‘মার্চ টু এনবিআর’ শুরু, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক অবস্থান
Published: 28th, June 2025 GMT
সব পক্ষের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে রাজস্ব খাতের সংস্কার ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে আজ শনিবার ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি শুরু করেছেন আন্দোলনরত কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। সকাল থেকে এনবিআরের ঢাকা কার্যালয়ের কর্মকর্তাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কর্মকর্তারা জড়ো হয়েছেন।
এদিকে এনবিআরের মূল ফটক বন্ধ করে দিয়ে ভেতরে অবস্থান নিয়েছে বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা। এনবিআর ভবনের আশপাশে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এনবিআরের সামনে প্রস্তুত রাখা হয়েছে পুলিশের জল কামান ও রায়ট কার।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, এনবিআর চেয়ারম্যান সমস্যার সমাধান না করে মিথ্যাচার করছেন। এ পরিস্থিতিতে আজ থেকে সারা দেশের শুল্ক কর কার্যালয়েও শুরু হয়েছে লাগাতার শাটডাউন কর্মসূচি।
আন্দোলনরত এনবিআরের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা কাউকে ভেতরে যেতে দিচ্ছে না, আবার বেরও হতে দিচ্ছে না।
এদিকে গতকাল শুক্রবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংস্কার নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চলমান অচলাবস্থা নিরসনে অর্থ মন্ত্রণালয় সভা করেছে। এতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ঘোষিত কর্মসূচি প্রত্যাহারের নির্দেশনা, কর্মকর্তাদের বদলি আদেশ পুনর্বিবেচনা ও আগামী মঙ্গলবার তিন পক্ষের মধ্যে আলোচনা হবে—এই তিনটি সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভাটি হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। সভায় সরকারের পক্ষ থেকে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও আমদানি-রপ্তানিসহ বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ঘোষিত কমপ্লিট শাটডাউন ও মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি প্রত্যাহার করে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিজ নিজ দপ্তরে অবস্থান করে কাজে মনোনিবেশ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নির্দেশনা না মেনে মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি পালন করছেন।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে সারা দেশের শুল্ক-কর কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঢাকামুখী ‘মার্চ টু এনবিআর’ শীর্ষক কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতারা।
এনবিআর ভবনের সামনে আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক অবস্থান.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র কর মকর ত অবস থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশের রপ্তানিতে তেমন প্রভাব পড়বে না: শেখ বশিরউদ্দীন
ভারত আরও চারটি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও বাংলাদেশের রপ্তানিতে তেমন নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হলেও সাড়া মেলেনি।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে, এমন কোনো বিষয়ে ছাড় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়নি। দুই দেশের মধ্যে খাদ্য ও কৃষিপণ্যের আমদানি বাড়িয়ে বাণিজ্য ঘাটতি মেটানো হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে দর–কষাকষি চালিয়ে যাবে বাংলাদেশ। সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, সে বিষয়ে ১৫ শতাংশের ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ।
আরেক প্রশ্নের জবাবে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমস্যা থাকলেও এতটা অস্থিতিশীল নয় যে ব্যবসা–বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে। তাই রপ্তানির যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে তাতে সমস্যা হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভারতের নতুন বিধিনিষেধের আওতায় সে দেশের ব্যবসায়ীরা এখন বাংলাদেশ থেকে চার ধরনের পাটের পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করতে পারবেন না। শুধু দেশটির মুম্বাইয়ের নভসেবা বন্দর দিয়ে এসব পণ্য আমদানির সুযোগ আছে। এমন বিধিনিষেধ দিয়ে গতকাল সোমবার ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য মহাপরিচালকের কার্যালয় (ডিজিএফটি) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে গত কয়েক মাসে কয়েক দফায় অশুল্ক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত। এর আগে গত ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ দেয় দেশটি। তার আগে ৯ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুবিধা প্রত্যাহার করে দেশটি।
এদিকে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা ভারত বাতিল করার এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করেছে। এর আগে বেনাপোল, ভোমরা, সোনা মসজিদ, বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ ছিল।