অপারেশন থিয়েটারে অক্সিজেন সিলিন্ডারে লিকেজ, রোগী ও স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক
Published: 27th, June 2025 GMT
চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার এলাকায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে ওই এলাকার চানমারি সড়কে মমতা নগর মাতৃসদন ক্লিনিকের নিচতলায় অপারেশন থিয়েটারে এ ঘটনা ঘটে। তবে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি আগুন নয়, অক্সিজেন সিলিন্ডার লিকেজ হয়েছিল সেখানে।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষ জানায়, ক্লিনিকে আগুন লাগলে স্থানীয় লোকজন ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। বেলা ৩টা ১০ মিনিটে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের আগ্রাবাদ স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। বিকেল ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অক্সিজেন সিলিন্ডার লিকেজ থেকে আগুনের সূত্রপাত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা তিনটার দিকে মমতা নগর মাতৃসদন ক্লিনিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। বেলা ৩টা ১০ মিনিটে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের আগ্রাবাদ স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। তারা গিয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডারটি বন্ধ করে আশপাশ থেকে রোগী ও স্বজনদের সরিয়ে দেয়।
তবে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের দাবি, আগুন লাগেনি। মূলত অপারেশন থিয়েটারে অক্সিজেন সিলিন্ডার লিকেজ হয়েছে। সিলিন্ডার লিকেজের ফলে শব্দ হয় এবং ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। ধোঁয়ার কারণে আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের খবরে আশপাশের মানুষজন ছুটে আসেন। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরও পড়ুনচট্টগ্রামে ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটারে আগুন২ ঘণ্টা আগেক্লিনিকের বাইরে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটারটিতে বেলা ২টার দিকে একটি অপারেশন শেষ হয়। ৩টার দিকে ওই কক্ষ থেকে মৃদু বিস্ফোরণের শব্দ হয়। স্থানীয়রা মিলে এ সময় সেখানে বালু-পানি ছিটান। তবে সেখানে আগুন ছিল না। অক্সিজেন সিলিন্ডারে লিকেজে শব্দ হয়েছে বলে তাঁদের দাবি।
সরেজমিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট দুটিকে ক্লিনিকের সামনে থেকে চলে যেতে দেখা যায়। এর আগে নিরাপত্তা বিবেচনায় ক্লিনিকে থাকা রোগীদের অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। এ ছাড়া ক্লিনিকের বাইরে স্থানীয়দেরও ক্লিনিকের ফটক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় ক্লিনিক ভবনে প্রবেশের গেটটি বন্ধ ছিল।
ক্লিনিক প্রাঙ্গণে থাকা মোহাম্মদ হানিফ জানান, তিনি স্থানীয় বাসিন্দা। আগুন লাগার খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে আসেন। রোগীদের অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়েছেন তিনি। তিনি এসে কেবল ধোঁয়া দেখেছেন। তবে বড় দুর্ঘটনা হওয়ার আগেই সেখানে ফায়ার সার্ভিস এসে পৌঁছায়।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, অক্সিজেন সিলিন্ডার লিকেজ থেকে আগুন লেগে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। হতাহতের ঘটনা নেই। ক্ষয়ক্ষতি তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আগ ন ল গ খবর প য় ইউন ট
এছাড়াও পড়ুন:
নিহত শিশুর গোসলের সময় গলায় দাগ দেখে পুলিশে ফোন স্বজনদের, সৎমা আটক
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়ন থেকে তিন বছর বয়সী এক কন্যাশিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত শিশুর নাম সুমাইয়া আক্তার। স্থানীয় লোকজনের তথ্যের ভিত্তিতে আজ রোববার বেলা পৌনে দুইটার দিকে ইউনিয়নের খানপুর গ্রামের চাপরাশি বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ নিহত শিশুর সৎমা শিউলী আক্তারকে আটক করেছে।
নিহত শিশু সুমাইয়া আক্তারের চাচা সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই ফয়সাল আহমেদ সৌদিপ্রবাসী। দুই বছর আগে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ হয়। পরে বিয়ে করেন শিউলী আক্তারকে (২৪)। সুমাইয়া তাঁর ভাইয়ের প্রথম স্ত্রীর মেয়ে। ফয়সাল বিদেশে যাওয়ার সময় বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পৌরসভার করিমপুর এলাকায় একটি বাসা ভাড়া করে তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে রেখে যান। তাঁরা সেখানেই থাকতেন।
সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, তাঁর ভাইয়ের দ্বিতীয় স্ত্রী শিউলীর বক্তব্য অনুযায়ী কয়েক দিন ধরে তাঁর ভাতিজি সুমাইয়া অসুস্থ ছিল। গতকাল দুপুরে তাকে ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে শিউলী আক্তারকে ঘুম ভাঙাতে গিয়ে দেখেন তার কোনো সাড়াশব্দ নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানান প্রায় ৩০ মিনিট আগে শিশুটি মারা গেছে।
সাইফুল ইসলাম জানান, ভাতিজির মৃত্যুর পর লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। আজ সকালে লাশ গোসল করানোর সময় সেখানে উপস্থিত স্বজনেরা সুমাইয়ার গলায় দাগ দেখতে পান। পরে তারা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে বেগমগঞ্জ থানা থেকে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী বেগমগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় মৃতদেহের ডান কানের গোড়ায় কালো দাগ দেখেছেন। এ ছাড়া শিশুটির শরীরের অন্য কোথাও আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। উদ্ধার করা লাশ তাঁরা ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটিকে হত্যা বলে মনে হচ্ছে। শিশুটিকে গলাটিপে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির সৎমা শিউলী আক্তারকে আটক করা হয়েছে। শিশুর স্বজনদের অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।