জামায়াতের নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটার পুরোনো ভিডিও ভাইরাল, ওসি প্রত্যাহার
Published: 25th, June 2025 GMT
১৩ বছর আগে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটার একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসমত আলীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গত ১৩ জুন তিনি ক্ষেতলাল থানায় যোগ দিয়েছিলেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, জয়পুরহাট শহরে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের মিছিলে লাঠিপেটা করছেন হাসমত আলী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিও ২০১২ সালের ৪ নভেম্বরের। সেদিন দলের নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির দাবিতে জয়পুরহাট শহরে জামায়াতে ইসলামী বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। জয়পুরহাট সদর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) হাসমত আলীর লাঠিপেটায় জামায়াতের জয়পুরহাট জেলা শাখার তৎকালীন সেক্রেটারি নজরুল ইসলামসহ অনেকে আহত হন। সেদিন গুলিতে শিবিরকর্মী বদিউজ্জামান নিহত হন।
ওই ঘটনার ১৩ বছর পর ১৩ জুন হাসমত আলী ক্ষেতলাল থানার ওসি হিসেবে যোগ দেন। পুলিশ সূত্র জানায়, ১৩ বছর আগের ওই লাঠিপেটার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর আজ বুধবার সকালে ওসি হাসমত আলী গোপনে থানা ছেড়ে চলে যান।
ক্ষেতলাল উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি শামীম হোসেন মন্ডল বলেন, তৎকালীন এসআই হাসমত আলী জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বেধড়ক লাঠিপেটা করেছিলেন। সেদিন গুলিতে শিবিরকর্মী বদিউজ্জামান মারা যান।
আজ সন্ধ্যায় ক্ষেতলাল থানার ওসির সরকারি মুঠোফোনে কল করা হলে সেটি ধরেন পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম কামাল। তিনি বলেন, ওসি আজ সকালে সরকারি ফোনসহ তাঁকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে পুলিশ লাইনসে যাওয়ার কথা বলেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব বলেন, ওসি হাসমত আলীকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। জয়পুরহাট সদর থানায় এসআই পদে কর্মরত থাকাকালীন জামায়াতের মিছিলে তাঁর লাঠিপেটার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় এসআইকে মারধর করে পুলিশে দিলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা
খুলনায় সুকান্ত দাস নামের পুলিশের এক উপপরিদর্শককে (এসআই) মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। আজ মঙ্গলবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে নগরের ইস্টার্ন গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে তিনি খানজাহান আলী থানা-পুলিশের হেফাজতে আছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, নগরের তেলিগাতী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীপক কুমার সরকারের ওপর গুলিবর্ষণকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ বেলা আড়াইটার দিকে ফুলবাড়ি গেট বাসস্ট্যান্ডে মানববন্ধনের আয়োজন করে খানজাহান আলী থানা বিএনপি। কর্মসূচি শেষে দলটির কর্মীরা ইস্টার্ন গেট এলাকার একটি হোটেলে দুপুরের খাবার খেতে যান। ঘটনার সময় ওই এলাকা দিয়ে সাদা পোশাকে সিএনজিচালিত তিন চাকার যানে করে যাচ্ছিলেন এসআই সুকান্ত দাস। গাড়িটি যাত্রী ওঠানামা করানোর জন্য ইস্টার্ন গেটের সামনে দাঁড়ালে বিএনপির কয়েকজন কর্মী তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করেন। পরে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা এগিয়ে গিয়ে উত্তেজিত কর্মীদের শান্ত করেন এবং সুকান্ত দাসকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
খুলনা মহানগর পুলিশের খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জনতা এসআই সুকান্তকে মারধর করছে, এমন খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। তখন পরিস্থিতি খুব উত্তপ্ত ছিল। তাঁরা বুঝিয়ে তাঁকে (সুকান্ত) পুলিশের হেফাজতে নিয়ে নেন। পরে চিকিৎসার জন্য তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
খুলনা মহানগর বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আজ ফুলবাড়ী গেট এলাকায় বিএনপির একটা মানববন্ধন কর্মসূচি ছিল। কর্মসূচি শেষের দিকে নেতা–কর্মীরা জানতে পারেন যে ইস্টার্ন গেটে স্থানীয় জনগণ এসআই সুকান্তকে মারধর করছে। ওখানকার মানুষজনও তার নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। সুকান্ত যেহেতু আলোচিত মানুষ, তাই খবর পেয়ে নেতা–কর্মীরা সেখানে যান ও সুকান্তকে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে দেন। বিএনপি বিশ্বাস করে, কেউ অপরাধী হলে প্রচলিত আইনের মাধ্যমে তার বিচার হবে। বিএনপির কেউ তার মারধরের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন।
সুকান্তের বিষয়ে মিজানুর রহমান আরও বলেন, বিগত সরকারের সময় পুলিশ লীগ নামের একটা শব্দ ছিল, বলা যায় খুলনায় পুলিশ লীগের আহ্বায়ক ছিলেন এই সুকান্ত। সুকান্তের অত্যাচার থেকে বিএনপির কোনো নেতা–কর্মী বাদ যাননি। মহানগর বিএনপির সভাপতির বাড়ি ড্রিল মেশিন দিয়ে ভাঙচুর করেছেন। তাঁর ওপর খুলনার মানুষের একটা ক্ষোভ আছেই।