চা-শ্রমিক পরিবারের মেয়ে ইতি গৌড় (১৯) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তিনি ফিন্যান্স বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এর আগে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ বিভাগেও সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার কথা ইতির।

ইতিদের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল চা-বাগানের ডিপো লাইনে। ওই বাগান থেকে এর আগে কেউ কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাননি। তিন বোনের মধ্যে ইতি সবচেয়ে ছোট।

গত মঙ্গলবার বিকেলে ইতিদের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। বাগানের রাস্তার পাশে ছোট একটি টিলার ওপর তাঁদের ঘর। সেখানে ইতি, তাঁর বাবা শংকর গৌড় ও মাসি ষষ্ঠী গৌড় থাকেন।

ইতির মা সুমিত্রা গৌড় ছিলেন চা-শ্রমিক। প্রায় দুই বছর আগে অসুস্থ হয়ে মারা যান। বাবা শংকর গৌড় বাপেক্সের স্থানীয় গ্যাসক্ষেত্রে নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করতেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত রোগে আক্রান্ত হলে ২০১৮ সালে চাকরি ছাড়তে হয় তাঁকে। বর্তমানে তিনিও অসুস্থ।

প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন বরমচাল মিশন স্কুল থেকে। এরপর ভর্তি হন বরমচাল উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজে। ২০২২ সালে এসএসসিতে জিপিএ ৪ দশমিক ৬৭ এবং ২০২৪ সালে ইউছুফ-গণি কলেজ থেকে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে এইচএসসিতে জিপিএ ৪ দশমিক ৮৩ পান।

ইতি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন আগে থেকেই ছিল। এইচএসসির পর প্রস্তুতি শুরু করি। ঢাকা, শাহজালাল, জাহাঙ্গীরনগর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিই। জগন্নাথে ভালো হয়নি, জাহাঙ্গীরনগরে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকায় হতাশ হয়ে পড়ি। পরে শাহজালালে বিবিএতে চান্স পাই। দেরি না করে ভর্তি হয়ে যাই। এর কয়েক দিন পর ঢাবির ফল আসে, ফিন্যান্স বিভাগে টিকি। তখন সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না। পরিচিতজনেরা ঢাবিতে ভর্তি হতে বলেন, তাই শাহজালাল থেকে ভর্তি বাতিল করে ঢাবিতে যাচ্ছি।’

ইতি গৌড়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভর ত র স য গ প শ হজ ল ল

এছাড়াও পড়ুন:

এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া হলো না উল্লাপাড়ার তিন শিক্ষার্থীর

স্কুলের ল্যাব সহকারীর ‌‘প্রতারণার’ কারণে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় চলতি বছরের এইচএসসির বিএমটি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি তিন পরীক্ষার্থী। ঘটনাটি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইল্ট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবসা ব্যবস্থাপনা (বিএম) শাখার। বৃহস্পতিবার থেকে এই পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলো, উপজেলার পূর্ব দেলুয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে কাওসার আলী, একই গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে মো. রাজু আহমেদ, হাবিবগঞ্জ গ্রামের শাহদৎ হোসেনের ছেলে সাকিবুল হাসান। তারা সবাই ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হিউম্যান রিসোর্স ট্রেডের শিক্ষার্থী। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী এটি ছিল তাদের প্রথম বর্ষ সমাপনী পরীক্ষা। 

এ তিন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, তারা যথাসময়ে উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইল্ট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএম শাখায় ভর্তি হন। প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী তারা অভ্যন্তরীণ সকল পরীক্ষাও দিয়েছেন। প্রথম বর্ষ সমাপনীর বোর্ড পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য তারা ২৬০০ টাকা করে এই প্রতিষ্ঠানের ল্যাব সহকারী মো; রাজু আহমেদের কাছে জমা দেন। কিন্তু রাজু ফরম পূরণ না করে টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছেন। বুধবার পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে গেলে তারা জানতে পারেন, তাদের ফরম পূরণ হয়নি। আসেনি প্রবেশপত্র। 

প্রবেশপত্র কেন আসেনি জানতে চাইলে তাদের আশ্বস্ত করে রাজু আহমেদ বলেন, পরীক্ষার আগে যথাসময়ে তাদের প্রবেশপত্র সরবরাহ করা হবে। অবশেষে পরীক্ষার দিন গিয়ে ভুক্তভোগীরা জানতে পারেন, তাদের ফরম পূরণই হয়নি। রাজু আহমেদ পালাতক। অভিযোগকারীরা জানান, তারা এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মীর আব্দুল হান্নান ও স্কুলের সভাপতি উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাতের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে এই প্রতারণা এবং তাদের শিক্ষা জীবন থেকে একটি বছর ঝরে যাওয়ার জন্য রাজু আহমেদের শাস্তির দাবি জানান। 

এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মীর আব্দুল হান্নান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি তাঁকে আগে জানানো হয়নি। বর্তমানে রাজু আহমেদ পলাতক রয়েছেন। প্রধান শিক্ষক আরও জানান, তার ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদ এর আগেও স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করিয়ে দেবার কথা বলে অনেক অভিভাবকের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু ভর্তি করে দিতে পারেননি। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় গত বছর তার বার্ষিক প্রবৃদ্ধি স্থগিত করা হয়। এ বছর আবারও দুর্নীতি ও প্রতারণার দায়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্কুলের সভাপতিকে অনুরোধ করেছেন। 

উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত জানান, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি দ্রুত বিষয়টির তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছেন। প্রথমিকভাবে ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নাটোরে পরীক্ষা কেন্দ্রে ছাত্রদল নেতা, সচিবকে শোকজ
  • জয়পুরহাটে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে ডেকে নিয়ে হত্যা
  • প্রশ্নফাঁসের কোনো সুযোগ অসাধু চক্র পাবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা
  • জাল প্রবেশপত্র: সিলেটে ছাত্রীর ১ বছর কারাদণ্ড
  • এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারল না উল্লাপাড়ার তিন শিক্ষার্থী
  • এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া হলো না উল্লাপাড়ার তিন শিক্ষার্থীর
  • ছাত্রত্ব ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট জাবি ছাত্রদল আহ্বায়কের
  • জাহাঙ্গীরনগরের হল থেকে পরিত্যক্ত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার
  • চট্টগ্রামে আ.লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটার সময় গ্রেপ্তার ২