ব্যাটসম্যানরা এলেন, থিতু হলেন, শট খেলতে গেলেন, আউট হয়ে গেলেন—শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বো টেস্টের প্রথম দিনে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের গল্প অনেকটা এমনই। দিনের শেষবেলায় নাঈম হাসানের আউট বাদ দিলে বাকি ব্যাটসম্যানরা একপ্রকার উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছেন।

দিন শেষের সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটসম্যানদের শট খেলতে গিয়ে উইকেট দিয়ে আসা নিয়ে সাদমান ইসলাম বলেন, রানের জন্য শট খেলেছেন তাঁরা। তবে কিছু শট হয়তো ভুল হয়ে গেছে বলে মনে করেন তিনি।

আজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে বাংলাদেশের যেসব ব্যাটসম্যান শট খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সাদমান একজন। সকাল থেকে ভালোই খেলছিলেন। হাফ সেঞ্চুরির কাছাকাছিও পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু হুট করেই অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের এক বল চালিয়ে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন এই বাঁহাতি। উইকেটকিপারের হাত ছুঁয়ে তা যায় স্লিপে দাঁড়ানো ধনঞ্জয়া ডি সিলভার হাতে। ৯৩ বলে ৪৬ রান করে আউট হয়ে যান সাদমান। বাংলাদেশের বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানের আউটের ধরনও কাছাকাছি। রানের জন্য খেলতে গিয়ে আউট।

শট খেলতে গিয়ে আউট হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আজ প্রথম দিনের শেষে সাদমানকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন এমন এক কথা, যা আলাদা করে বলার তেমন দরকার নেই, ‘শটস না খেললে তো রান হবে না।’

সাদমানের কথাটি পুরোপুরি সত্য। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে মূলত তাঁদের বল নির্বাচন আর শট খেলার ধরন নিয়ে। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে গলে দুই ইনিংসে যথাক্রমে ৪৯৫ ও ৬ উইকেটে ২৮৫ রান করেছিল বাংলাদেশ। সাদমানও ওই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৬ রান করেছিলেন।

শট খেলার প্রসঙ্গে সাদমান মনে করিয়ে দিয়েছেন তা–ও, ‘গলেও আমরা ভালোই শট খেলছি, যেগুলো হয়তো বাউন্ডারি এসেছে। কিন্তু আজকে দুর্ভাগ্যবশত সবাই…হয়তো দিনটা আমাদের ছিল না।’

ম্যাচে চাপ অনুভব করে ব্যাটসম্যানরা অমন শট খেলেননি বলেও দাবি সাদমানের, ‘এমন কোনো চাপে তো.

..কিছু কিছু শটস হয়তো ভুল হয়ে গেছে। শটস তো ক্রিকেটেরই একটা পার্ট। এটা না খেললে স্কোরটাও আসবে না, রানটাও স্কোরবোর্ডে বড় হবে না।’

বাংলাদেশ দল প্রথম দিন শেষ করেছে ৮ উইকেট হারিয়ে ২২০ রান করে। বেশ কয়েকজন ব্যাটসম্যান সম্ভাবনা জাগিয়েও ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। সাদমান নিজে আউট হয়েছেন ৪৬ রানে, ৭৫ বল খেলে ৩৫ রান করে মুশফিক, ৫৬ বলে ৩৪ রান করে লিটন আর ৪২ বলে ৩১ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজ।

থিতু হয়ে আউট হয়ে যাওয়া নিয়ে দিন শেষে সাদমান বলেন, ‘কেউ তো আর ইচ্ছা করে আউট হতে চায় না। ব্যাটসম্যানরা প্রত্যেকেই হয়তো সেট হয়ে আউট হয়েছি। হয়তো এটা আমাদের খারাপ দিন ছিল। আমরা পরের ইনিংসে ভালোভাবে কামব্যাক করব।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব য টসম য ন প রথম দ ন শট খ ল স দম ন র ন কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ