সাতক্ষীরার আধুনিক সদর হাসপাতালটি জনবল সংকটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। সার্জারি, মেডিসিন, গাইনি অ্যানেসথেসিয়া কনসালটেন্ট নেই, নেই কোনো প্যাথলজিস্ট ও রেডিওলোজিস্ট। জনবল সংকটে হাসপাতালটিতে ভোগান্তির সীমা নেই রোগী ও স্বজনদের। 

চিকিৎসক স্বল্পতার কথা স্বীকার করেই সিভিল সার্জন জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার চাহিদাপত্র দিয়েও সমাধান হয়নি।

রোগীদের অভিযোগ, ইনডোরে চিকিৎসক রোগী পরিদর্শনে আসেন ২৪ ঘণ্টায় একবার। আউটডোরেও বেহাল অবস্থা। অনেক রোগীই চিকিৎসা না নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সাতক্ষীরার ২২ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার জন্য প্রতিষ্ঠিত জেলা সদরে গড়ে তোলা হয় আধুনিক সদর হাসপাতাল। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে ১৩টি কনসালটেন্ট পদের বিপরীতে রয়েছে মাত্র ৫ জন জুনিয়র। জরুরি বিভাগে তিনজন মেডিকেল অফিসারের মধ্যে সবকটি পদই শূন্য। নেই কোনো প্যাথলজিস্ট ও রেডিওলোজিস্ট। নেই অ্যানেসথেসিয়া কনসালটেন্ট। 

অথচ ১০০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে ইনডোরে রোগী ভর্তি থাকে প্রায় দ্বিগুণ। আর আউটডোরে প্রতিদিন ৩/৪০০ রোগী স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসেন।


তালা উপজেলার শফিকুল ইসলাম বলেন, “ছেলেকে নিয়ে সদর হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে এসে সারাদিন বসে ছিলাম। ডাক্তার না পেয়ে পরে ফিরে আসি।” 

সদর উপজেলার সাতানি এলাকার জরিনা বেগম, কলারোয়ার সদরে এলাকার রুপবানসহ একাধিক রোগীদের অভিযোগ, ইনডোরে চিকিৎসক রোগী পরিদর্শনে আসেন ২৪ ঘণ্টায় একবার। সারা দিন আর ডাক্তার মেলে না। আউটডোরেও বেহাল অবস্থা। অনেক রোগীই চিকিৎসা না নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, ইনডোরে ঠিকমত চিকিৎসক পাওয়া যায় না। নার্স দিয়েই সেবা পেতে হচ্ছে। আর আউটডোরে রোগীর চাপে অনেককেই ফিরেও যেতে হয়। দীর্ঘদিন সিটিস্ক্যান মেশিন নষ্ট পড়ে রয়েছে। হাসপাতালে গরীব দুঃস্থ মানুষ আসেন কম পয়সায় ডাক্তার দেখাতে। অথচ দামি ওষুধ কিনতে যেতে হয় বাইরে। সিটি-স্ক্যান আল্ট্রাসনোগ্রামসহ দামি দামি টেস্ট করতে হয় বাইরে থেকে। এতে চিকিৎসা খরচের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ভোগান্তিও।

সদর হাসপাতালের নার্সিং সুপার ভাইজার গৌরী রানী মন্ডল বলেন, “১০০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে ইনডোরে রোগী ভর্তি থাকে প্রায় দ্বিগুণ। আর আউটডোরে প্রতিদিন ৩০০/৪০০ রোগী স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসেন। একদিকে রোগীর চাপ অনেক বেশি, অপর দিকে ডাক্তার নেই। সবমিলিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।”

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা শেখ ফয়সাল আহমেদ বলেন, “২৭টি পদের মধ্যে প্রধান ১২টি পদসহ ১৪টি পদই শূন্য রয়েছে। বিশেষ করে কনসালটেন্ট ডাক্তারসহ অ্যানেসথেসিয়া কনসালটেন্ট, প্যাথলজিস্ট ও রেডিওলোজিস্টসহ শূন্য রয়েছে।”

ডাক্তার স্বল্পতার কথা স্বীকার করেই সিভিল সার্জন ডা.

আব্দুস সালাম জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার চাহিদাপত্র দিয়েও সমাধান হয়নি।

তিনি বলেন, “বিশেষ করে সার্জারি কনসালটেন্ট, মেডিসিন ও গাইনি কনসালটেন্টসহ অ্যানেসথেসিয়া কনসাল্টেন্ট ও প্যাথলজিস্ট ও রেডিওলোজিস্ট না থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।”

ঢাকা/শাহীন/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ক ৎসক আউটড র কনস ল ইনড র

এছাড়াও পড়ুন:

ভোগান্তির অপর নাম সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল

সাতক্ষীরার আধুনিক সদর হাসপাতালটি জনবল সংকটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। সার্জারি, মেডিসিন, গাইনি অ্যানেসথেসিয়া কনসালটেন্ট নেই, নেই কোনো প্যাথলজিস্ট ও রেডিওলোজিস্ট। জনবল সংকটে হাসপাতালটিতে ভোগান্তির সীমা নেই রোগী ও স্বজনদের। 

চিকিৎসক স্বল্পতার কথা স্বীকার করেই সিভিল সার্জন জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার চাহিদাপত্র দিয়েও সমাধান হয়নি।

রোগীদের অভিযোগ, ইনডোরে চিকিৎসক রোগী পরিদর্শনে আসেন ২৪ ঘণ্টায় একবার। আউটডোরেও বেহাল অবস্থা। অনেক রোগীই চিকিৎসা না নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সাতক্ষীরার ২২ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার জন্য প্রতিষ্ঠিত জেলা সদরে গড়ে তোলা হয় আধুনিক সদর হাসপাতাল। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে ১৩টি কনসালটেন্ট পদের বিপরীতে রয়েছে মাত্র ৫ জন জুনিয়র। জরুরি বিভাগে তিনজন মেডিকেল অফিসারের মধ্যে সবকটি পদই শূন্য। নেই কোনো প্যাথলজিস্ট ও রেডিওলোজিস্ট। নেই অ্যানেসথেসিয়া কনসালটেন্ট। 

অথচ ১০০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে ইনডোরে রোগী ভর্তি থাকে প্রায় দ্বিগুণ। আর আউটডোরে প্রতিদিন ৩/৪০০ রোগী স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসেন।


তালা উপজেলার শফিকুল ইসলাম বলেন, “ছেলেকে নিয়ে সদর হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে এসে সারাদিন বসে ছিলাম। ডাক্তার না পেয়ে পরে ফিরে আসি।” 

সদর উপজেলার সাতানি এলাকার জরিনা বেগম, কলারোয়ার সদরে এলাকার রুপবানসহ একাধিক রোগীদের অভিযোগ, ইনডোরে চিকিৎসক রোগী পরিদর্শনে আসেন ২৪ ঘণ্টায় একবার। সারা দিন আর ডাক্তার মেলে না। আউটডোরেও বেহাল অবস্থা। অনেক রোগীই চিকিৎসা না নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, ইনডোরে ঠিকমত চিকিৎসক পাওয়া যায় না। নার্স দিয়েই সেবা পেতে হচ্ছে। আর আউটডোরে রোগীর চাপে অনেককেই ফিরেও যেতে হয়। দীর্ঘদিন সিটিস্ক্যান মেশিন নষ্ট পড়ে রয়েছে। হাসপাতালে গরীব দুঃস্থ মানুষ আসেন কম পয়সায় ডাক্তার দেখাতে। অথচ দামি ওষুধ কিনতে যেতে হয় বাইরে। সিটি-স্ক্যান আল্ট্রাসনোগ্রামসহ দামি দামি টেস্ট করতে হয় বাইরে থেকে। এতে চিকিৎসা খরচের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ভোগান্তিও।

সদর হাসপাতালের নার্সিং সুপার ভাইজার গৌরী রানী মন্ডল বলেন, “১০০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে ইনডোরে রোগী ভর্তি থাকে প্রায় দ্বিগুণ। আর আউটডোরে প্রতিদিন ৩০০/৪০০ রোগী স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসেন। একদিকে রোগীর চাপ অনেক বেশি, অপর দিকে ডাক্তার নেই। সবমিলিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।”

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা শেখ ফয়সাল আহমেদ বলেন, “২৭টি পদের মধ্যে প্রধান ১২টি পদসহ ১৪টি পদই শূন্য রয়েছে। বিশেষ করে কনসালটেন্ট ডাক্তারসহ অ্যানেসথেসিয়া কনসালটেন্ট, প্যাথলজিস্ট ও রেডিওলোজিস্টসহ শূন্য রয়েছে।”

ডাক্তার স্বল্পতার কথা স্বীকার করেই সিভিল সার্জন ডা. আব্দুস সালাম জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার চাহিদাপত্র দিয়েও সমাধান হয়নি।

তিনি বলেন, “বিশেষ করে সার্জারি কনসালটেন্ট, মেডিসিন ও গাইনি কনসালটেন্টসহ অ্যানেসথেসিয়া কনসাল্টেন্ট ও প্যাথলজিস্ট ও রেডিওলোজিস্ট না থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।”

ঢাকা/শাহীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ