স্কুলে হিন্দি শিক্ষা বাধ্যতামূলক নয়, পিছু হটল ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার
Published: 30th, June 2025 GMT
প্রবল প্রতিরোধের মুখে স্কুলে হিন্দি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নিল মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার। গত রোববার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাডনবিশ।
রাজ্যব্যাপী বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের জন্য গত সপ্তাহেই সরকার জানিয়েছিল আপাতত সিদ্ধান্তটি স্থগিত রাখা হচ্ছে। কিন্তু রোববারের বৈঠকে ঠিক হয়, স্থগিত নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি রূপায়ণের সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহার করে নেওয়াই উচিত হবে। গত ১৬ এপ্রিল হিন্দি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার সেই নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। সরকারে বিজেপির দুই শরিক শিবসেনা ও এনসিপি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের পক্ষে জোরালোভাবে চাপ সৃষ্টি করছিল।
মুখ্যমন্ত্রী ফাডনবিশ জানিয়েছেন, রাজ্যের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ নরেন্দ্র যাদবের নেতৃত্বে এক কমিটি গঠন করা হবে। কেন্দ্রীয় ভাষানীতির রূপায়ণ নিয়ে সেই কমিটি প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে। কমিটি তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবে। তার সুপারিশ অনুযায়ী সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ২০২০ সালে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি ঘোষণা করেছিল। সেই নীতিতে বলা হয়েছিল, প্রতিটি রাজ্যের স্কুলে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত স্থানীয় ভাষা ও ইংরেজির পাশাপাশি হিন্দি শেখাতে হবে বাধ্যতামূলকভাবে।
কেন্দ্রের ওই নীতি বলবৎ করার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব হয় দক্ষিণের রাজ্যগুলো। বিশেষ করে তামিলনাড়ু। তামিলনাড়ুর ডিএমকে–কংগ্রেস সরকার ওই নীতি রূপায়ণে বাধা দেয়। ওই রাজ্যে ঐতিহাসিকভাবেই হিন্দি বিরোধিতা প্রবল। তারা মনে করে, জবরদস্তি হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে উত্তর ভারতের হিন্দিভাষী রাজনীতিকেরা দাক্ষিণাত্যকে গ্রাস করতে চায়। স্বাধীনতার পর থেকেই তাই তামিলনাড়ুতে হিন্দি ব্রাত্য। নতুন শিক্ষানীতির বিরুদ্ধেও মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন আন্দোলন গড়ে তোলেন। তাঁর অভিযোগ, হিন্দি শিক্ষা বাধ্যতামূলক না করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার সর্বশিক্ষা অভিযানের প্রাপ্য টাকা আটকে রেখেছে। স্ট্যালিন বারবার জানিয়েছেন, হিন্দি শিক্ষা বাধ্যতামূলক না করায় রাজ্য সরকারের প্রাপ্য প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না।
হিন্দি বাধ্যতামূলক করার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন দক্ষিণের পাঁচ রাজ্যেও জনমত গঠনের চেষ্টা করেন। অন্ধ্র প্রদেশ ছাড়া বিরোধী শাসিত কেরালা, কর্ণাটক ও তেলেঙ্গানা এই আন্দোলনে তাঁর পাশে দাঁড়ায়। মহারাষ্ট্রেও তার প্রভাব পড়ে। মারাঠি জাত্যাভিমানে আঘাত করার জন্য রাজ্যের বিরোধীরা বিজেপি সরকারের বিরোধিতায় সরব হয়। শরদ পাওয়ারের এনসিপি, উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা ও কংগ্রেস একযোগে রাজ্যের স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদে সরব হয়। প্রবল প্রতিরোধের মুখে শেষ পর্যন্ত ফাডনবিশ সরকার হিন্দি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নিল।
মহারাষ্ট্রের স্কুলে মারাঠি ও ইংরেজি শিক্ষা বাধ্যতামূলক। জাতীয় শিক্ষানীতিতে তিনটি ভাষা শিক্ষার কথা বলা আছে। স্থানীয় ভাষা ও ইংরেজির পাশাপাশি হিন্দি। কিন্তু এ কথাও বলা আছে, কোনো ভাষাই কোনো রাজ্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম খ যমন ত র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ফুলের তোড়া পাঠিয়ে খালেদা জিয়াকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শুক্রবার বিকেলে অধ্যাপক ইউনূসের পক্ষ থেকে পাঠানো একটি ফুলের তোড়া গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় পৌঁছে দেওয়া হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা জানেন, গণতন্ত্রের মা, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আজ জন্মদিন। তিনি নিজে কোনো অনুষ্ঠান পালন করেন না। তবে দলীয়ভাবে সারা দেশে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন চলছে।’
বিকেল ৪টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার একান্ত সচিব সজীব এম খায়রুল ইসলাম এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম গুলশানে ফিরোজায় এসে বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তারের কাছে ফুলের তোড়া হস্তান্তর করেন। এ সময় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য বেলায়েত হোসেন, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এবং চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত উইংয়ের কর্মকর্তা মাসুদ রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকেও খালেদা জিয়াকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা হিসেবে ফুলের তোড়া পাঠানো হয়।
বিএনপির প্রেস উইং জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট, দিনাজপুরে। আজ তিনি ৮১ বছরে পা দিলেন।