ব্যাটিং উইকেটে এ কেমন ব্যাটিং বাংলাদেশের
Published: 25th, June 2025 GMT
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৭১ ওভারে ২২০/৮ (প্রথম দিন শেষে)
বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থেকেছে দুই ঘণ্টারও বেশি। সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠের উইকেটেও বোলারদের জন্য কিছু নেই। কিন্তু ব্যাটিং উইকেট মানেই তো এই নয় যে বলে বলে চালাতে হবে! এভাবে খেললে আউট হতে উইকেটে কিছু থাকা লাগেও না। বৃষ্টির সময়টা বাদ দিয়ে কলম্বো টেস্টের প্রথম দিনে আজ বাকি যেটুকু খেলা হলো, তাতেই তাই বাংলাদেশের ইনিংস প্রায় শেষ।
টেস্টের আগের দিনই কলম্বোর উইকেটে গলের ব্যাটিং উইকেটের ছায়া দেখতে পেয়েছিল বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা দুই দল। আজ সকালে টসে জিতে স্বাভাবিকভাবেই ব্যাটিং নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। উদ্দেশ্য ছিল শ্রীলঙ্কার সামনে বড় সংগ্রহ দাঁড় করানো। তৃতীয়, চতুর্থ দিনে উইকেট থেকে স্পিনাররা সহায়তা পেতে পারেন; তিন স্পিনারের সুবিধা কাজে লাগাতে পরে বোলিং করতে চাওয়ার সেটাও একটা কারণ নিশ্চয়ই।
উইকেট নিয়ে ধারণাটা ভুল ছিল না। সকালের কিছু সিম মুভমেন্ট বাদ দিলে প্রথম দিনে উইকেট থেকে আসলে কিছুই পাননি শ্রীলঙ্কার বোলাররা। এমন উইকেটেও অকারণ তাড়াহুড়া, অতিরিক্ত ও বাজে শট খেলার মাশুল দিয়ে একের পর এক ফিরে গেছেন ব্যাটসম্যানরা। দিনের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আসিতা ফার্নান্দোর বলে বোল্ড হওয়া নাঈম হাসান ছাড়া আর কেউই ভালো কোনো বলে আউট হননি। পরিণতিতে প্রথম দিনটা শেষ হয়েছে ৮ উইকেটে ২২০ রান তুলে। বাংলাদেশের পাঁচজন ব্যাটসম্যান ভালো শুরু পেয়েছেন, তবু দিন শেষে ফিফটি নেই একটিও। অবশ্য জুটিতেই ‘ফিফটি’ মাত্র একটি, পঞ্চম উইকেটে মুশফিক-লিটনের ৬৭।
২৬ ওভারে ৭১ রান করতে লাঞ্চে যাওয়ার আগেই হারাতে হয় ওপেনার এনামুল হক আর মুমিনুল হকের উইকেট। এনামুলের আউট নিয়ে অবশ্য নতুন করে কিছু বলার নেই। উইকেটে এসে আগের মতোই ধুঁকছিলেন। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আসিতার সামান্য ভেতরে ঢোকা বল ব্যাটের কানায় লাগিয়ে বোল্ড। ১০ বল খেলে নামের পাশে ‘০’। আউট হওয়ার আগেও দুবার স্লিপে ক্যাচের মতো তুলেছিলেন এনামুল।
পরের দিকে শ্রীলঙ্কান ফিল্ডারদের হাত থেকে যেভাবে ক্যাচ পড়েছে তাতে অবশ্য তাঁর দেওয়া সুযোগগুলো হারিয়ে যাচ্ছে আড়ালে। লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম দুজনই দুবার করে জীবন পেয়েও লম্বা করতে পারেননি ইনিংস। লিটন বেঁচেছেন ফাঁকা জায়গায় ক্যাচ তুলে। পরে দুজনকেই আউট করেছেন শ্রীলঙ্কার হয়ে অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা বাঁহাতি স্পিনার সোনাল দিনুশা। ভালো কিছুর সম্ভাবনা জাগিয়েও ৩৫ আর ৩৪ রানে শেষ হয়েছে মুশফিক, লিটনের ইনিংস। সুইপ শট খেলে একবার জীবন পাওয়া মুশফিক আউটও হয়েছেন সুইপ খেলেই মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে।
মুশফিক চলে যাওয়ার পর নাঈমকে নিয়েই এগিয়ে যেতে চেষ্টা করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু তিনিও পারেননি দিন পার করে আসতে। দলের রান ২০০ পেরোনোর আগেই বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে ক্যাচ দেন স্লিপে।
এনামুলের পর লাঞ্চের আগে বিদায় নিয়েছেন মুমিনুলও। ১৭তম ওভারে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার নিচু হয়ে আসা প্রথম বলেই কাভারে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ওপেনার সাদমান ইসলামের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ভরসাই দিচ্ছিলেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। মুমিনুলের ২১ রানের সংগতে ৩৮ রানে পৌঁছেছিল জুটিটি। অবশ্য লাঞ্চের আগে শেষ বলে রান আউট হয়ে যেতে পারতেন সাদমান নিজেও। বেঁচে যান নিশাঙ্কার থ্রো স্টাম্পে না লাগায়।
লাঞ্চের আগে ২ উইকেট, চা বিরতির আগে পড়েছে আরও ৩টি, আর শেষ সেশনে ৭৬ রান আসে ৩ উইকেট হারিয়ে। নাজমুল এবং শুরু থেকে ইতিবাচক ব্যাটিং করা সাদমান আউট হয়েছেন লাঞ্চের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওভারের শেষ বলে।
নাজমুলকে করা বিশ্ব ফার্নান্দোর ভেতরে আসা বলটা স্টাম্পের বাইরে দিয়েই যেত। তবু বিবেচনার ভুলে শেষ মুহূর্তে তাতে ব্যাট ছুঁইয়ে কট বিহাইন্ড হয়ে যান নাজমুল। আর সাদমান স্লিপে ক্যাচ হয়েছেন থারিন্দুর করা উইকেটের অনেক বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ সাত বাউন্ডারিতে করা সাদমানের ৪৬।
সব মিলিয়ে দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডটা রইল অস্বস্তিরই।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব য টসম য ন প রথম দ ন এন ম ল স দম ন উইক ট অবশ য
এছাড়াও পড়ুন:
‘মব’–সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি বাম জোটের
‘মব’ তৈরি করে লালমনিরহাটে বাবা–ছেলেকে মারধর এবং ঢাকায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে হেনস্তার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। সেই সঙ্গে মব–সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে তারা।
বুধবার বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিষদের সভা থেকে এ দাবি জানানো হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেনের (প্রিন্স) সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, ২২ জুন লালমনিরহাটে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে দরিদ্র নরসুন্দর বাবা ও ছেলেকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় মব (উচ্ছৃঙ্খল জনতার বিশৃঙ্খলা) সৃষ্টিকারী লোকজন। একই দিনে আওয়ামী লীগের প্রহসনের নির্বাচনে সহযোগিতাকারী সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে মব তৈরি করে জুতার মালা পরানো হয় ও মারধর করা হয়।
এসব ঘটনার নিন্দা জানিয়ে নেতারা বলেন, আইনের শাসনের বিরোধী ও গণতন্ত্রের পক্ষে হুমকিস্বরূপ এসব মব–সন্ত্রাস বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সভায় আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ মাস অতিবাহিত হলেও অব্যাহত মব–সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা সীমাহীন, যা কোনোক্রমে মেনে নেওয়া যায় না। শুধু সরকার নয়, সেনাপ্রধান মবের বিরুদ্ধে বলার পরও পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে না। ফলে দেশের জনগণ আতঙ্কিত। তাঁরা অভিযোগ করেন, মব–সন্ত্রাসে সরকার নীরব থাকলেও, জনগণের বাক্স্বাধীনতা দমন করছে।
সভায় নেতারা বলেন, বর্তমান সরকার এখতিয়ারবহির্ভূতভাবে বন্দরের টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে লিজ দেওয়া, রাখাইনে করিডর দেওয়াসহ ইত্যাদি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এর প্রতিবাদে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ রোডমার্চের ডাক দিয়েছে। চট্টগ্রামে রোডমার্চের প্রচার চলাকালে ২৩ জুন পুলিশ প্রচারকাজে নেতা–কর্মীদের বাধা দেয়। এ ধরনের আচরণ গণতন্ত্র পরিপন্থী।
সভায় রোডমার্চের প্রচারকাজে বাধা সৃষ্টির তীব্র নিন্দা জানিয়ে ২৭ ও ২৮ জুন ঢাকা-চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চ সফল করার আহ্বান জানানো হয়।