রিমান্ড শেষে সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল আবার আদালতে
Published: 29th, June 2025 GMT
প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে করা মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আবারও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শেরেবাংলা নগর থানায় প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৬ জুন কাজী হাবিবুল আউয়ালের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তিন দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ দুপুর ১২টার দিকে তাঁকে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে আসা হয়। পরে তাঁকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছে পুলিশ।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, কাজী হাবিবুল আউয়াল এখন হাজতখানায় আছেন। বেলা তিনটার পর কারাগারে আটক রাখার আবেদনের ওপর শুনানি হবে। সে সময় তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে।
দিনের ভোট রাতে করাসহ প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় হাবিবুল আউয়ালকে গত বুধবার রাজধানীর মগবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
একই মামলায় গত রোববার আরেক সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন সোমবার তাঁর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর শুক্রবার আবার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে সাবেক তিন সিইসিসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে গত রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন খান।
মামলায় ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে তৎকালীন সিইসি কে এম নূরুল হুদা ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে তৎকালীন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আসামি করা হয়।
এ ছাড়া এই মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন—গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, জাবেদ পাটোয়ারী, এ কে এম শহীদুল হক প্রমুখ।
আরও পড়ুনসাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল ৩ দিনের রিমান্ডে২৬ জুন ২০২৫আরও পড়ুনসাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার২৫ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ ব ব ল আউয় ল জ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
বিসিএসে অযৌক্তিক অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ
বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে ম্যানেজমেন্ট বিভাগে অন্যান্য বিভাগের অযৌক্তিক অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বেলা ১১টায় বাণিজ্য অনুষদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে সমাবেশ করেন তারা।
এ সময় তাদের ‘বিভাগ যার, ক্যাডার তার’, ‘স্বতন্ত্র শিক্ষা ক্যাডার, আমাদের অধিকার’, ‘জুলাইয়ের চেতনা, স্বজনপ্রীতি মানি না’, ‘পিএসসির প্রহসন, মানি না মানবো না’, ‘দফা এক দাবি এক, স্বতন্ত্র ক্যাডার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
আরো পড়ুন:
ময়মনসিংহ মেডিকেলের হোস্টেল থেকে ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার, চিরকুট জব্দ
উত্তরবঙ্গের রেলপথ আটকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. সাইফুল্লাহ বলেন, “সূচনালগ্ন থেকেই ব্যবস্থাপনা বিভাগে স্বতন্ত্র শিক্ষা ক্যাডার চালু আছে। একজন ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীই ব্যবস্থাপনা বিষয়ের উপর পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান রাখেন। ব্যবস্থাপনা বিভাগের নিজস্ব একটা স্বকীয়তা আছে। পিএসসি ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা না করেই স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের দাবি, অতিদ্রুত প্রহসনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে ব্যবস্থাপনা বিভাগকে স্বতন্ত্র শিক্ষা ক্যাডারে পুনর্বহাল করতে হবে।”
একই বিভাগের ২৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আফসানা শারমীন আঁখি বলেন, “অনেক শিক্ষার্থী ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তি হয় এটা জেনে যে, এই বিভাগে শিক্ষা ক্যাডার আছে। একজন শিক্ষার্থী ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে শিক্ষাজীবন সম্পন্ন করে সে শিক্ষা ক্যাডারে চাকরি নিয়ে শিক্ষার্থীদের সেরাটা দিতে পারে, যা অন্য বিভাগ থেকে আসা কেউ পারবে না।”
তিনি বলেন, “পিএসসি একটি হাস্যকর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রহসন। আমরা এ প্রহসনের বিরুদ্ধে আজ আমাদের বিভাগের সব শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা মিলে রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। আমরা চাই অতিদ্রুত পিএসসি তাদের এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে।”
বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাহমিনা খানম বলেন, “৫৪ বছর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্য অনুষদের যাত্রা শুরু করেছিল দুইটি মৌলিক বিষয় ব্যবস্থাপনা ও হিসাববিজ্ঞান নিয়ে। সেই দুটি বিষয় ছাড়াও যুগের প্রয়োজনে আরো দুটি মৌলিক বিষয় এই অনুষদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আমরা জানি যুগের প্রয়োজনে নতুন বিষয় সংযুক্ত করতে হয়। তার মানে কি এই, ব্যবস্থাপনা তার সক্রিয়তা হারিয়ে ফেলেছে? তার মানে কি এটাই যে ব্যবস্থাপনা মৌলিক বিষয় নয়?”
তিনি বলেন, “আমার প্রশ্ন তারা কোন স্টেক হোল্ডারের সঙ্গে কথা বলেছে? তারা কার সঙ্গে কথা বলে এই বিষয়গুলো যুক্ত করেছে? তাদের এই হটকারি সিদ্ধান্তে কেনো দায়বদ্ধ থাকবে না? তারা কোন কাগজের ভিত্তিতে এটা করলেন তাদের জবাব দিতে হবে। তারা এখনো পর্যন্ত কোনো কাগজ দেখাতে পারেন নাই।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা পিএসসির কাছে জানতে চাই, তারা আমাদের দাবি মানবে কি মানবে না? যদি তারা দাবি না মানে, তাহলে যেখানে যেখানে আমাদের যাওয়া প্রয়োজন, যা যা করা প্রয়োজন, তাই তাই আমরা করবো। যারা আমাদের আজ রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছেন, তাদের কাছে সব জবাব চাইব। পিএসসি আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে।”
একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কাজী মইনুদ্দিন মাহমুদ বলেন, “পিএসসি এক সপ্তাহের ব্যবধানে নোটিশ পরিবর্তন করে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটি আমাদের ভাবাতে বাধ্য করছে। এখানে কোনো দলের আধিপত্য কাজ করছে বলে মনে করি না। পিএসসিকে এই ঘটকারীমূলক সিদ্ধান্ত এখনই স্থগিত করতে হবে। প্রশাসন যদি এটাকে সুন্দরভাবে সমাধান করেন, তাহলে আমরা আমাদের ক্লাসে ফিরে যাব।”
তিনি বলেন, “আমরা কোনো অশ্লীলতামূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে আসিনি এখানে। তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হবে, না হলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো। এটা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দাবি নয়, এটা বাংলাদেশের সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের দাবি। ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই এই বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী