সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়িয়ে জুয়া খেলছেন ট্রাম্প
Published: 23rd, June 2025 GMT
‘শান্তির দূত’ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়িয়ে ফেলায় তাঁর সে প্রতিশ্রুতিকে এখন কথার কথা হিসেবে ধরা হচ্ছে। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনা তো দূরের কথা, ট্রাম্প এখন এমন একটি অঞ্চলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যেটা আরও বড় যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। এটি এমন একটি যুদ্ধ, যেখানে আমেরিকা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে।
ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় আমেরিকা হামলা চালিয়েছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা করার মাত্র দুই ঘণ্টা পরে হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বলেন, এই অভিযানটি ছিল একটি ‘অসাধারণ সাফল্য’।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, সেক্রেটারি অব স্টেট মার্কো রুবিও এবং ডিফেন্স সেক্রেটারি পিট হেগসেথকে পাশে নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে সতর্ক করে বলেন, যদি তারা তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি বাদ না দেয়, তাহলে ভবিষ্যতে তারা এমন হামলার মুখোমুখি হবে যা ‘অনেক ভয়াবহ’। ট্রাম্পের এ ধরনের বাহাদুরি সত্ত্বেও ওই অঞ্চল এবং বিশ্বের জন্য সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি বয়ে আনতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইরান।
এই সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, ইরানকে ‘নিঃশর্তভাবে আত্মসমর্পণ করতে হবে’, সেটা প্রেসিডেন্টকে এমন একটা অবস্থায় ফেলে দেয়, যেখান থেকে তাঁর ফিরে আসা ছিল কঠিন। ইরানও যে হুমকি দিচ্ছিল, সেটাও তাঁকে একই অবস্থায় ফেলে দিয়েছিল। এভাবেই যুদ্ধ শুরু হয় এবং এভাবেই যারা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, যুদ্ধটা তাদের কল্পনা ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। দুই সপ্তাহ ধরে আলোচনা কি কেবল একটা ভান ছিল– এমনই প্রশ্ন সবার মনে আসছে। হামলার পরপরই তাৎক্ষণিকভাবে এর ফলাফল খুব কমই জানা যায়। কিন্তু ট্রাম্প তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট এবং টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে শান্তির দ্বার উন্মুক্ত করার চেষ্টা করেছেন।
তবে এটি হয়তো অতিরিক্ত আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি। কারণ, ইসরায়েল ইরানের সামরিক সক্ষমতা দুর্বল করতে উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা চালালেও, আয়াতুল্লার হাতে এখনও অনেক অস্ত্র রয়েছে। তবে পরিস্থিতি দ্রুত জটিল হয়েও উঠতে পারে।
ইরানের ওপর মার্কিন হামলার আশঙ্কা ইতোমধ্যেই কেবল ডেমোক্র্যাটদের কাছ থেকে নয়, ট্রাম্পের নিজস্ব ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ আন্দোলনের ভেতর থেকেও তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। যদি এই আক্রমণটি শুধু একবারের জন্য হয়ে থাকে, তাহলে ট্রাম্প হয়তো তাঁর সমর্থক গোষ্ঠীর মধ্যে খুব সহজেই বিভক্তি দূর করতে সক্ষম হবেন। কিন্তু যদি এটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আরও বৃহত্তর সংঘাতের দিকে ঠেলে দেয়, তাহলে প্রেসিডেন্ট তাঁর দলের ভেতর থেকেই প্রতিরোধের মুখে পড়তে পারেন।
শনিবারের আক্রমণটি প্রেসিডেন্টের জন্য এমন একটি আগ্রাসী পদক্ষেপ। কারণ, তিনি তাঁর প্রথম মেয়াদে কোনো নতুন যুদ্ধ শুরু না করার জন্য গর্ব করেছিলেন। গত বছর নির্বাচনী প্রচারে বিদেশি সংঘাতে দেশকে জড়ানো পূর্বসূরিদের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে সমালোচনা করেছিলেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র এমন একট আম র ক র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সের ব্যাটিং ঝলক আর বোলারদের দাপটে ইংল্যান্ডের সিরিজ জয়
ডাবলিনের মালাহাইড ভিলেজে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডকে ছয় উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ নিজেদের করে নিল ইংল্যান্ড। ম্যাচের নায়ক জর্ডান কক্স করেছেন হাফ সেঞ্চুরি। সঙ্গে লিয়াম ডসন, জেমি ওভারটন ও আদিল রশিদের বোলিং জাদুতেই ধরা খেল স্বাগতিকরা।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৪ রান তুলেছিল আয়ারল্যান্ড। ইনিংসের মূল ভরসা ছিলেন গ্যারেথ ডেলানি। শেষদিকে তার ঝড়ো ২৯ বলে অপরাজিত ৪৮ রানে ভর করে লড়াকু সংগ্রহ পায় দল। ইনিংসে ছিল ৪টি চার আর ৩টি বিশাল ছক্কা। ওপেনার রস অ্যাডায়ার ২৩ বলে ৩৩ এবং তিন নম্বরে নামা হ্যারি টেক্টর ২৭ বলে ২৮ রান যোগ করেন। তবে অধিনায়ক পল স্টার্লিংকে দ্রুত ফেরান ডসন। পরে টেক্টরকেও আউট করে ২ ওভারে ৯ রানে ২ উইকেটের বোলিং ফিগার দাঁড় করান তিনি।
আরো পড়ুন:
ভারতকে ১৭২ রানের টার্গেট ছুড়ল পাকিস্তান
টস জিতে ফিল্ডিংয়ে ভারত
জেমি ওভারটন তার চার ওভারে লরকান টাকার ও কার্টিস ক্যাম্ফারকে ফিরিয়ে আয়ারল্যান্ডের মিডল অর্ডারে আঘাত হানেন। সবচেয়ে কার্যকরী ছিলেন লেগস্পিনার আদিল রশিদ। ইনিংসের শেষভাগে ৩ উইকেট তুলে নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তার বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ২৯ রানে ৩ উইকেট।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় ওভারেই সিনিয়র ব্যাটার জস বাটলারকে শূন্য রানে ফেরান ব্যারি ম্যাককার্থি। অধিনায়ক জেকব বেথেলও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি, করেন মাত্র ১৫ রান।
তবে একপ্রান্ত আগলে ব্যাট চালান ফিল সল্ট। ২৩ বলে ২৯ রানের ইনিংসে দুই চার ও একটি ছক্কা হাঁকিয়ে গড়েন কক্সের সঙ্গে ৫৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। সেখানেই ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। কক্স খেলেন ৩৭ বলে ৫৫ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস। যেখানে ছিল নিয়ন্ত্রিত শটের ছড়াছড়ি। শেষ পর্যন্ত বেন হোয়াইট তাকে বোল্ড করলেও তখন জয় প্রায় নিশ্চিত।
বাকি কাজটা সেরে দেন টম ব্যান্টন ও রেহান আহমেদ। ব্যান্টনের ২৬ বলে অপরাজিত ৩৭ রানে ভর করে ১৭.১ ওভারেই ৪ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড।
এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতল ইংল্যান্ড।
ঢাকা/আমিনুল