সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে শাটডাউনের টানা কর্মসূচী থেকে সরে এসেছে কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দিনভর শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও রোববার রাতে শুরু হয়েছে রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন কার্যক্রম। 

কাল সোমবার থেকে পুরোদমে কার্যক্রম চলবে। কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে শনিবার থেকে আজ সন্ধ্যার আগপর্যন্ত কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

সরকার আজ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সেবা ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি সংস্থাটির আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে ফেরার আহ্বান জানিয়ে সরকার বলেছে, কাজে যোগ না দিলে দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হবে। এ অবস্থায় সন্ধ্যার পর কাজে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

শনিবার ও রোববার সারাদিন শুল্কায়ন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় ৩ হাজার ৬৮০ একক রপ্তানি পণ্যভর্তি কনটেইনার আজ জাহাজে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে রপ্তানিকারকরা। পণ্যবোঝাই এসব কনটেইনার নিয়ে তিনটি জাহাজ আজ চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ করার কথা ছিল। 

এনবিআরে সংস্কার উদ্যোগ বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে গত ১২ মের পর থেকে আন্দোলন করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফলে সরকারের হয়ে রাজস্ব আদায়কারী সংস্থাটিতে একধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। এতে বিঘ্ন ঘটেছে সেবায়। ভোগান্তিও বেড়েছে ব্যবসায়ীদের। এমন অবস্থায় শীর্ষ ১৩টি ব্যবসায়ী সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক নেতারা শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে আলোচনার মাধ্যমে রাজস্ব খাতের সংস্কারের পক্ষে অবস্থান তুলে ধরেন। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবি সমর্থন করেন না বলে জানান তাঁরা। গতকালও আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। এরপর কঠোর অবস্থানে যায় সরকার। আন্দোলনকারীদের সাথে কোন বৈঠক হবে না বলে ঘোষণা দেন অর্থ উপদেষ্টা। তারপরই নমনীয় হতে থাকে আন্দোলনকারীরা। সীমিত পরিসরে হলেও শুরু করে শুল্কায়ন কার্যক্রম।

সিআ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, ‘টানা দুই দিন অচলাবস্থা থাকলেও রোববার রাতে কাজে ফেরার ঘোষণা দেন কাস্টম কর্মকর্তারা। যুগ্ম কমিশনার মারুফুল ইসলাম বলেন, রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন রাতেই শুরু হয়েছে। সোমবার আমদানি পণ্যের কার্যক্রম চলবে বলে জেনেছি আমরা।’ 

তবে বেসরকারি কনটেইনার ডিপো সমিতির মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বলেন, কাস্টম কর্মকর্তারা না আসায় ডিপোতে শুল্কায়ন কার্যক্রম টানা দুইদিন বন্ধ ছিল। 

ডিপো কর্তৃপক্ষ জানায়, রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে আগামীকাল পাঁচটি জাহাজ বন্দর ত্যাগ করার কথা রয়েছে। এর মধ্যে আছে দুই দিন ধরে অপেক্ষা করা সেই তিনটি জাহাজও। ‘এএস সিসিলিয়া’ তে ৫৬৪ একক কনটেইনার যাওয়ার কথা ছিল। জাহাজটি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে বন্দর ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল রোববার দুপুরে। সেখান থেকে এসব কনটেইনার ইউরোপ-আমেরিকাগামী বড় জাহাজে তুলে দেওয়ার কথা। একইভাবে ‘এক্সপ্রেস নিলওয়ালা’ নামে আরেকটি জাহাজে ১ হাজার ৪৬০ একক কনটেইনার এবং ‘হং ডা জিন-৬৮’ নামের অন্য জাহাজটিতে ১ হাজার ৬৬৬ একক কনটেইনার রপ্তানি হওয়ার কথা ছিল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত র বব র অবস থ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

রবি শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি প্রত্যাহার, যমুনা সেতুতে যান চলাচল স্বাভাবিক

যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়কে হওয়া ব্লকেড ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ১ ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করেছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ১ টা ১০ মিনিটে এ কর্মসূচি স্থগিত করেন তারা।

এর আগে, স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে যমুনা সেতু পশ্চিমে মহাসড়ক ব্লকেড করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার যাত্রী ও চালকেরা দুর্ভোগে পড়েন। 

আরো পড়ুন:

দ্বিতীয় তিস্তা সেতু উদ্বোধনের নতুন তারিখ ঘোষণা

উদ্বোধনের আগেই ঝুঁকিতে পড়ছে দ্বিতীয় তিস্তা সেতু

এর আগে, স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবিতে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে যমুনা সেতু পশ্চিম গোলচত্বর এলাকায় ঢাকা ও উত্তরবঙ্গমুখী উভয় লেন বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচীর কারণে মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

ব্লকেড প্রত্যাহারের পর ঢাকা ও উত্তরবঙ্গগামী উভয় লেনে দীর্ঘ যানজট দেখা দেয়। এতে উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার যাত্রী ও চালকেরা দুর্ভোগে পড়েন। বর্তমানে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান মহাসড়কে স্বাভাবিকভাবে যান চলাচলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাকারিয়া জিহাদ বলেন, “১১টা ৫০ মিনিটে যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়কে শিক্ষার্থীরা বসে পড়েন। এতে উভয় লেনেই যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ১ ঘণ্টা মহাসড়কে বিক্ষোভ করার পরে সড়ক ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “আজকে রেল ও সড়ক পথ অবরোধের কথা ছিল। কিন্তু বুধবার (১৩ আগস্ট) উল্লাপাড়ায় রেলপথ অবরোধের কারণে সিডিউল বিপর্যয় ঘটে। জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমরা রেলপথ ছেড়ে দিয়েছি। তবে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে বিক্ষোভ করার পর মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছি। শিগগিরই আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।”

প্রতিষ্ঠার ৯ বছরেও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্কের (ডিপিপি) অনুমোদন না হওয়ায় আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের সঙ্গে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও একাত্মতা প্রকাশ করেছে।

গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত একটানা কর্মসূচিতে মহাসড়ক অচল করে দেয় শিক্ষার্থীরা। তখন সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করায় আন্দোলন স্থগিত করা হয়। এরপর ৬ মাসেও ডিপিপি অনুমোদন না হওয়ায় ২৬ জুলাই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচি বয়কটের মধ্য দিয়ে পূণরায় আন্দোলন শুরু হয়।

ঢাকা/রাসেল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ