গাজীপুরে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মামলা
Published: 29th, June 2025 GMT
ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে গাজীপুর নগরের ৫০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় নগরের গাজীপুরা কাজীবাড়ী পুকুরপাড় এলাকার কাজী আবদুল মান্নানের ছেলে কাজী হারুন অর রশিদকে (৫০) প্রধান আসামি করে ২৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান।
মামলার আসামিরা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মী বলে জানা গেছে। তাঁরা হলেন, ফারহাদ বিন প্রবাল, আবু সাঈদ মোল্লা, কাজী মামুন, নুরুল আমিন বাবু, আবদুল্লাহ আল মামুন, বাদশা মিয়া, আদনান খান, কাউসার, জসিম, তারা মিয়া, এম এস আরিফ, আরেফিন সিদ্দিক বুলবুল, আসাদুজ্জামান মামুন, আজিজুর রহমান, নাহিদ, সেলিম, সোহেল আহাম্মেদ ময়না, মাইদুল মোল্লা, সেলিম মোল্লা, মাসুদ মোল্লা, রফিকুল ইসলাম, মইনুদ্দিন, আলমগীর হোসেন, নাজমুল করিম বাবু, ফজলে রাব্বি প্রমুখ। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ জনকে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরা পশ্চিমপাড়া স্যাটার্ন টেক্সটাইলস লিমিটেডের চুক্তিপত্র অনুযায়ী বাতিলকৃত কাপড় (ঝুট) কেনার জন্য কয়েকজনকে নিয়ে বাদী (হুমায়ুন কবির) উপস্থিত হন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে বাদী কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করতে গেলে আসামিরা এসএস পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন এবং ভয়ভীতি দেখান। একপর্যায়ে তাঁরা ১০ থেকে ১২টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, তাঁরা বিএনপি নেতা গাজীপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব হালিম মোল্লার লোকজন। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাঁরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আরও পড়ুনটঙ্গীতে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপি-স্বেচ্ছাসেবক দলের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ১৬ ঘণ্টা আগেগাজীপুর মেট্রোপলিটন টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, ওই ঘটনায় গতকাল রাতে একটি মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তার নেই। আসামিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ককট ল ব স ফ ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
এনবিআর কর্মকর্তাদের ‘শাটডাউনে’ স্থলবন্দরগুলোতে স্থবিরতা, পণ্যবাহী গাড়ির জট
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে দুই দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানির শুল্ক-কর আদায় কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে বিভিন্ন বন্দরে পণ্য নিয়ে আসা গাড়ির জট তৈরি হয়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে স্থলবন্দরগুলোর সামগ্রিক কার্যক্রম।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা এ কর্মসূচির কারণে গতকাল শনিবার থেকে ঢাকার এনবিআর ভবন থেকে শুরু করে সংস্থাটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর, স্থলবন্দর, ঢাকা কাস্টম হাউসসহ দেশের সব কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে স্থলবন্দরগুলোতে দুই দেশের যাত্রী পারাপারের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
দুই দিন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে অন্তত ৮০০ ট্রাক পণ্য আমদানি ও ২০০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয়নি। ফলে দুই পারে পণ্যবাহী ট্রাকের জট সৃষ্টি হয়েছে বলে বন্দর সূত্রে জানা গেছে। শনিবার সকাল থেকে আজ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত বেনাপোল কাস্টম হাউসের অধিকাংশ কর্মকর্তা চেয়ারে বসেননি।
এ বিষয়ে বেনাপোল ক্লিলিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘ভারতের পেট্রাপোলে পণ্যবাহী অন্তত ৮০০ ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। অনির্দিষ্টকালের এ কর্মসূচিতে ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। পণ্যের ডেলিভারি হচ্ছে না। এতে শিল্পসহ পচনশীল পণ্যের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।’
বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী মতিয়ার রহমান বলেন, ‘কাস্টমস কর্মকর্তাদের শাটডাউন কর্মসূচিতে দেশে পণ্যের সংকট মোকাবিলা করা কঠিন হবে।’
আরও পড়ুনএক দিনেই রপ্তানি হয়নি সাড়ে তিন হাজার কনটেইনার৬ ঘণ্টা আগেবাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার সকাল থেকে শুল্ক স্টেশনের কর্মকর্তারা কোনো দাপ্তরিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন না। এতে শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভুটান থেকে আমদানি করা পাথর নিয়ে ১৫১টি ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করলেও এসব পণ্যের শুল্ক-কর আদায়সহ ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। আজ এই বন্দরে আমদানি পণ্য নিয়ে কোনো গাড়ি প্রবেশ করেনি। তবে গতকাল আমদানি করা ১৫১টি পণ্যবাহী গাড়ি খালাসের অপেক্ষায় ইয়ার্ডে পড়ে আছে। এসব গাড়ি ছাড় না পাওয়ায় ভুটান থেকে পণ্য নিয়ে গাড়িচালকেরাও বিপাকে পড়েছেন। এ ছাড়া বন্দরে পণ্য লোড-আনলোড (ওঠানামা) না হওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বন্দরসংশ্লিষ্ট শ্রমিকেরা।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তারা আন্দোলনের কারণে আমদানি করা পণ্যের শুল্ক আদায় করেননি এবং ছাড়পত্রও দেননি। এ জন্য এসব পণ্য নিয়ে আসা গাড়িগুলো খালাসের অপেক্ষায় আছে। এতে বন্দরের শ্রমিক ও আমদানিকারকদের পাশাপাশি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার ভুটান থেকে পাথর নিয়ে আসা ১৫১টি ট্রাক ছাড়পত্র না পাওয়ায় খালাসের অপেক্ষায় ইয়ার্ডে আছে। বন্দরের স্থবিরতার পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আদায় হচ্ছে না।
আখাউড়া স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির কারণে আমদানি-রপ্তানির জন্য বিল অব এক্সপোর্ট ও বিল অব এন্ট্রি করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। যদিও আগাম বিল অব এক্সপোর্ট করে রাখার কারণে শনিবার বন্দর দিয়ে তিন গাড়িতে ৩০ টন আটা এবং ২৩ গাড়িতে ১১৫ টন মাছ আগরতলায় পাঠানো হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর। আজ রোববার দুপুরে