চট্টগ্রাম বন্দর কাস্টমসে ঝুলছে তালা, আটকে আছে সাড়ে ৩ হাজার কনটেইনার
Published: 29th, June 2025 GMT
কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি আজও চলছে। দ্বিতীয় দিনের মত চলা কর্মসূচির কারণে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের বেশিরভাগ কক্ষেই তালা ঝুলছে। ফলে ৩ হাজার ৬৮০ একক কনটেইনার পণ্য রপ্তানি করা যায়নি। তিনটি জাহাজে এসব পণ্য রপ্তানি করার কথা ছিল।
রপ্তানি করতে না পারা এসব পণ্যের বেশিরভাগই পোশাকশিল্প মালিকদের। এক দিনে এত বেশিসংখ্যক কনটেইনার রপ্তানি না হওয়া রেকর্ড। এটি আগে কখনোই হয়নি। রপ্তানি না হওয়ায় বিদেশি ক্রেতাদের কাছে এসব পণ্য এখন আর সময়মতো পৌঁছানো যাবে না। কবে নাগাদ এসব কনটেইনার জাহাজে তোলা যাবে; বলা যাচ্ছে না সেটিও। কারণ, কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলন কবে শেষ হবে বলা যাচ্ছে না।
বেসরকারি কনটেইনার ডিপো সমিতির মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বলেন, ‘কাস্টমস কর্মকর্তারা না আসায় ডিপোতে শুল্কায়ন কার্যক্রম হচ্ছে না। এজন্য কোনো কনটেইনার বন্দরে পাঠানো যাচ্ছে না। আজ রোববার বন্দর জেটিতে থাকা তিনটি জাহাজ রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে বন্দর ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাস্টমসের কর্মসূচির কারণে গতকাল শনিবার ও আজ কোনো কনটেইনার ডিপো থেকে বন্দরে পাঠাতে পারিনি আমরা। তিনটি জাহাজ এখন অলস বসে আছে বন্দরে।
শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল আলম জুয়েল বলেন, ‘রপ্তানি পণ্য প্রথমে কারখানা থেকে চট্টগ্রামের ১৯টি ডিপোতে আনা হয়। সেখানে শুল্কায়নের পর কনটেইনারে রাখা হয় সব পণ্য। পরে বুকিং অনুযায়ী বন্দরে এনে জাহাজে তুলে দেওয়া হয় রপ্তানি পণ্যবোঝাই কনটেইনার।’
রুহুল আমিন সিকদার আরও জানান, এই তিন জাহাজের মধ্যে ‘এএস সিসিলিয়া’তে ৫৬৪ একক কনটেইনার ছিল। জাহাজটি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে বন্দর ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। সেখান থেকে এসব কনটেইনার ইউরোপ-আমেরিকাগামী বড় জাহাজে তুলে দেওয়ার কথা। একইভাবে ‘এক্সপ্রেস নিলওয়ালা’ নামে আরেকটি জাহাজে ১ হাজার ৪৬০ একক কনটেইনার এবং ‘হং ডা জিন-৬৮’ নামের অন্য জাহাজটিতে ১ হাজার ৬৬৬ একক কনটেইনার রপ্তানি হওয়ার কথা ছিল।
‘এএস সিসিলিয়া’ জাহাজটি সুইজারল্যান্ডভিত্তিক জাহাজ কোম্পানি মেডিটেরানিয়ান শিপিং কোম্পানির। এই প্রতিষ্ঠানটির হেড অব অপারেশন অ্যান্ড লজিস্টিকস আজমীর হোসেন চৌধুরী বলেন, ডিপো থেকে রপ্তানি কনটেইনার আসতে না পারায় জাহাজটি বন্দর ছেড়ে যেতে পারেনি। একইভাবে বন্দর ছাড়তে পারেনি আরও দুইটি জাহাজ।’
গত ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্বনীতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগে বিভক্ত করে অধ্যাদেশ জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর পর থেকে এনবিআর বিলুপ্তি রোধসহ কয়েকটি দাবিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন করছেন। গত ২৫ মে অর্থ মন্ত্রণালয় ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অধ্যাদেশটি সংশোধন করার আশ্বাস দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। এর পর ২২ জুন থেকে চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গতকাল সারাদেশে এনবিআরের কর, মূসক ও শুল্ক দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কমপ্লিট শাটডাউন এবং মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি পালন করেন। আজ সোমবারও চলছে কর্মসূচি।
আন্দোলনের ফলে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। কারণ, বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়নকারী চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস দেশের সবচেয়ে বড় স্টেশন। আমদানি-রপ্তানি পণ্যের সিংহভাগ এই বন্দর দিয়ে আনা-নেওয়া হয়। প্রতিদিন গড়ে ২০০ কোটি টাকা শুল্ককর আদায় করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনব আর কর মকর ত ক স টমস র কর ম জ হ জট
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা
রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ১৮ কোটি ৪২ লাখ ৪০ হাজার টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। এ বাজেটে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ কোটি ৭৫ লাখ ৯৭ হাজার ২২৫ টাকা, বাজেটে উদ্বৃত্ত ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬৬ লাখ ৪ হাজার ৭৭৫ টাকা।
রবিবার (২৯ জুন) বিকালে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে এ বাজেট ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম।
সভাপতির বক্তব্যে ইউএনও সাইফুল ইসলাম বলেন, “এই বাজেট প্রণয়নে আমাদের লক্ষ্য ছিল উন্নয়ন ও সেবার সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো এবং কৃষিখাতসহ প্রতিটি সেক্টরে সমান গুরুত্ব দিয়ে বাস্তবভিত্তিক বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। রূপগঞ্জের জনগণের অংশগ্রহণে এ বাজেট কার্যকর ও জনমুখী হবে বলে আমরা আশাবাদী।”
বাজেট অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি, পূর্বাচল রাজস্ব) তাসবির হোসেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সজল কুমার, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মাসুদ রানা, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী ও স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে বাজেটের সঠিক ব্যয় নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমে বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে রূপগঞ্জকে একটি মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে মতামত দেন।