মার্কিন হামলার ইরানি প্রতিক্রিয়া দেখার অপেক্ষায় বিশ্ব
Published: 23rd, June 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্র গতকাল রোববার দিবাগত রাতে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর থেকে পুরো বিশ্ব ইরানের প্রতিক্রিয়া দেখার অপেক্ষায় আছে। ওই দিন ইরানে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের সঙ্গে যোগ দিয়ে হামলা চালিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ভূগর্ভস্থ ফর্দো পারমাণবিক স্থাপনার ওপর ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বাংকার–বিধ্বংসী বোমা ফেলার ১ দিন পর ইরান আত্মরক্ষার প্রতিশ্রুতি দেয়। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতারা তেহরানকে পিছু হটার আহ্বান জানান। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
গতকাল নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে সরকার পরিবর্তনের ধারণা তুলে ধরেন। তিনি লেখেন, ‘সরকার পরিবর্তন’ কথাটি রাজনৈতিকভাবে সঠিক নয়। কিন্তু বর্তমান সরকার যদি ইরানকে আবার মহান করতে না পারে, তাহলে কেন সরকার পরিবর্তন হবে না???’
ইরান ও ইসরায়েল ধারাবাহিকভাবে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
এক ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র বলেন, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান পশ্চিম ইরানের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। এর আগে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। এতে তেল আবিবে বহু মানুষ আহত হয় এবং বিভিন্ন ভবন লন্ডভন্ড হয়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রে ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ’সম্পর্কে সতর্ক করেছে। পাশাপাশি সম্ভাব্য সাইবার হামলা বা লক্ষ্যভিত্তিক সহিংসতার আশঙ্কার কথা উল্লেখ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রধান শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক স্থাপনার ওপর বিশেষ নজর দিয়ে টহল জোরদার করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আকাশপথ বন্ধ থাকায় সম্ভাব্য বিক্ষোভ ও ভ্রমণে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের জন্য নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করেছে এবং তাঁদের ‘অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের’ আহ্বান জানিয়েছে।
তেহরান এখনো মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা বা বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করাসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক কোনো হুমকি বাস্তবায়ন করেনি। তবে তারা হয়তো বেশি দিন চুপ থাকবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ইরানের কোম শহরের কাছে অবস্থিত ভূগর্ভস্থ ফর্দো পারমাণবিক স্থাপনা। কোম, ইরান, ২২ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁ-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে মানববন্ধন
নওগাঁ-২ (পত্নীতলা-ধামইরহাট) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ কর্মসূচির আয়োজন করেন মনোনয়নবঞ্চিত এক প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকেরা।
নওগাঁ-২ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক সামসুজ্জোহা খানের নাম ঘোষণা করেছে দলটি। এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি খাজা নাজিবুল্লাহ চৌধুরী।
খাজা নাজিবুল্লাহর সমর্থকেরা বেলা ১১টার দিকে নজিপুর জিরো পয়েন্ট এলাকায় নওগাঁ-নজিপুর সড়কের একপাশে দাঁড়িয়ে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধন করেন। এ কর্মসূচিতে পত্নীতলা ও ধামইরহাট উপজেলার ১৯টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা থেকে আসা নেতা–কর্মীরা অংশ নেন। তাঁদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণও এতে অংশ নেন। মানববন্ধনের আগে জিরো পয়েন্ট এলাকায় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে নওগাঁ-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিতর্কিত ব্যক্তি সামসুজ্জোহা খানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি মাঠে ছিলেন না। আওয়ামী লীগের সময়ে হরতালসহ বিভিন্ন আন্দোলনে খাজা নাজিবুল্লাহর নেতৃত্বে তৃণমূলের নেতা–কর্মীরা মাঠে ছিলেন। তাঁরা নওগাঁ-২ আসনে মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে খাজা নাজিবুল্লাহকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার অনুরোধ জানান।
নজিপুরের সাবেক পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন বলেন, নাজিবুল্লাহ ত্যাগী, পরীক্ষিত ও বারবার কারা নির্যাতিত নেতা। তাঁর নেতৃত্বেই পত্নীতলা ও ধামইরহাট বিএনপি ঐক্যবদ্ধ। অথচ তৃণমূলের মতামত অগ্রাহ্য করে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে। খাজা নাজিবুল্লাহকে প্রার্থী ঘোষণা না করা হলে তৃণমূল বিএনপি বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে।
ধামইরহাট উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক রুহুল আমিন বলেন, ২০১৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগবিরোধী সব আন্দোলনে যাঁরা মাঠে সক্রিয় ছিলেন, তাঁরা সবাই খাজা নাজিবুল্লাহর পক্ষে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হোক—এটি শুধু বিএনপির নেতা–কর্মীদের চাওয়া নয়, দুই উপজেলার সব মানুষের চাওয়া। তাই এখানে মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে আহ্বান জানাতে এই কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া সামসুজ্জোহা খান বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। যাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করা হবে।’
মনোনয়নবঞ্চিত খাজা নাজিবুল্লাহ বলেন, ‘সব আন্দোলন–সংগ্রামে মাঠে সক্রিয় ছিলাম। দুর্দিনে তৃণমূল নেতাদের পাশে ছিলাম, আছি ও থাকব। আমরা কেউ দলের ঊর্ধ্বে নই। দলের জন্য কাজ করছি। পুনর্বিবেচনা হলে মনোনয়ন পেতে পারি। দলই সবার আগে।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নজিপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির সদস্য আনোয়ার হোসেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য মিজানুর রহমান, ধামইরহাট উপজেলা বিএনপির সদস্য রেজাউল ইসলাম, ধামইরহাট মহিলা দলের সহসভাপতি নাহিদা সুলতানা, জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল ধামইরহাট শাখার আহ্বায়ক রকিবুল হাসান, পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য আবু তাহের প্রমুখ।