‘বিএনপি ও জামায়াত যেন ফিফটি, ফিফটি ভোট পায়’
Published: 28th, June 2025 GMT
‘বিএনপি ও জামায়াত যেন ফিফটি, ফিফটি ভোট পায়’ এমন বক্তব্য দিয়েছেন এক আওয়ামী লীগ নেতা। এ বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার সিলেট জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীনের মতবিনিময় সভায় এ বক্তব্য দেন কোম্পানীগঞ্জের উত্তর রণিখাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কালা মিয়া। ভিডিওটি শুক্রবার থেকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে কালা মিয়াকে বলতে শোনা যায়, ‘আওয়ামী লীগ সরকার আবার এই দেশে আইতে হইলে (আসতে হলে), জন্ম নিতে হইলে, ১০-১৫ বছরের আগে সম্ভব নয়। যদি আইত (আসতে) পারে, দীর্ঘ দিন যাইত ওইব ওলান (অপেক্ষা করতে হবে)।’
জামায়াত নেতা জয়নাল আবেদীন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখন আমরার চেয়ারম্যানসাব (জয়নাল) আইছইন, সামনেদি (আগামীতে) নির্বাচনে এমপি পদপ্রার্থী ওইবা (হবেন) আল্লাহর যদি হুকুম ওয়। আর তাইন পাস করতা পারইন (তিনি পাস করতে পারলে) আমরার এলাকার মানুষ যারা ভোট দিবা; যারা হাটবা-খাটবা তারতো মূল্যায়ন পাইত। যদিন ফেইলও মারইন, (জয়লাভ না করেন) তাও মূল্যায়ন পাইত। .
তিনি আরও বলেন, ‘যদি পাস না-ও করতে পারে, জামায়াতে ইসলামরে বিরোধী দল তনে হরাইয়া রাখতা পারতা নায় (জামায়াতকে বিরোধী দল থেকে সরিয়ে রাখা যাবে না)। আর যা দল আছে, নতুন দল নাগরিক পার্টি একটা বাইর করছে, এরা যে কতটা সিট পাইব, পাবলিকেও জানে তারাও জানে। তারার তো ইচ্ছা দেশ দখল করি লাইতা (দেশ দখল করার ইচ্ছা)। কিন্তু ইলেকশনে খারাইয়া দেখউক্কা (দাঁড়িয়ে দেখুক) কত ধানে কত চাল বারই।’
কালা মিয়া বলেন, ‘আমরাও চাইরাম আমরার সেন্টারে জামায়াতে ভোট পাউক অর্ধেক, আর বিএনপি নেউক অর্ধেক। তারাও যেহেতু নির্যাতিত...আগে পাইছইন না; তারাও পাইত। আমরা চাইরাম সমান সমান ফিফটি ফিফটি করিয়া।’
কালা মিয়ার বক্তব্য প্রসঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা সমকালকে বলেন, ‘তিনি সব তরকারির লবণ। যেখানে যে সুবিধা সেইভাবে তিনি চলাফেরা করেন।
কালা মিয়াকে উপজেলা আওয়ামী লীগের একজন সদস্য দাবি করে ওই নেতা বলেন, কালা মিয়া সবার ডাকে যান।
এ বিষয়ে জানতে আওয়ামী লীগ নেতা কালা মিয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি।
জামায়াত নেতা জয়নাল আবেদীন বলেন, আমি ওই এলাকায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। সেখানে স্থানীয় লোকদের নিয়ে বৈঠক করি। বৈঠকে আওয়ামী লীগ নেতা কালা মিয়া বিভিন্ন প্রসঙ্গ টেনে ফিফটি ফিফটি ভোটের কথা বলেছেন। তাকে আমি আগে চিনতাম না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
টিসিবির চালসহ আটক নেতাকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ
নেত্রকোনার মদনে টিসিবির চাল পাচারকালে যুবদল নেতাসহ তিনজনকে আটক করেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে টিসিবির ২৫ বস্তা চালসহ তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তবে থানায় নেওয়ার পথে যুবদল নেতাকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গত শুক্রবার রাতে নায়েকপুর ইউনিয়নের কাইটাইল বাজারসংলগ্ন ওয়াহেদ ইটভাটার কাছে একটি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত হ্যান্ডট্রলি ভর্তি ২৫ বস্তা টিসিবির চালসহ তাদের আটক করেন এলাকাবাসী।
আটক তিনজন হলেন– টিসিবির ডিলার শামছুল হক চ্যাম্পিয়ন, একজন স্কুলছাত্র ও হ্যান্ডট্রলি চালক আলম মিয়া। তারা চানগাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে শামছুল হক চ্যাম্পিয়ন নেত্রকোনা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ও মদন উপজেলার চানগাঁও ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য। গত ডিসেম্বরে তাঁকে অসদাচরণের কারণে যুবদলের সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় মদন থানার ওসি ও ঘটনাস্থলে থাকা এসআই ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। দায়িত্বে থাকা এসআই সাইদুল ইসালম বলেন, ‘আটকদের নিয়ে যাওয়ার পথে আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে শামছুল হক চ্যাম্পিয়ন নামে একজন পালিয়ে যায়।’ আর ওসি নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান বলেন, সেনাবাহিনী আটকদের হস্তান্তরের আগেই কৌশলে পালিয়ে যায় ওই ব্যক্তি।
জানা গেছে, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নায়েকপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে টিসিবির ২৫ বস্তা চাল একটি হ্যান্ডট্রলিতে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন ওই তিনজন। পথে কাইটাইল বাজারের কাছে একটি ইটভাটার পাশে এলাকাবাসী চাল ভর্তি হ্যান্ডট্রলিটি আটক করেন। খবর পেয়ে মদন অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পের সদস্যরা গিয়ে হ্যান্ডট্রলিসহ চালগুলো জব্দ করেন। এ সময় তিনজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন সেনা সদস্যরা।
অভিযোগ রয়েছে, থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে কৌশলে যুবদল নেতা শামছুল হক চ্যাম্পিয়নকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। বাকি দু’জনকে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। পরে এক কিশোরকে তাঁর মায়ের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। কারণ সে স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষার্থী, তাঁর পরীক্ষা চলমান।
আটকদের বিরুদ্ধে মদন থানায় শনিবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নায়েকপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) কৃষ্ণ চন্দ্র সরকার। তিনি জানান, তাঁকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বলেছে মামলায় স্বাক্ষর দিতে। তাই তিনি শুধু স্বাক্ষর দিয়েছেন। তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তিনি ওই আসামিদের চেনেন না।
মদন থানার ওসি নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। তবে চ্যাম্পিয়নকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগটি সত্য নয়। পুলিশের কাছে হস্তান্তরের আগেই সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যান তিনি। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। হ্যান্ডট্রলি চালক আলম মিয়াকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।