শেষ বলে দরকার ৬ রান। ব্যাটিংয়ে শেমরন হেটমায়ার, বোলিংয়ে কাইরন পোলার্ড। এমন সমীকরণে কাজটা কত কঠিন, তা কারও অজানা নয়। কিন্তু এই কঠিন কাজটাই করেছেন হেটমায়ার।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ব্যাটসম্যান পোলার্ডের মিডল স্টাম্প বরাবর করা বলটিতে হাঁটু গেড়ে স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মেরে দেন। তাতে মুম্বাই নিউইয়র্কের বিপক্ষে সিয়াটল অরকাস জিতেছে ৩ উইকেটে। এর মধ্য দিয়ে মুম্বাইয়ের করা ২৩৭ রান টপকে মেজর লিগ ক্রিকেটে রান তাড়ার নতুন রেকর্ডও গড়েছে দলটি।

এর আগে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড ছিল ওয়াশিংটন ফ্রিডমের। টেক্সাস সুপার কিংসের বিপক্ষে ২২১ রান তাড়া করেছিল তারা। এই ঘটনার দেখা মিলেছিল চলতি মাসের ২২ জুন। গতকালও নতুন রেকর্ড হয়েছিল এই টুর্নামেন্টে। কোনো ফিফটি ছাড়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড গড়েছিল ওয়াশিংটন ফ্রিডম (২১৪ রান।)

টানা ১০ ম্যাচ হারের পর প্রথম জয় পেল সিয়াটল অরকাস। টুর্নামেন্টে এটি তাদের প্রথম জয়।

শুধু এক বলে দলকে ছক্কা মেরে হেটমায়ার জিতিয়েছেন তা নয়। তিনি খেলেছেন অপরাজিত ৪০ বলে ৯৭ রানের ইনিংস। জয়ের শেষ ২ ওভারে ৩২ রান দরকার ছিল সিয়াটলের। এই ১২ বলের মধ্যে হেটমায়ার খেলেন ৮টি বল। এর মধ্যে ছক্কা মারেন ৪টিতে। মানে একাই দলকে জিতিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুনএভাবেও ২১৪ রান তাড়া করে জেতা যায়, টি–টোয়েন্টিতে যে রেকর্ড হলো২৭ জুন ২০২৫

এমন একটি ম্যাচ সিয়াটল ও হেটমায়ারের জন্য দরকার ছিল। কারণ, সিয়াটল দলটি এই ম্যাচ জয়ের আগে হেরেছে টানা ১০ ম্যাচে। এর মধ্যে এবারের আসরে হেরেছে টানা ৫টিতে। হেটমায়ার নিজেও ছন্দে ছিলেন না। আইপিএলে ১৪ ম্যাচে রান করেছিলেন ২৩৯। যেখানে তাঁর সতীর্থ নিকোলাস পুরান করেন ৫২৪ রান। এর আয়ারল্যান্ড সিরিজেও তিনি রান পাননি। তাতে অনেকেই তাঁকে ওভাররেটেডও বলেছিলেন। সেই ক্ষোভ যেন ঝেড়েছেন এই ম্যাচে। এবারের মেজর লিগ ক্রিকেটে এটি তাঁর প্রথম ফিফটি।

ম্যাচ শেষে নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে হেটমায়ার বলেছেন, ‘এটা আমার সেরা ইনিংসগুলোর একটি। কারণ, আমরা তখন একেবারে চাপের মধ্যে ছিলাম, জয়ের বিকল্প ছিল না। আগের ম্যাচটা এখনো মাথায় ঘুরছে, কারণ আমার মনে হয়েছিল, সেটাও আমরা জিততে পারতাম। তাই আজ মাঠে নেমে দলকে জেতাতে পারাটা সত্যিই দারুণ অনুভূতির।’

আরও পড়ুনটেস্ট অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিলেন নাজমুল৫ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ টম য় র র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

চীনকে শান্ত করতে দূত পাঠাচ্ছে জাপান

তাইওয়ান ইস্যুকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে তীব্র কূটনৈতিক টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে জাপানের। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে চীনকে শান্ত করতে এবং চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনা প্রশমিত করতে বেইজিংয়ে জ্যেষ্ঠ কূটনীতিককে পাঠাচ্ছে টোকিও।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) জাপানের গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

আরো পড়ুন:

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ২ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমান

শীতকাল এলেই ‘স্নো ফেইরি’ হয়ে যায় বরফের বলের মতো

প্রতিবেদনে বলা হয়, উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনার শুরু হয় জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির একটি মন্তব্যকে ঘিরে। চলতি মাসের শুরুতে পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, “চীন যদি তাইওয়ানে আক্রমণ চালায়, তাহলে তা জাপানের নিরাপত্তার জন্য একটি হুমকি এবং জাপান সামরিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে।” 

পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশীর মধ্যে আগে থেকে কিছুটা বিরোধ থাকলেও,, জাপানের কর্মকর্তারা এতদিন প্রকাশ্যে এমন মন্তব্য করাটা এড়িয়ে চলতেন, কারণ এতে বেইজিং আরও ক্ষুব্ধ হতে পারে। গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড বলে দাবি করে থাকে চীন।

জাপানের মিডিয়া সোমবার জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও ওসেনিয়া ব্যুরোর প্রধান মাসাআকি কানাই চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা লিউ জিনসংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে কানাই তাকে জানাবেন যে- তাকাইচির মন্তব্য জাপানের নিরাপত্তা নীতিতে কোনো পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয় না এবং একইসঙ্গে তিনি চীনকে এমন পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাবেন যা দুই দেশের সম্পর্কে আরো ক্ষতিগ্রস্ত করে।

তাইওয়ান জাপানের পশ্চিমতম দ্বীপপুঞ্জ থেকে মাত্র ১১০ কিলোমিটার (৬৮ মাইল) দূরে অবস্থিত এবং তেল ও গ্যাস সরবরাহের জন্য টোকিও নির্ভরশীল গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথের কাছাকাছি অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে জাপানে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সবচেয়ে বড় অবস্থান রয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার বেইজিং সতর্ক করে বলেছিল, তাইওয়ান ইস্যুতে জাপান সামরিক হস্তক্ষেপ করলে তারা ‘ভয়াবহ পরাজয়’ বরণ করবে। পাশাপাশি জাপানে ভ্রমণের বিরুদ্ধে চীনা নাগরিকদের সতর্কও করা হয়। আর এটি জাপানের পর্যটনব্যবসার জন্য বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি করেছে।

জাপানের প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “চীনের ভ্রমণ সতর্কতা ‘কৌশলগত, পারস্পরিক উপকারী সম্পর্ক উন্নয়নের বিস্তৃত দিকের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’। আমরা চীনা পক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দৃঢ় অনুরোধ করেছি।”

জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি এই সপ্তাহের শেষের দিকে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পেতে পারেন, উভয়ই শুক্রবার থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় ‘গ্রুপ অব ২০’ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

সোমবার নিউ তাইপেতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই ছিং-তে বলেন, চীন জাপানের বিরুদ্ধে ‘বহুমুখী আক্রমণ’ চালাচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানাচ্ছি। চীনকে সংযত আচরণ করার এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সমস্যা সৃষ্টিকারী না হয়ে একটি বড় শক্তির মতো দায়িত্বশীল আচরণ প্রদর্শন করার আহ্বান জানাচ্ছি।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ