ক্রিকেটের বাইরে থেকে তিন উপদেষ্টার মনোনয়ন দিয়ে সমালোচনার মুখে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। দেশের একটি হোটেলের সিইও মো. শাখাওয়াত হোসেন, ক্রিকেট বিশ্লেষক আবিদ হুসাইন সামি ও ব্যারিস্টার শেখ মাহাদিকে নিজের উপদেষ্টা হিসেবে মনোনয়ন দেন তিনি। যেখানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) গঠনতন্ত্রের ১৮ নম্বর ধারায় উল্লেখ আছে দেশের খ্যাতনামা ক্রিকেটার বা ক্রিকেট সংগঠকদের থেকে পাঁচজন উপদেষ্টা মনোনয়ন দেওয়া যাবে।

যদিও গতকাল বুলবুল সমকালকে বলেন, সামি ক্রিকেটীয় পরামর্শ দেবেন না। তাঁর কাজ হবে বাচ্চাদের জন্য কনটেন্ট তৈরি করা। ক্রিকেটীয় পরামর্শ নেওয়ার জন্য দু’জন সাবেক তারকা ক্রিকেটারকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
 
অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী বুলবুল প্রায় দুই দশক এশিয়া ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলে (আইসিসি) কাজ করেছেন। তিন উপদেষ্টার মধ্যে ‘কনটেন্ট ক্রিয়েটর’ সামিকে ছাড়া বাকিদের সম্পর্কে জানাশোনা থাকার কথা না তাঁর। তিনি স্বীকারও করেছেন, কারও সঙ্গেই খুব বেশি ঘনিষ্ঠতা ছিল না। 

প্রসঙ্গিকভাবেই জানতে চাওয়া হয় তিন উপদেষ্টা মনোনয়নে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় দেওয়া কিনা? উত্তরে বুলবুল বলেন, ‘মিলেমিশেই করা হয়েছে। এটিই শেষ না। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আরও দুজনকে নিতে পারব। একজন কোর ক্রিকেটারকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, যিনি এইচপি বা ইভেন্ট নিয়ে পরামর্শ দেবেন।’

কাকে কেন নেওয়া হয়েছে সে ব্যাখ্যাও দিলেন বুলবুল, ‘আমার তো লিগ্যালের বিশেষজ্ঞ নেই। লিগ্যাল সাপোর্টটা নেওয়ার জন্যই ব্যারিস্টার মাহাদিকে নেওয়া। যদিও তাঁর সঙ্গে আমার মাত্র দুইবার কথা হয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা ইংল্যান্ডে যে কোনো সিরিজে ট্যুরিজম বোর্ডকে সম্পৃক্ত করে ওটা সৃষ্টি করার জন্যই একজন উপদেষ্টাকে নিয়েছি। সামির ব্যাপারটা হলো তাঁকে ক্রিকেট উপদেষ্টা বলতে বোঝাচ্ছি, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কথা ভেবে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে কীভাবে ক্রিকেট উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারি ওই জায়গায়টায় পরামর্শ নেওয়ার জন্য সামিকে নেওয়া। আরও দুটি বিকল্প আছে। ওখানে একজন কোর ক্রিকেটার নেব। যিনি হাইপারফরম্যান্স, ইভেন্ট ক্রিকেট নিয়ে পরামর্শ দেবেন।’ 

এই মনোনয়ন দেওয়া ভুল হয়েছে কিনা জানতে চাওয়া হলে বুলবুল বলেন, ‘আমি ভুল সিদ্ধান্ত বলব না। একটা সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়েছে। উপদেষ্টাদের দলটা আরও বাড়বে। ক্রিকেটসংশ্লিষ্ট দুইজনকে নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন উপদ ষ ট র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ভূতের ট্রেন

তামিম ও মুনা। ওরা দুই ভাইবোন। একটু ছুটি পেলেই ঘুরে বেড়ায়। বাবা-মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঘুরতে বের হয়ে যায় গ্রামের আশপাশে। ওদের গ্রামের নাম বকুলপুর।
বকুলপুরে একটি পুরোনো রেলস্টেশন আছে। সে অনেক আগে সেখানে ট্রেন আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আর কেউ সেখানে যেতে সাহস করে না। বেশ রহস্যময় রেলস্টেশন!
একদিন বিকেলে সেখানে ঘুরতে গেলো তামিম ও মুনা। ওরা দেখলো, ধুলো জমে থাকা একটি বেঞ্চ, তার ওপরে পড়ে আছে চকচকে টিকিট। মুনা টিকিটটা তুলে নিলো। তাতে লেখা, ‘ভূতের ট্রেন! আজ রাত বারোটায় ছাড়বে।’
মুনা চোখ বড় বড় করে বললো, ‘ভূতের ট্রেন!’
তামিম হেসে বললো, ‘আজ রাতে দেখবো, সত্যিই ভূতের ট্রেন বলে কিছু আছে কিনা।’
ওরা অপেক্ষা করতে লাগে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত নামলো। অন্ধকারে ঢেকে গেছে পুরো স্টেশন। কোথাও কারও সাড়াশব্দ নেই। চারপাশে কেবল ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে। হঠাৎ দূর থেকে ভেসে আসে হুইসেলের শব্দ!
মুনা ফিসফিস করে বললো, ‘তামিম, শুনতে পাচ্ছো?’
তামিম মাথা নাড়িয়ে সায় দিলো। তবে কথা বললো না। একটু পর ঝিকঝিক শব্দ করে ট্রেন ঢুকলো স্টেশনে। ট্রেনের রং নীল। রাতের অন্ধকারে জ্বলজ্বল করছিলো। তামিম ও মুনার কাছে সবকিছু স্বপ্নের মতো লাগছে।
ট্রেনটা স্টেশনে থামলো। তারপর দরজা খুলে গেলো। তখন একজন লম্বা লোক বেরিয়ে এলেন। তাঁর পরনে অনেক আগের পুরোনো পোশাক। লোকটার চোখ দুটো জ্বল জ্বল করছে! তিনি গম্ভীর গলায় বললেন, ‘তোমাদের ভূতের ট্রেনে স্বাগতম! আমি এই ট্রেনের কন্ডাক্টর।’
লোকটিকে দেখে ভয়ে কাঁপছে তামিম ও মুনা। তবুও তারা দুরুদুরু বুকে ট্রেনে ওঠে।
ট্রেনের ভেতরটা একেবারে অন্যরকম! দেওয়ালগুলো ধোঁয়ার মতো দুলছে, আর বাল্ব থেকে সবুজ আলো বের হচ্ছে!
সিটে বসে থাকা যাত্রীদের দিকে তাকিয়ে দুই ভাইবোন চমকে উঠলো!
একজন পুরোনো তলোয়ার পরিষ্কার করছে। আরেকজন পায়ের কাছে বসানো কাঠের বাক্স থেকে চকচকে মুদ্রা বের করছে। তিনি দেখতে জলদস্যুর মতো। আর একটি ছেলে জানালার বাইরে তাকিয়ে হাসছে। মুনা ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলো, ‘ওরা কি ভূত?’
কন্ডাক্টর হেসে বললেন, ‘কেউ ভূত, কেউ আত্মা। এ ট্রেনে সব যাত্রী রহস্যময়!’
খানিকটা পথ চলার পর ট্রেনটা থেমে গেলো। জানালার বাইরে তাকিয়ে তামিম অবাক। বাইরে চকলেটের শহর! একটি ছোট্ট ভূত খুশিতে লাফাতে লাফাতে ট্রেন থেকে নামলো।
ছোট্ট ভূতটা বললো, ‘এখানে কত্তো চকলেট, আমি চকলেট খেতে যাই।’
মুনা বললো, ‘আমরা কি নামতে পারি?’
কন্ডাক্টর মাথা নেড়ে বললেন, ‘হ্যাঁ, নামতে পারবে। তবে সাবধানে থেকো, এটা ভূতের শহর।’
তারা চকলেট শহরে নেমে মজার মজার চকলেট খেলো। সেখানে আইসক্রিমের গাছ ছিলো। হঠাৎ আকাশে মেঘ ঘনিয়ে এলো। যে কোনো সময় বৃষ্টি নামতে পারে। তাই সবাই ট্রেনে ওঠে। ট্রেন আবার চলতে শুরু করে। তখনই ট্রেনের সব আলো উধাও! কুয়াশার মতো কিছু ট্রেনের মধ্যে ঢুকে পড়েছে!
কন্ডাক্টর ফিসফিস করে বললেন, ‘এই জায়গা বিপজ্জনক, এখানে ভূতের আত্মারা থাকে। ওরা তোমাদের নাম ধরে ডাকতে পারে। তবে তোমরা সাড়া দেবে না।’
তামিম ও মুনা শক্ত করে একজন আরেকজনের হাত ধরে রাখে।
তখনই ওরা ফিসফিস ডাক শুনতে পেলো, ‘তামিম, মুনা, আমাদের সাথে এসো।’ একটি সাদা ছায়া তাদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
কন্ডাক্টর হুইসেল বাজিয়ে বললেন, ‘দৌড়াও!’ ওমনি ট্রেন দ্রুতগতিতে ছুটতে শুরু করে।
একটু যেতেই ট্রেন থেকে কুয়াশা উধাও। আবার সবুজ আলো জ্বলে ওঠে। তখন একটি ছেলে এসে বসল ওদের পাশে।
‘তোমার নাম কী?’ মুনা জিজ্ঞেস করল।
ছেলেটি বললো, ‘আমি নীলু। অনেক আগে ঝড়ের রাতে হারিয়ে গিয়েছি। তারপর থেকে এই ট্রেনে ঘুরে বেড়াই।’
তামিম বললো, ‘তুমি কখনো বাড়ি ফিরতে পারবে না?’
কন্ডাক্টর বললেন, ‘এ ট্রেন হারানো আত্মাদের বাড়ি পৌঁছে দিতে পারে।’
কন্ডাক্টরের কথায় তামিম ও মুনা ভাবলো, তারা নীলুকে সাহায্য করবে।
তারপর কন্ডাক্টর একটি জাদুর দরজা দেখালেন। তিনি বললেন, ‘এই দরজা দিয়ে ঢুকলে নীলুর অতীত দেখা যাবে।’
ওরা দরজা পার হতেই একটি পুরোনো গ্রাম দেখতে পেলা। সেখানে ছোট্ট নীলু দাদুর সাথে খেলছে। এরপর হঠাৎ ঝড় উঠলো। বাতাসে উড়ে গেলো গাছের ডাল, চারদিকে ধুলা উড়ছে। সেই ঝড়ে নীলু পথ হারিয়ে ফেলে!
মুনার চোখ ছলছল করে ওঠে। ও বললো, ‘নীলু, সেদিন তুমি বাসায় ফিরতে পারোনি?’
নীলু বললো, ‘এখন মনে পড়েছে, আমি পথ হারিয়ে ফেলেছিলাম। এবার আমি ফিরতে চাই।’
ট্রেন থামে পরবর্তী স্টেশনে। সেখানে হলুদ আলো ছড়িয়ে আছে। কন্ডাক্টর বললেন, ‘এটাই নীলুর বাড়ি ফেরার পথ।’
নীলু বললো, ‘আজ থেকে তোমরা আমার বন্ধু। অনেক ধন্যবাদ। আমি এবার যাই।’
তারপর সে ধীরে ধীরে আলোয় মিলিয়ে গেলো। মুনা চোখ মুছে বললো, ‘আর কি কখনো নীলুর সাথে দেখা হবে?’
কন্ডাক্টর হাসলেন। খুব রহস্যময় সেই হাসি। তিনি বললেন, ‘হয়তো দেখা হবে, আবার নাও হতে পারে। এখন তোমাদের বাড়ি ফেরার সময় হয়েছে।’
ট্রেন ধীরে ধীরে বকুলপুর রেলস্টেশনে ফিরে এলো। তামিম ও মুনা ট্রেন থেকে নামে। তারপর পেছন ফিরে তাকালো। কিন্তু ট্রেন, কন্ডাক্টর–সব অদৃশ্য হয়ে গেছে! n

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারী সহপাঠীকে হলের কক্ষে নিয়ে যাওয়ায় ছাত্রের আসন বাতিল
  • বিগ ব্যাশে রিশাদ কেন আবার দল পেলেন
  • মায়াপাশে বাঁধা প্রাণ
  • জাতীয় নাগরিক পার্টির গঠনতন্ত্র অনুমোদন
  • ভূতের ট্রেন
  • এনসিপির সাধারণ সভায় খসড়া গঠনতন্ত্র অনুমোদন, ইসির নিবন্ধনের জন্য আবেদন রোববার
  • তিন উপদেষ্টার নিয়োগ নিয়ে আমিনুলের ব্যাখ্যা
  • গঠনতন্ত্রের বাইরে গিয়ে উপদেষ্টা নিয়োগ, আমিনুল বললেন ‘বেজড অন দ্য নিড’
  • রোববার নিবন্ধনের আবেদন জমা দেবে এনসিপি