মেজর লিগ ক্রিকেটে এবার আরও বড় নাটকীয়তা, শেষ বলে ছক্কায়...
Published: 28th, June 2025 GMT
শেষ বলে দরকার ৬ রান। ব্যাটিংয়ে শেমরন হেটমায়ার, বোলিংয়ে কাইরন পোলার্ড। এমন সমীকরণে কাজটা কত কঠিন, তা কারও অজানা নয়। কিন্তু এই কঠিন কাজটাই করেছেন হেটমায়ার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ব্যাটসম্যান পোলার্ডের মিডল স্টাম্প বরাবর করা বলটিতে হাঁটু গেড়ে স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মেরে দেন। তাতে মুম্বাই নিউইয়র্কের বিপক্ষে সিয়াটল অরকাস জিতেছে ৩ উইকেটে। এর মধ্য দিয়ে মুম্বাইয়ের করা ২৩৭ রান টপকে মেজর লিগ ক্রিকেটে রান তাড়ার নতুন রেকর্ডও গড়েছে দলটি।
এর আগে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড ছিল ওয়াশিংটন ফ্রিডমের। টেক্সাস সুপার কিংসের বিপক্ষে ২২১ রান তাড়া করেছিল তারা। এই ঘটনার দেখা মিলেছিল চলতি মাসের ২২ জুন। গতকালও নতুন রেকর্ড হয়েছিল এই টুর্নামেন্টে। কোনো ফিফটি ছাড়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড গড়েছিল ওয়াশিংটন ফ্রিডম (২১৪ রান।)
টানা ১০ ম্যাচ হারের পর প্রথম জয় পেল সিয়াটল অরকাস। টুর্নামেন্টে এটি তাদের প্রথম জয়।শুধু এক বলে দলকে ছক্কা মেরে হেটমায়ার জিতিয়েছেন তা নয়। তিনি খেলেছেন অপরাজিত ৪০ বলে ৯৭ রানের ইনিংস। জয়ের শেষ ২ ওভারে ৩২ রান দরকার ছিল সিয়াটলের। এই ১২ বলের মধ্যে হেটমায়ার খেলেন ৮টি বল। এর মধ্যে ছক্কা মারেন ৪টিতে। মানে একাই দলকে জিতিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনএভাবেও ২১৪ রান তাড়া করে জেতা যায়, টি–টোয়েন্টিতে যে রেকর্ড হলো২৭ জুন ২০২৫এমন একটি ম্যাচ সিয়াটল ও হেটমায়ারের জন্য দরকার ছিল। কারণ, সিয়াটল দলটি এই ম্যাচ জয়ের আগে হেরেছে টানা ১০ ম্যাচে। এর মধ্যে এবারের আসরে হেরেছে টানা ৫টিতে। হেটমায়ার নিজেও ছন্দে ছিলেন না। আইপিএলে ১৪ ম্যাচে রান করেছিলেন ২৩৯। যেখানে তাঁর সতীর্থ নিকোলাস পুরান করেন ৫২৪ রান। এর আয়ারল্যান্ড সিরিজেও তিনি রান পাননি। তাতে অনেকেই তাঁকে ওভাররেটেডও বলেছিলেন। সেই ক্ষোভ যেন ঝেড়েছেন এই ম্যাচে। এবারের মেজর লিগ ক্রিকেটে এটি তাঁর প্রথম ফিফটি।
ম্যাচ শেষে নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে হেটমায়ার বলেছেন, ‘এটা আমার সেরা ইনিংসগুলোর একটি। কারণ, আমরা তখন একেবারে চাপের মধ্যে ছিলাম, জয়ের বিকল্প ছিল না। আগের ম্যাচটা এখনো মাথায় ঘুরছে, কারণ আমার মনে হয়েছিল, সেটাও আমরা জিততে পারতাম। তাই আজ মাঠে নেমে দলকে জেতাতে পারাটা সত্যিই দারুণ অনুভূতির।’
আরও পড়ুনটেস্ট অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিলেন নাজমুল৫ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি
পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।
মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।
মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।
ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।