আগে স্থানীয় নির্বাচন ও পিআর পদ্ধতির দাবি
Published: 28th, June 2025 GMT
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। গতকাল শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলটির মহাসমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। এ মহাসমাবেশে যোগ দিয়ে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), এবি পার্টি, গণ অধিকার পরিষদের নেতারাও একই দাবি জানান।
সংস্কার, বিচার এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে এবং দেশ ও ইসলামবিরোধী সব ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রতিবাদে এ মহাসমাবেশের আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। মহাসমাবেশে দলটি ১৬ দফা দাবি তুলে ধরে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে জোটবদ্ধভাবে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনার কথা উঠে আসে ইসলাম ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দলের নেতাদের বক্তব্যে।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নেতা–কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সকাল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েত হতে শুরু করেন। একপর্যায়ে মহাসমাবেশস্থল পূর্ণ হয়ে যায়। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, মৎস্য ভবন এলাকার সড়কেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলেন দলটির নেতা–কর্মীরা।
দুপুর ১২টায় শুরু হয় মহাসমাবেশের প্রথম অধিবেশন। এতে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা ও মহানগরের নেতারা। বেলা দুইটার দিকে শুরু হয় মূল অধিবেশন। এতে দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি আমন্ত্রিত অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতারা বক্তব্য দেন। অবশ্য এ সমাবেশে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি দল আগে থেকেই সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। এ পদ্ধতিতে একটি দল সারা দেশে যত ভোট পায়, তার অনুপাতে সংসদে আসন পায়। তবে বিএনপি এ পদ্ধতির বিপক্ষে।
সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনকে জনগণের দাবি উল্লেখ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে হওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। সংসদের প্রস্তাবিত উভয় কক্ষেই এ পদ্ধতিতে নির্বাচন হতে হবে। এটি হলে কোনো দল ‘জালেম’ হওয়ার সুযোগ পাবে না।
রাজনৈতিক চাঁদাবাজি এখনো চলছে মন্তব্য করে সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ‘একটি দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। কারও নাম ধরে সমালোচনা করতে চাই না। তবে পুরোনো রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি জিইয়ে রাখার চেষ্টা সহ্য করা হবে না।’
ইসলামপন্থী দলগুলোকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ‘আমরা ৫৪ বছরে অনেক দলকে দেশ শাসন করতে দেখেছি; কিন্তু ইসলামকে ক্ষমতায় নিতেই পারিনি। এবার ইসলামপন্থীদের ঐক্যের ব্যাপারে গণপ্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।’
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এই মহাসমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের পাশাপাশি ধর্মীয় সংগঠনের নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ইসলামী আন্দোলন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রুনা লায়লার জন্মদিন: সংগীতজীবনের বর্ণময় ৬ দশকের উদ্যাপন
উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ৭৩ বছর পূর্ণ করলেন। একইসঙ্গে পূর্ণ করলেন তার গৌরবময় সংগীত-জীবনের ৬০ বছর। উপমহাদেশের তিন দেশ—বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সমানতালে গান গেয়ে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন রুনা লায়লা। ১৮টি ভাষায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। ফলে তিনি যে উপমহাদেশের শীর্ষ সংগীতশিল্পীদের একজন—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বাংলাদেশের বাংলা গানকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে তার অবদান অনন্য। দেশ-বিদেশ থেকে প্রাপ্ত অগণিত স্বীকৃতির মাঝে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ তার অর্জনকে আরো মহিমান্বিত করেছে।
আরো পড়ুন:
কনসার্টে গায়ক একনের পরনের প্যান্ট নিয়ে টানাটানি
চতুর্থ সন্তানের মা হলেন কার্ডি বি
ভক্তদের কাছে রুনা লায়লার এবারের জন্মদিনটি বিশেষ। কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের শেষ গানটি প্রকাশ পেয়েছে তার গাওয়া জনপ্রিয় সুফি কাওয়ালি ‘দামা দম মাস্ত কালান্দার’ দিয়ে—যে গানটি বহু বছর আগে তাকে আন্তর্জাতিক পরিচিতি এনে দিয়েছিল।
তবে জন্মদিন নিয়ে শিল্পীর বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি জানান, পরিবারকে সময় দিয়েই কাটাবেন দিনটি। ঘরোয়া পরিবেশেই উদ্যাপিত হবে জন্মদিন।
১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন রুনা লায়লা। সংগীতজীবনের শুরু ষাটের দশকের শেষ দিকে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে। শিল্পী আহমেদ রুশদির গায়কিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সংগীতাঙ্গনে পথচলা শুরু করা এই কণ্ঠশিল্পী দ্রুতই উর্দুভাষী শ্রোতাদের মন জয় করে নেন। ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গাম মিলা’—এর মতো গান তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
এরপর ভারতেও ছড়িয়ে পড়ে তার কণ্ঠের জাদু। ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ তাকে পরিচিত করে তোলে সাদাকালো যুগেই। পরে সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ীর সঙ্গে ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ (১৯৮২) অ্যালবাম তাকে বিশ্বব্যাপী নতুন আরেক পরিচিতির শিখরে পৌঁছে দেয়।
যদিও তিন দেশে সাফল্য পেয়েছেন, রুনা লায়লার সংগীতজীবনের মূল ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ। ‘দ্য রেইন’ (১৯৭৬), ‘জাদুর বাঁশি’ (১৯৭৭), ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ (১৯৮৯), ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪)—সহ মোট সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ গায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন। ‘সাধের লাউ বানাইলা মোরে বৈরাগী’, ‘বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িতে গেলাম’—এর মতো বাংলা লোকগান তার কণ্ঠে নতুন প্রাণ পেয়েছে।
দীর্ঘ ও সফল এই যাত্রায় মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি—এ কথা প্রায়ই উল্লেখ করেন রুনা লায়লা। তিনি বলেন, “মা আমাকে প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছেন। ছোটবেলায় গান গাইতে গেলে মা সবসময় সঙ্গে যেতেন।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত