বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ স্থাপনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনের প্রস্তুতির পথে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করেছে। প্রথম ইউনিটের জন্য প্রধান ও সহায়ক ট্রান্সফর্মারগুলোর কমিশনিং সম্পন্ন হওয়ার ফলে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডে কেন্দ্রটি যুক্ত হওয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন-রসাটমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

আরো পড়ুন: রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাষ্পের শব্দে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ

প্রধান সেটআপ ট্রান্সফর্মারগুলোর কাজ হলো- টার্বাইন জেনারেটরে উৎপাদিত ২৪কেভি বিদ্যুৎকে ৪০০ কেভিতে রূপান্তর করা, যা জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য অপরিহার্য।

প্রতিটি ট্রান্সফর্মারের ক্যাপাসিটি ১ হাজার ৫৯৯ মেগাওয়াট পর্যন্ত, যা প্রথম ইউনিটে উৎপাদিত ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চেয়েও বেশি। এর ফলে নিরবচ্ছিন্ন ও প্রয়োজনে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা সম্ভব হবে।

প্রতিটি ট্রান্সফর্মার ফেজের ওজন প্রায় ৪০০ টন এবং এগুলোর সংযোগ সম্পন্ন করতে ব্যবহৃত হয়েছে ১৫০ কিমির অধিক ক্যাবল।  এ ছাড়া, ইউনিটটির অভ্যন্তরীণ সব সিস্টেমে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়ক ট্রান্সফর্মারগুলোর কমিশনিংও সম্পন্ন হয়েছে।

দ্বৈত মোডে কাজ করতে সক্ষম এই ট্রান্সফর্মারগুলো জাতীয় গ্রিড এবং জেনারেটর উভয় উৎস থেকেই বিদ্যুৎ নিতে পারবে। ইতোপূর্বে অভ্যন্তরীণ সিস্টেমগুলোর জন্য ব্যবহৃত হতো স্ট্যান্ডবাই ট্রান্সফর্মার।  

প্রসঙ্গত, রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুটি ৩+ প্রজন্মের ভিভিইআর-১২০০ চুল্লি স্থাপিত হয়েছে। প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংস্থা রসাটমের প্রকৌশল বিভাগ মোট ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জেনারেল কন্ট্রাকটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।  

ঢাকা/হাসান/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট র ন সফর ম র র জন য র পপ র উৎপ দ

এছাড়াও পড়ুন:

রুনা লায়লার জন্মদিন: সংগীতজীবনের বর্ণময় ৬ দশকের উদ্‌যাপন

উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ৭৩ বছর পূর্ণ করলেন। একইসঙ্গে পূর্ণ করলেন তার গৌরবময় সংগীত-জীবনের ৬০ বছর। উপমহাদেশের তিন দেশ—বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সমানতালে গান গেয়ে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন রুনা লায়লা। ১৮টি ভাষায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। ফলে তিনি যে উপমহাদেশের শীর্ষ সংগীতশিল্পীদের একজন—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বাংলাদেশের বাংলা গানকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে তার অবদান অনন্য। দেশ-বিদেশ থেকে প্রাপ্ত অগণিত স্বীকৃতির মাঝে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ তার অর্জনকে আরো মহিমান্বিত করেছে।

আরো পড়ুন:

কনসার্টে গায়ক একনের পরনের প্যান্ট নিয়ে টানাটানি

চতুর্থ সন্তানের মা হলেন কার্ডি বি

ভক্তদের কাছে রুনা লায়লার এবারের জন্মদিনটি বিশেষ। কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের শেষ গানটি প্রকাশ পেয়েছে তার গাওয়া জনপ্রিয় সুফি কাওয়ালি ‘দামা দম মাস্ত কালান্দার’ দিয়ে—যে গানটি বহু বছর আগে তাকে আন্তর্জাতিক পরিচিতি এনে দিয়েছিল।

তবে জন্মদিন নিয়ে শিল্পীর বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি জানান, পরিবারকে সময় দিয়েই কাটাবেন দিনটি। ঘরোয়া পরিবেশেই উদ্‌যাপিত হবে জন্মদিন।

১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন রুনা লায়লা। সংগীতজীবনের শুরু ষাটের দশকের শেষ দিকে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে। শিল্পী আহমেদ রুশদির গায়কিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সংগীতাঙ্গনে পথচলা শুরু করা এই কণ্ঠশিল্পী দ্রুতই উর্দুভাষী শ্রোতাদের মন জয় করে নেন। ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গাম মিলা’—এর মতো গান তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।

এরপর ভারতেও ছড়িয়ে পড়ে তার কণ্ঠের জাদু। ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ তাকে পরিচিত করে তোলে সাদাকালো যুগেই। পরে সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ীর সঙ্গে ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ (১৯৮২) অ্যালবাম তাকে বিশ্বব্যাপী নতুন আরেক পরিচিতির শিখরে পৌঁছে দেয়। 

যদিও তিন দেশে সাফল্য পেয়েছেন, রুনা লায়লার সংগীতজীবনের মূল ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ। ‘দ্য রেইন’ (১৯৭৬), ‘জাদুর বাঁশি’ (১৯৭৭), ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ (১৯৮৯), ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪)—সহ মোট সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ গায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন। ‘সাধের লাউ বানাইলা মোরে বৈরাগী’, ‘বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িতে গেলাম’—এর মতো বাংলা লোকগান তার কণ্ঠে নতুন প্রাণ পেয়েছে। 

দীর্ঘ ও সফল এই যাত্রায় মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি—এ কথা প্রায়ই উল্লেখ করেন রুনা লায়লা। তিনি বলেন, “মা আমাকে প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছেন। ছোটবেলায় গান গাইতে গেলে মা সবসময় সঙ্গে যেতেন।”

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ