যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপ করা বাড়তি ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্কের ঘোষিত হার কমতে পারে। এ জন্য দ্বিপক্ষীয় পর্যায়ে দর-কষাকষি চলছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে ২৯ জুন দেশটির সঙ্গে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশের বৈঠকের পর।

তার আগেই অবশ্য বাংলাদেশ নিজে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াচ্ছে। পাল্টা শুল্কের হার যাতে যুক্তরাষ্ট্র কমায়, সে জন্য সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পর্যায়ে বেশি দামে তিন লাখ টন গম আমদানির প্রক্রিয়া চলছে। সচিবালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার খাদ্যসচিব মাসুদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জিটুজি–বিষয়ক কমিটির বৈঠকে প্রাথমিকভাবে এমন সিদ্ধান্ত হয়।

এ ছাড়া বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানি থেকে উড়োজাহাজ কেনার পদক্ষেপ নিচ্ছে। দেশটি থেকে তুলা আমদানির প্রক্রিয়াও সহজ করছে বাংলাদেশ। খাদ্য মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্রগুলো জানায়, ২৯ জুন অনুষ্ঠেয় আলোচনা ফলপ্রসূ হলে ঠিক হতে পারে পাল্টা শুল্কের নতুন হার।

বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে। গত ৩ এপ্রিল হঠাৎ ট্রাম্প প্রশাসন পাল্টা অর্থাৎ বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। এতে মোট শুল্ক দাঁড়ায় ৫২ শতাংশ। শুল্ক আরোপের কার্যকরের তারিখ ছিল গত ৯ এপ্রিল। তবে ওই দিনই যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের মতো বাংলাদেশের ওপর আরোপ করা নতুন শুল্ক হারের ঘোষণাও তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখে। স্থগিতের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৯ জুলাই।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ সাধারণত রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে গম আমদানি করে। এ দুই দেশের গম তুলনামূলক সস্তা। তা সত্ত্বেও টনপ্রতি ২০ থেকে ২৫ মার্কিন ডলার বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশটি থেকে গম আমদানিতে জাহাজ ভাড়াও বেশি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের গমের খাদ্যমান বেশি।

চলছে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়ার মধ্যে এমন কিছু বিষয় রয়েছে, যা দেশটির আইনে প্রযোজ্য হলেও বাংলাদেশের আইনে প্রযোজ্য নয়। তাই এসব বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে চিঠি চালাচালি হয়েছে। বাংলাদেশ সময় গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় যুক্তরাষ্ট্রে একটি বৈঠক হয়, যাতে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। এ বৈঠকের ফলাফল গতকাল তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, পাল্টা শুল্কহার কমানোর বিষয়ে যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করছে, তাদের মধ্যে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে। কোনো কোনো দেশ আলোচনার এক পর্যায়ে এসে থেমে গেছে। যেমন ইন্দোনেশিয়া। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা অবশ্য আশা করছেন, পাল্টা শুল্ক আরোপের স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে দিতে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ইউএস সেনসাস ব্যুরোর হিসাবে, এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি ২৫০ কোটি ডলার বেড়েছে। তার বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানি বেড়েছে ১২৫ কোটি ডলারের মতো। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৮৩৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হয়েছে ২২১ কোটি ডলারের পণ্য। এক বছরে বাণিজ্য-ঘাটতি ৬১৫ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশের পক্ষে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, যেগুলো যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ইতিবাচক। তবে ৯ জুলাইয়ের পর কী হবে, তা জানতে আমাদের ওই দিন পর্যন্তই অপেক্ষা করতে হবে।’

আরও যেসব পদক্ষেপ

পাল্টা শুল্কারোপের পর সেই সিদ্ধান্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়ে গত ৭ এপ্রিল ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। চিঠিতে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশই যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর সবচেয়ে কম হারে শুল্ক আরোপ করে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য ও স্ক্র্যাপের ওপর শূন্য শুল্ক অব্যাহত রাখা হবে। গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর, চিকিৎসাসামগ্রীর মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।

একই দিন সকালে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এবং সন্ধ্যায় আলাদা চিঠি পাঠান যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) রাষ্ট্রদূত জেমিসন গ্রিয়ারের কাছে। বাণিজ্য উপদেষ্টার ওই চিঠিতে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের শুল্ক তালিকায় বর্তমানে ১৯০টি পণ্যে কোনো শুল্ক নেই। আরও ১০০টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সব সময় গঠনমূলক সংলাপ ও সহযোগিতায় বিশ্বাসী এবং বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিতে যদি কোনো বাধা থাকে, তা দূর করতেও প্রস্তুত।

ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করার পরও উভয় দেশের মধ্যে কয়েক দফা সরাসরি ও অনলাইন বৈঠক, চিঠি চালাচালি চলতে থাকে। ইউএসটিআরের সঙ্গে গত ২১ এপ্রিল ওয়াশিংটনে বৈঠক করে বাংলাদেশ। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ছয়টি বিষয় স্পষ্ট করে জানতে চাওয়া হয়। ৪ জুন চিঠি দিয়ে এসব বিষয় দেশটিকে স্পষ্ট করে তা জানানো হয়। এরপর ১২ জুন একটি পাল্টা শুল্ক চুক্তির খসড়া করা হয় এবং ১৭ জুন সেটি নিয়ে অনলাইন বৈঠক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘খসড়াটি গোপনীয় এবং কোথাও প্রকাশযোগ্য নয়। আমরা তাই নিজেরাই এ নিয়ে দর-কষাকষি করছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র থ ক য ক তর ষ ট র র শ ল ক আর প গম আমদ ন উপদ ষ ট আমদ ন র পর য য় জন য স র জন য র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ভাঙ্গা–বরিশাল মহাসড়কের ৪৯ কিলোমিটার বেহাল, ‘ভরসা’ জোড়াতালির মেরামত

বরিশাল থেকে সপ্তাহে দুবার ঢাকায় যাতায়াত করেন নাঈম হাওলাদার। ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে রোবোটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি করছেন। নাঈম হাওলাদার বলেন, বরিশাল থেকে বাসে এত ঝাঁকুনি লাগে যে শরীর ব্যথা হয়ে যায়। অনেক যাত্রী বমিও করে ফেলেন। মন দুরুদুরু করে, কখন কী হয়ে যায়! 

বরিশাল থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত সড়কের অবস্থা এমনই বেহাল। সড়কের পিচ, পাথর সরে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সড়কটিকে সাময়িকভাবে চলাচলের উপযোগী করতে ইট ফেলে খানাখন্দ ভরাট করে ওপরে বালু ফেলা হচ্ছে। এরপর দেওয়া হচ্ছে পিচের প্রলেপ। 

তবে যাত্রী ও যানবাহনের চালক–সহকারীরা বলছেন, প্রতিবছর পাঁচ থেকে সাতবার সড়ক মেরামত করা হয়। কিন্তু মাস ঘুরতেই আগের অবস্থায় ফিরে যায়। সাময়িক সংস্কার অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়। 

কুয়াকাটা-ঢাকা পথের একটি বাসের চালক কেরামত আলী বলেন, ‘সড়কের যে অবস্থা, তাতে বাস চালাতে অনেক ঝুঁকি। যাত্রীরা আতঙ্কে থাকেন। আমাদের সময়ও বেশি লাগে। যেভাবে মেরামত করা হচ্ছে, তাতে খুব বেশি দিন টিকবে বলে মনে হয় না। কারণ, এ রকম সংস্কার আগেও বহুবার হয়েছে।’

বরিশাল থেকে ভাঙ্গার দূরত্ব ৯৭ কিলোমিটার। মাত্র ২৪ ফুট প্রশস্ত সড়কটিতে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ থাকে। এ ছাড়া জুলাই মাসে এ অঞ্চলে ভারী বর্ষণ হয়েছে। ফলে এ অংশের প্রায় পুরোটাতেই বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে বরিশাল থেকে গৌরনদীর ভুরঘাটা পর্যন্ত ৪৯ কিলোমিটার সড়ক বরিশাল সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের আওতায়, বাকিটা ফরিদপুর সওজের অধীনে।

যেভাবে মেরামত করা হচ্ছে, তাতে খুব বেশি দিন টিকবে বলে মনে হয় না। কারণ, এ রকম সংস্কার আগেও বহুবার হয়েছে।কেরামত আলী, বাসচালক

গতকাল সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মহাসড়কের ওই অংশ ঘুরে দেখা যায়, বড় বড় খানাখন্দ ও গর্তে বালু, ইটের সুরকি ও পিচ ফেলে মেরামতের কাজ চলছে। বাবুগঞ্জ উপজেলার শিকারপুর সেতুর পূর্ব প্রান্তে একদল শ্রমিক মেরামতের কাজ করছেন। কয়েক কিলোমিটার পর গৌরনদীর বার্থী এলাকায়ও একই দৃশ্য দেখা গেল।

বার্থী এলাকায় সওজের একটি ট্রাকের চালক মো. শাহজাহান সরদার বলেন, ‘বৃষ্টিতে রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেছে। আগে ইট দিয়ে গর্ত ভরাট করতাম, এখন তার ওপর পিচ ও বালু দিয়ে প্রলেপ দিচ্ছি, যাতে যান চলাচলে ব্যাঘাত কমে এবং যাত্রীদের কষ্ট কিছুটা লাঘব হয়।’

পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা সাগর হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘দেড়-দুই মাস আগে একইভাবে রাস্তা মেরামত হয়েছিল, কিন্তু টেকেনি। এতে শুধু অর্থের অপচয় হয়।’

একই কথা বললেন ভুরঘাটাগামী একটি মাহেন্দ্রর চালক আবদুল বাছেদ।

বার্থী থেকে ভুরঘাটা পর্যন্ত আরও একটি ট্রাকে মেরামতের কাজ চলছিল খাঞ্জাপুর এলাকায়। কাজ তদারক করছিলেন সওজের কার্য সহকারী (ওয়ার্ক অ্যাসিস্ট্যান্ট) মো. জাকির হোসেন সরদার। তিনি বলেন, সাময়িক ভোগান্তি কমাতে জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের আওতায় কাজ চলছে।

সওজ সূত্র জানায়, সত্তরের দশকে বরিশাল–ভাঙ্গা সড়ক ছিল ১২ ফুট প্রশস্ত। এখন বেড়ে হয়েছে মাত্র ২৪ ফুট। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সড়কটিতে যানবাহন চলাচল বেড়েছে তিন গুণ। এত চাপ নিতে পারছে না সড়কটি।

ছয় লেন মহাসড়ক নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে উল্লেখ করে বরিশাল সওজের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মাসুদ খান বলেন, তহবিল পাওয়া গেলে দ্রুত ছয় লেনের কাজ শুরু করা যাবে। আপাতত জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে যাত্রীদের ভোগান্তি কমানোর চেষ্টা করছেন।

পটুয়াখালী–কুয়াকাটা মহাসড়কও বেহাল

টানা বর্ষণে বরিশাল–কুয়াকাটা মহাসড়কের প্রায় ৭১ কিলোমিটারজুড়ে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে। একাধিক বাঁকে দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

বাস মালিক সমিতি ও সওজ সূত্র জানায়, এই সড়কে প্রতিদিন অন্তত দুই হাজার যান চলাচল করে। পদ্মা সেতু চালুর পর কুয়াকাটাগামী যানবাহনের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু বেহাল সড়কের কারণে প্রতিদিনই দুর্ভোগ বাড়ছে।

মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, একটু পরপর গর্ত। বিশেষ করে আমতলী চৌরাস্তা, মানিকঝুড়ি, শাখারিয়া, সাহেববাড়ি, আমড়াগাছিয়া, পাটুখালী, বান্দ্রা ও পখিয়া এলাকায় গর্ত বেশি। জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের আওতায় ইট ফেলে সাময়িকভাবে ভরাটের চেষ্টা চলছে।

পটুয়াখালী সওজের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাসুদ করিম বলেন, ‘আমরা জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে খানাখন্দ মেরামতের কাজ করছি। আশা করি, এতে ভোগান্তি লাঘব হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ