চট্টগ্রাম কাস্টমসের স্বেচ্ছাচারিতায় প্রকল্প ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা শেরপা পাওয়ারের
Published: 28th, June 2025 GMT
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলকে দ্রুত মরুকরণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বিএডিসি প্রথমবারের মতো দেশে সিপিআই সিস্টেম চালু করা উদ্যোগ নিয়েছে। পানির অপচয় রোধ করার জন্য ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সেন্টার পিভট ইরিগেশন (সিপিআই) সিস্টেমে সেচ কাজ পরিচালনা করা হয়। সিপিআই সিস্টেমে স্প্রে আকারে বৃষ্টির মতো করে পানি ছিটিয়ে দেওয়া হয়। যার ফলে ফসলের পাতা ও মাটি সসুষমভাবে পানি পেয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে পানির ব্যবহার বা কর্মদক্ষতা প্রায় ৮৫ থেকে ৯৮ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তবে চট্টগ্রাম কাস্টমস-এর কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতা আর অসহযোগিতার কারণে সিপিআই প্রকল্পটি ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা করছে আমদানিকারী প্রতিষ্ঠান শেরপা পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড।
শনিবার ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন শেরপা পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.
সংবাদ সম্মেলনে শেরপা পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবু তাহের বলেন, বিএডিসি সিপিআই সিস্টেমের মাধ্যমে পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জের ভূ-উপরিস্থ ও ভূগর্ভস্থ পানিকে কাজে লাগানোর জন্য সেচ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে এবং এর জন্য দরপত্র আহবান করেছে। আমাদের প্রতিষ্ঠান শেরপা পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড দরপত্রে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কার্যাদেশ পায়। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আমরা ইউরোপের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান BAUER, Austria-এর কাছ থেকে একটি সিপিআই সিস্টেম আমদানি করি। এই সিস্টেমটি শুল্কায়নের জন্য বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে আছে।
তিনি বলেন, সিপিআই সিস্টেমটি একটি সম্পূর্ণ সিস্টেম যার একটি যন্ত্রাংশকে যদি সিস্টেম থেকে বিযুক্ত করা হয়, তাতে সম্পূর্ণ সিস্টেমটি অকার্যকর হয়ে যাবে। যে কারণে প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এই যন্ত্রটিকে একক সিস্টেম হিসেবে রপ্তানি করে থাকে। বিএডিসির কার্যাদেশ এবং চট্টগ্রামের কাস্টমস হাউস কমিশনারের কাছে পাঠানো চিঠিতেও সিপিআই সিস্টেমকে একক সিস্টেম হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টমস-এর কর্মকর্তা এ এইচ এম মাহবুবুর রশিদ এবং মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম সিপিআই সিস্টেমকে একক সিস্টেম হিসেবে গ্রহণ করতে রাজি নন।
তিনি বলেন, কৃষিযন্ত্র হিসেবে এর প্রকৃত ডিউটির হওয়ার কথা ছিল ১২ লাখ সাড়ে ৫ হাজার টাকা। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টমস সিস্টেমটির বিভিন্ন যন্ত্রাংশকে আলাদা করে, বিশেষ করে সিস্টেমটির যন্ত্রাংশ ওয়াটার ডিস্ট্রিবিউশনও টাওয়াবে ব্যবহৃত ৫ টন পাইপকে আলাদা করে শুল্কায়ন করছে। এই পদ্ধতিতে শুল্কায়ন করা হলে শুল্ক ও জরিমানাসহ কমবেশি ৪২ লাখ টাকা দিতে হবে। এছাড়া খালাস না করতে পারায় প্রতিদিন আমাদের ১৫০–২০০ ডলার অতিরিক্ত বন্দর চার্জও গুনতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই সমস্যা নিরসনে বিএডিসি থেকে গত ২৫ জুন চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার বরাবর সিস্টেমটিকে একক কৃষি যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করে পত্র প্রদান করেছেন। এর আগে গত ২৪ জুন আমরা এ বিষয়ে অবহিত করিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস কমিশনারের কাছে একটি চিঠি জমা দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার দপ্তর থেকে আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া পাইনি।
তিনি বলেন, সিপিআই সিস্টেমটি বাংলাদেশে সর্বপ্রথম যন্ত্র হিসেবে স্থাপন করা হবে বিধায় প্রস্তুতকারী অস্টিয়ার প্রতিষ্ঠান থেকে দুইজন প্রতিনিধি বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে। কিন্তু আমাদের সিস্টেমটি কাস্টমস বিভাগে আটকে থাকায় তাদের আসার ব্যাপারে আমরা সম্মতি জানাতে পারছি না। এছাড়া কাস্টমস বিভাগের অসহযোগিতা অব্যাহত থাকলে পুরো প্রকল্পটি ভেস্তে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। এতে আমাদের প্রতিষ্ঠান সীমাহীন আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশও কৃষির ক্ষেত্রে একটি আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তি থেকে বঞ্চিত হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এড স স প আই স স ট ম প রকল প আম দ র ব এড স র জন য আশঙ ক
এছাড়াও পড়ুন:
হজরত আলী (রা.)-এর ১০টি কালজয়ী উক্তি
ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী ইবনে আবি তালিব (রা.)-এর খুতবা, পত্র ও উপদেশের একটি বিখ্যাত সংকলন হলো নাহজুল বালাগা বা বাগ্মিতার পথ। এটি একাদশ শতাব্দীতে সাইয়্যেদ শরিফ এটি সংকলন করেন।
গ্রন্থটিতে ২৪১টি খুতবা, ৭৯টি পত্র এবং ৪৮৯টি উপদেশ রয়েছে। গ্রন্থটির সংকলক শিয়া মতাদর্শী বলে পরিচিত হলেও শিয়া-সুন্নি উভয় ধারার আলেমরা এই গ্রন্থের সত্যতা স্বীকার করেন, যদিও কয়েকটি বর্ণনা সূত্র নিয়ে মতভেদ রয়েছে।
নাহজুল বালাগা ইসলামি সাহিত্যের একটি অমূল্য সম্পদ এবং আলী (রা.)-এর জীবনাদর্শ ও শিক্ষার অন্যতম উৎস হিসেবে বিবেচিত। সেখান থেকে তার ১০টি কালজয়ী উক্তি তুলে ধরা হলো।
গ্রন্থটিতে ২৪১টি খুতবা, ৭৯টি পত্র এবং ৪৮৯টি উপদেশ রয়েছে। গ্রন্থটির সংকলক শিয়া মতাদর্শী বলে পরিচিত হলেও শিয়া-সুন্নি উভয় ধারার আলেমরা এই গ্রন্থের সত্যতা স্বীকার করেন।হজরত আলী (রা.)-এর কালজয়ী উক্তি১. জ্ঞানের মূল্য: ‘জ্ঞানই তোমার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ; এটি কখনো হ্রাস পায় না বরং বিতরণের মাধ্যমে বৃদ্ধি পায়।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ১৯৫)
২. দুনিয়ার সত্যতা: ‘দুনিয়া একটি ক্ষণস্থায়ী ছায়া। এর পেছনে ছুটো না। যা চিরস্থায়ী, তার জন্য প্রস্তুত হও।’ (নাহজুল বালাগা, খুতবা ১০৩)
৩. নীরবতার শক্তি: ‘নীরবতা তোমাকে সম্মান দেয়, আর অপ্রয়োজনীয় কথা তোমার মর্যাদা কেড়ে নেয়।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ২২৪)
৪. ন্যায়বিচারের গুরুত্ব: ‘ন্যায়বিচার একটি সমাজের প্রাণশক্তি; এটি ছাড়া সমাজ ধ্বংসের মুখে পড়ে।’ (নাহজুল বালাগা, পত্র ৫৩)
আরও পড়ুনইমান নষ্ট হয়ে যাওয়ার কয়েকটি কারণ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫এমন সঙ্গী বেছে নাও যে তোমাকে ভালো পথে নিয়ে যায় এবং তোমার ভুল সংশোধন করে।হজর আলী (রা.), নাহজুল বালাগা, উপদেশ ১৬০৫. অহংকারের ধ্বংস: ‘অহংকার মানুষের হৃদয়কে অন্ধ করে এবং তাকে পতনের দিকে নিয়ে যায়।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ৮৬)
৬. সত্যের পথ: ‘সত্য বলো, এমনকি যদি তা তোমার বিরুদ্ধে যায়। সত্যই তোমার মুক্তির পথ।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ১৪৬)
৭. সঙ্গী নির্বাচন: ‘এমন সঙ্গী বেছে নাও যে তোমাকে ভালো পথে নিয়ে যায় এবং তোমার ভুল সংশোধন করে।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ১৬০)
৮. ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ: ‘ক্রোধ তোমার শত্রু। যে এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, সে নিজেকে জয় করতে পারে।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ১৫৩)
৯. দানের ফজিলত: ‘দান করো, কারণ এটি তোমার সম্পদ কমায় না, বরং তোমার মর্যাদা বাড়ায়।’ (নাহজুল বালাগা, উপদেশ ২৩৬)
১০. আল্লাহর ওপর ভরসা: ‘আল্লাহর ওপর নির্ভর করো, তিনি তোমার সব সমস্যার সমাধানকারী। যে তাঁর ওপর ভরসা করে, সে কখনো হতাশ হয় না।’ (নাহজুল বালাগা, খুতবা ১১৪)
সূত্র: দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন ডটকম
আরও পড়ুননামাজ: দাসের মহিমা০৪ মার্চ ২০২৫