ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরানে তিনজনের ফাঁসি
Published: 25th, June 2025 GMT
ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরান তিন ব্যক্তিকে ফাঁসি দিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির বিচার বিভাগের সংবাদ সংস্থা মিজান।
আজ বুধবার ইরানের বিচার বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে।
মিজানের বরাতে সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অভিযুক্তরা ইরানে হত্যাকাণ্ড চালানোর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সরঞ্জাম পাচারের চেষ্টাও করেছিলেন।
ফাঁসি দেওয়া তিনজনের নাম প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। তারা হলেন- ইদ্রিস আলী, আজাদ শোজাই ও রাসুল আহমদ রাসুল। তাদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের পক্ষে সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়েছিল এবং সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয় তারা।
ইরানের বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইদ্রিস আলী, আজাদ শোজাই ও রাসুল আহমদ রাসুল নামের তিন ব্যক্তি হত্যাকাণ্ড চালানোর উদ্দেশ্যে দেশটির ভেতরে সরঞ্জাম ঢোকানোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন। জায়নবাদী শাসককে (ইসরায়েল) সহযোগিতা করার অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করে বিচার করা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আজ সকালে রায় কার্যকর করা হয়েছে এবং তাদের ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে।
এদিকে, রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্পর্কিত নূর নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সাম্প্রতিক ১২ দিনের সংঘাত চলাকালে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে আরও ৭০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ইরান।
তেহরান দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছে, তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে ইসরায়েল নানা ধরনের গোপন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের মামলাকে তারা জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার অংশ হিসেবে বিবেচনা করে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল গ প তচরব ত ত ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
গুমের শিকার ব্যক্তিদের পুনর্বাসনে তহবিল গঠনের দাবি
গুমের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁরা বেঁচে ফিরেছেন, তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য তহবিল গঠনের দাবি জানিয়েছেন আট বছর গুম থাকা আহমদ বিন কাসেম (আরমান)। এই দাবির পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেছেন, এই ব্যক্তিরা ঠিকমতো চাকরি পাচ্ছেন না, ব্যাংক তাঁদের ঋণ দিতে ভয় পায়, বাড়ির মালিকেরাও বাড়িভাড়া দিতে ভয় পান।
বৃহস্পতিবার ‘ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং ইনিশিয়েটিভ ইন পোস্ট কনফ্লিক্ট অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় আহমদ বিন কাসেম এ কথা বলেন। ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি (আইআইএলডি) এবং বাংলাদেশ ২.০ ইনিশিয়েটিভ যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনায় আহমদ বিন কাসেম বলেন, ‘আমাদের ভেতর এখন কী কাজ করছে, তা যদি আমি একটি শব্দে বলতে চাই, সেটা হলো আমরা ভীতসন্ত্রস্ত।’
গুমের শিকার সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবীর মতে, গুমের শিকার ব্যক্তি ও পরিবারের ভয় এখন সমাজেও ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, ‘ভীতি শুধু আমাদের ঘিরে নেই। যাঁরা আমাদের সংস্পর্শে আসেন, তাঁদের মধ্যেও ভীতি সঞ্চারিত হয়। একটা লোক অনেক মেধাবী। কিন্তু যখন কোনো উদ্যোক্তা জানতে পারেন, এই লোকটা একটা সময় গুম ছিলেন, তাঁকে তিনি চাকরি দিতে ভয় পাচ্ছেন।’
আহমদ বিন কাসেম বলেন, ‘আমার তো অন্তত একটা ল ডিগ্রি আছে, তাই দাঁড়াতে পারছি। কিন্তু অধিকাংশ ব্যক্তি এই মাসের ভাড়াটা কীভাবে দেবেন, তা জানেন না।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এই আইনজীবী বলেন, ‘গুমের শিকার ভুক্তভোগীদের জন্য একটি তহবিল গঠন করুন। আপনি যদি কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেন, আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলছি, আমাদের ট্যাক্সের (কর) একটি টাকাও খরচ করতে হবে না। সারা দুনিয়া এগিয়ে আসবে এই ভুক্তভোগীদের পুনর্বাসনের জন্য। ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা করুন। যাতে অন্তত অর্থনৈতিক বিষয়ে তাঁদের আর চিন্তা করতে না হয়।’
গুমের শিকার হয়ে আহমদ বিন কাসেম আট বছর নিখোঁজ ছিলেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর তিনি মুক্ত হয়ে ফিরে আসেন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট আহমদ বিন কাসেমকে মিরপুর ডিওএইচএস থেকে গুম করা হয়। আট বছর বন্দিশালায় থাকার পর ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট মুক্ত হন তিনি।
সভায় আয়োজকদের পক্ষ থেকে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। এতে গুম নিয়ে সত্যতা স্বীকার, দোষীদের ন্যায়বিচার, আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ গুমের শিকার ব্যক্তি ও ভুক্তভোগীদের জন্য কিছু সুপারিশ উঠে আসে।
আলোচনা সভায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মাহদী আমিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
শর্মিলা নওশিন ও তাজরিয়ান আকরামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন আইআইএলডির নির্বাহী পরিচালক শফিউল আলম।