, না-হওয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কথা বলছে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাননি।
অবশ্য ইউরোপসহ বাকি বিশ্ব এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে না জড়ানোর আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ট্রাম্পকে ইরান থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার্
ঢাকা/হাসান/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
‘মাজারের অপরাধডা কী, তাঁরায় মাজারে হামলা করলো ক্যারে’
কুমিল্লা নগর থেকে হোমনা উপজেলার আসাদপুর গ্রামটির দূরত্ব প্রায় ৭৩ কিলোমিটার। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামটিতে ঢুকতেই চোখে পড়ল থমথমে অবস্থা। চারদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা। পুলিশের পাশাপাশি একটু পরপরই সেনাবাহিনীর টহল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তিমূলক একটি পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার এই গ্রামে চারটি মাজারে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকেই আতঙ্ক কাটছে না আসাদপুর গ্রামে।
মাজারগুলোর ভক্তদের ভাষ্য, মহানবী (সা.)-কে নিয়ে মহসিন (৩৫) নামের যে যুবক কটূক্তিমূলক পোস্ট করেছেন, এরই মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। মামলা হওয়ার পর মহসিন এখন কারাগারে আছেন। এরপরও একই সঙ্গে চারটি মাজারে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় হতভম্ব তাঁরা।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে হামলার শিকার ওই মাজার চারটি হলো—আসাদপুর গ্রামের আলেক শাহের বাড়িতে অবস্থিত তাঁর বাবা কফিল উদ্দিন শাহের মাজার, একই গ্রামের আবদু শাহের মাজার, কালাই (কালু) শাহের মাজার ও হাওয়ালি শাহের মাজার। এর মধ্যে হাওয়া বেগম নামে এক নারী ‘হাওয়ালি শাহ’ মাজার পরিচালনা করেন। তবে সেখানে কোনো ব্যক্তি সমাহিত নেই, ওই বাড়িতে মাজারসদৃশ স্থাপনা ও ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে।
কফিল উদ্দিন শাহের মাজারে হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মনির হোসেন নামের এক ভক্ত। তিনি উপজেলার ফতেরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বলেন, ‘১৫ বছর ধইরা এই মাজারের মুরিদ আমি। এইখানে খারাপ কিছু হয় না। আমরা জানতাম চাই, মাজারের অপরাধডা কী? তাঁরায় মাজারে হামলা করলো ক্যারে?’
১৫ বছর ধইরা এই মাজারের মুরিদ আমি। এইখানে খারাপ কিছু হয় না। আমরা জানতাম চাই, মাজারের অপরাধডা কী? তাঁরায় মাজারে হামলা করলো ক্যারে?মনির হোসেন, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত কফিল উদ্দিন শাহের মাজারের ভক্তপুলিশ ও স্থানীয় লোকজন বলেন, মহসিনকে গত বুধবার দুপুরে গ্রেপ্তারের পর গত বৃহস্পতিবার সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমেই মহসিনদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে কফিল উদ্দিন শাহের মাজার ভাঙচুর করা হয়। পরে তাঁদের একটি টিনশেড ও দুটি টিনের বসতঘরে ভাঙচুর শেষে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে ঘরে থাকা সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পরে বাকি তিনটি মাজারে হামলা করা হয়।
সরেজমিনে যা দেখা গেলগতকাল শুক্রবার দুপুরে কফিল উদ্দিন শাহের মাজারের সামনে যেতেই চোখে পড়ল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা। মাজার ও বাড়ির সামনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান। একটু পরপরই সামনের সড়কে টহল দিচ্ছেন পুলিশ, সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা।
কফিল উদ্দিন শাহের মাজার ভাঙচুরের পাশাপাশি তাঁর ছেলে, নাতি ও ভক্তদের থাকার তিনটি ঘর হামলার সময় আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। গতকাল দুপুরে মাজারটিতে ঢোকার আগে দূর থেকে ভেসে আসছিল পোড়া গন্ধ। একটু কাছে যেতেই দেখা গেল, পোড়া টিনশেড ঘরটি থেকে তখনো ধোঁয়া বেরোচ্ছে। ভক্তরা ভাঙচুর হওয়া মাজার ও আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া ঘরগুলো দেখে হতভম্ব।
ঘটনার পর থেকেই কফিল উদ্দিন শাহের ছেলে আলেক শাহসহ পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতির কারণে বিভিন্ন স্থান থেকে আসছেন ভক্তরা। বাড়িতে খোলা আকাশের নিচে রান্না বসিয়েছিলেন আলেক শাহের একমাত্র মেয়ে কানন বেগম। মাজারের নারী ভক্তরা তাঁকে সহায়তা করছিলেন।
কফিল উদ্দিন শাহের মাজার ভাঙচুরের পাশাপাশি তাঁর ছেলে, নাতি ও ভক্তদের থাকার তিনটি ঘর হামলার সময় আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লার হোমনা উপজেলার আসাদপুর গ্রামে