শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাতে এই দুই শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। আটক দুই শিক্ষার্থী হলেন- সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শান্ত তারা আদনান এবং স্বাগত দাশ পার্থ।

এসএমপির কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়াউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত মাসে সুরমা আবাসিক এলাকার একটি মেসে ওই ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে অজ্ঞান করে তারা শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটায়। এসময় তারা ছাত্রীটির অজান্তে ভিডিও ধারণ করে এবং তা প্রকাশের হুমকি দিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বাধ্য করে। দীর্ঘ এক মাস পর, ১৯ জুন ভুক্তভোগী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় পুলিশ অভিযুক্তদের ডিজিটাল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে শনাক্ত করে ও আটক করে।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.

মো. ইসমাইল হোসেন (ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য) বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি অবগত হয়ে অতিসত্ত্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, সিলেট জালালাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ, কোতোয়ালি থানার ইনচার্জ মিলে মিটিং করে প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। এর প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের পুলিশ হেফাজতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনিকভাবে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং সুষ্ঠু ও ন্যায়সঙ্গত বিচারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’’ 

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়াউল হক বলেন, ‘‘আমরা অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে রেখেছি। তাদের বিরুদ্ধে আজ (শুক্রবার) সকালে মামলা হয়েছে। তাদের আদালতে চালান দেওয়া হচ্ছে।’’

ঢাকা/নুর/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ইনচ র জ

এছাড়াও পড়ুন:

হামাগুড়ি দিয়ে চলতে হবে না মনার, স্নাতকে ভর্তি নিয়েও দুশ্চিন্তা কেটেছে

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার কলেজছাত্রী মনা বেগমকে (১৮) আর হামাগুড়ি দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হবে না। প্রথম আলোয় সংবাদ প্রকাশের পর রাজধানীর দুজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের সহযোগিতায় তাঁকে একটি তিন চাকার বৈদ্যুতিক সাইকেল তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি ও শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে তাঁকে আর্থিকভাবে সহায়তাও করা হয়েছে।

গতকাল রোববার বিকেলে শাহ নিমাত্রা সাগরনাল-ফুলতলা কলেজের অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন ও কয়েকজন শিক্ষক এলাপুর ফাঁড়ি চা-বাগানে মনার বাড়িতে গিয়ে বিশেষ যানটি তুলে দিয়েছেন।

মনাকে সহায়তাকারী দুই শিক্ষক হলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক এস এস এম সাদরুল হুদা ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আফসানা আক্তার।

আরও পড়ুনহামাগুড়ি দিয়ে কলেজে যেতেন মনা, এখন অর্থাভাবে স্নাতকে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তা২৮ অক্টোবর ২০২৫

জহির উদ্দিন বলেন, কীভাবে সাইকেলটি চালাতে হবে, চার্জ দিতে হবে—এসব মনাকে শিখিয়েছেন মিস্ত্রি। কিছুদিন বাড়িতে চেষ্টা করতে হবে। প্রতিবন্ধিতাকে হার মানিয়ে এত দূর আসতে পেরেছে ওই ছাত্রী। সাইকেল চালানোও তাঁর পক্ষে অসম্ভব কিছু নয়।

জহির উদ্দিন আরও বলেন, প্রথম আলোয় সংবাদ পড়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মনার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর (মন) স্নাতকে ভর্তিসহ লেখাপড়ার ব্যয়ভার বহনের কথা জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া সম্প্রতি ঢাকার এক ব্যবসায়ীও মনার পাশে দাঁড়াতে তাঁকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। এসব সহায়তা পেয়ে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মনা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার পাশে যাঁরা দাঁড়িয়েছেন সবাইকে কৃতজ্ঞতা। আমি স্নাতকে ভর্তি হব, লেখাপড়া বন্ধ করব না।’

মনা এলাপুর বাগানের বাসিন্দা দিন মজুর হারিছ মিয়া ও আমিনা বেগম দম্পতির মেয়ে। মনা এবার স্থানীয় শাহ নিমাত্রা সাগরনাল-ফুলতলা কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ–২ দশমিক ৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। জন্মের পর থেকে বাঁ হাত, বাঁ পা, কোমরে জোর না পাওয়ায় সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন মনা বেগম। ডান হাত আর ডান পায়ের শক্তিতে হামাগুড়ি দিয়ে চলাচল করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার সময় হামাগুড়ি দিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা অতিক্রম করে বাসে উঠতেন। চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তিনি এবার শাহ নিমাত্রা সাগরনাল-ফুলতলা কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ভবিষ্যতে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখে মনা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ