স্ট্রেট বা সোজা চুলের প্রতি অনেকেরই আগ্রহ আছে। তবে জন্মসূত্রে সবারই চুল স্ট্রেট নয়। এ কারণে অনেকেই চুল সোজা করতে স্ট্রেটনিং আয়রন ব্যবহার করেন। কিন্তু ঘন ঘন আয়রন ব্যবহার করলে চুলের ক্ষতি হতে পারে। তা ছাড়া শুধু আয়রন করলে চুল সাময়িক স্ট্রেট হয়। অন্যদিকে কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট করালে চুল পাকাপাকিভাবে সোজা হয় তবে চুলের অনেক ক্ষতিও হয়। 

যরা চুল স্ট্রেট করতে চান তারা কয়েকটি প্রাকৃতিক পদ্ধতি  অনুসরণ করতে পারেন। এতে চুল সোজাও থাকবে, সুন্দরও থাকবে!

দুধ দিয়ে চুল ধুয়ে নিন
চুল স্বাভাবিকভাবে সোজা আর মসৃণ করতে দুধ ব্যবহার করতে পারেন।  একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত চুল সুস্থ করে তুলতেও দুধের ভূমিকা রয়েছে। কাপে পরিমাণমতো দুধ নিন। চুল শ্যাম্পু আর কন্ডিশনিং করার পরে হাতে খানিকটা দুধ নিয়ে আঙুল দিয়ে তেল মাখার মতো করে পুরো চুলে মেখে নিন। বাকি দুধটা চুলে ঢেলে নিন। মিনিট দুয়েক অপেক্ষা করুন, তারপর ধুয়ে ফেলুন। শুকোনোর পর চুল অনেক স্ট্রেট দেখাবে।  এই পদ্ধতিতে গরুর দুধ, আমন্ডের দুধ বা নারকেলের দুধ ব্যবহার করতে পারেন।

আমন্ড অয়েল মাখুন
চুলের দৈনন্দিন যত্নে আমন্ড অয়েল খুবই উপকারী। ভিটামিন ই আর ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ আমন্ড অয়েল চুলের রুক্ষতা কমায়, চুল মসৃণ রাখে। প্রতিদিন রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে অল্প আমন্ড অয়েল চুলে ব্যবহার করলে চুল স্ট্রেট দেখাবে। 

অলিভ অয়েল আর ডিম
অলিভ অয়েল চুলের স্বাভাবিক আর্দ্রতা রক্ষা করে এবং শুষ্কভাব প্রতিহত করে। অলিভ অয়েলের সঙ্গে দুটো ডিম ভেঙে মিশিয়ে চুলে মেখে নিন। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল স্ট্রেট দেখাবে। 

কলা আর মধু
শুধু চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখাই নয়, কলা আর মধুর আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে। কলা আর মধুর প্যাক চুলে এক ধরনের সুরক্ষা তৈরি করে। একটা পাকা কলা ভালোভাবে চটকে নিন, এতে এক টেবিলচামচ মধু মিশিয়ে মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন। পুরো চুলে আর স্ক্যাল্পে লাগিয়ে এক ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ ল র যত ন ব যবহ র কর

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হলগুলোতে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কোনো ধরনের রাজনীতি করা যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ঘোষণায় ছাত্রনেতারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। ইতিমধ্যে এই নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনসহ শিক্ষার্থীদের নানা পর্যায়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি থাকা না–থাকা নিয়ে আলোচনা চলছে।

গত শুক্রবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসিক হলে রাজনীতি বন্ধের ওই ঘোষণা দেয়। তবে গতকাল শনিবার দিনভর এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি। এ বিষয়ে করণীয় ও রূপরেখা ঠিক করতে গতকাল দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হল প্রভোস্টসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বৈঠক করেছে বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে আজ রোববার বিকেলে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন তাঁরা।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গত শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হলের জন্য সংগঠনটির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। এরপর ওই দিন মধ্যরাতে হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। বিভিন্ন হল থেকে কয়েক শ ছাত্র–ছাত্রী বাইরে বেরিয়ে আসেন। রাত একটার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন তাঁরা। শুক্রবার রাত দুইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের প্রায় এক ঘণ্টা আলাপ-আলোচনা হয়। তখন উপাচার্য বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হল প্রভোস্টের নেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিয়ন্ত্রিত থাকবে।’ উপাচার্যের এ বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা ‘না, না’ বলে আপত্তি জানান এবং হলগুলোতে সম্পূর্ণভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করেন। পরে রাত তিনটার দিকে বিক্ষোভের মুখে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ হলগুলোতে ‘প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি’ নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের আশ্বাসে উল্লাস প্রকাশ করে হলে ফিরে যান। প্রক্টরের ওই ঘোষণার আধঘণ্টা পর স্যার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অফিস থেকে এক প্রজ্ঞাপন আসে। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের কমিটিভুক্তরা পদত্যাগ ও মুচলেকা প্রদান সাপেক্ষে হলে অবস্থান করতে পারবেন। অন্যথায় তাদের হল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল ছাত্রলীগ। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দিন পর ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে বিতাড়িত হয় ছাত্রলীগ। সে সময় শিক্ষার্থীরা প্রতিটি হলের হল প্রাধ্যক্ষদের কাছ থেকে আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে—এমন বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর নেয়। মূলত সেই বিজ্ঞপ্তির আলোকে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করায় ক্ষোভ জানায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে শুক্রবার মধ্যরাতে রোকেয়া হলের ছাত্রীরা হলের তালা ভেঙে বেরিয়ে এসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ করেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ