প্রবল প্রতিরোধের মুখে স্কুলে হিন্দি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নিল মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার। গত রোববার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাডনবিশ।

রাজ্যব্যাপী বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের জন্য গত সপ্তাহেই সরকার জানিয়েছিল আপাতত সিদ্ধান্তটি স্থগিত রাখা হচ্ছে। কিন্তু রোববারের বৈঠকে ঠিক হয়, স্থগিত নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি রূপায়ণের সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহার করে নেওয়াই উচিত হবে। গত ১৬ এপ্রিল হিন্দি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার সেই নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। সরকারে বিজেপির দুই শরিক শিবসেনা ও এনসিপি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের পক্ষে জোরালোভাবে চাপ সৃষ্টি করছিল।

মুখ্যমন্ত্রী ফাডনবিশ জানিয়েছেন, রাজ্যের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ নরেন্দ্র যাদবের নেতৃত্বে এক কমিটি গঠন করা হবে। কেন্দ্রীয় ভাষানীতির রূপায়ণ নিয়ে সেই কমিটি প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে। কমিটি তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবে। তার সুপারিশ অনুযায়ী সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ২০২০ সালে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি ঘোষণা করেছিল। সেই নীতিতে বলা হয়েছিল, প্রতিটি রাজ্যের স্কুলে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত স্থানীয় ভাষা ও ইংরেজির পাশাপাশি হিন্দি শেখাতে হবে বাধ্যতামূলকভাবে।

কেন্দ্রের ওই নীতি বলবৎ করার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব হয় দক্ষিণের রাজ্যগুলো। বিশেষ করে তামিলনাড়ু। তামিলনাড়ুর ডিএমকে–কংগ্রেস সরকার ওই নীতি রূপায়ণে বাধা দেয়। ওই রাজ্যে ঐতিহাসিকভাবেই হিন্দি বিরোধিতা প্রবল। তারা মনে করে, জবরদস্তি হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে উত্তর ভারতের হিন্দিভাষী রাজনীতিকেরা দাক্ষিণাত্যকে গ্রাস করতে চায়। স্বাধীনতার পর থেকেই তাই তামিলনাড়ুতে হিন্দি ব্রাত্য। নতুন শিক্ষানীতির বিরুদ্ধেও মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন আন্দোলন গড়ে তোলেন। তাঁর অভিযোগ, হিন্দি শিক্ষা বাধ্যতামূলক না করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার সর্বশিক্ষা অভিযানের প্রাপ্য টাকা আটকে রেখেছে। স্ট্যালিন বারবার জানিয়েছেন, হিন্দি শিক্ষা বাধ্যতামূলক না করায় রাজ্য সরকারের প্রাপ্য প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না।

হিন্দি বাধ্যতামূলক করার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন দক্ষিণের পাঁচ রাজ্যেও জনমত গঠনের চেষ্টা করেন। অন্ধ্র প্রদেশ ছাড়া বিরোধী শাসিত কেরালা, কর্ণাটক ও তেলেঙ্গানা এই আন্দোলনে তাঁর পাশে দাঁড়ায়। মহারাষ্ট্রেও তার প্রভাব পড়ে। মারাঠি জাত্যাভিমানে আঘাত করার জন্য রাজ্যের বিরোধীরা বিজেপি সরকারের বিরোধিতায় সরব হয়। শরদ পাওয়ারের এনসিপি, উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা ও কংগ্রেস একযোগে রাজ্যের স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদে সরব হয়। প্রবল প্রতিরোধের মুখে শেষ পর্যন্ত ফাডনবিশ সরকার হিন্দি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নিল।

মহারাষ্ট্রের স্কুলে মারাঠি ও ইংরেজি শিক্ষা বাধ্যতামূলক। জাতীয় শিক্ষানীতিতে তিনটি ভাষা শিক্ষার কথা বলা আছে। স্থানীয় ভাষা ও ইংরেজির পাশাপাশি হিন্দি। কিন্তু এ কথাও বলা আছে, কোনো ভাষাই কোনো রাজ্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম খ যমন ত র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে।

তবে, কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিক পতনের ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ হাজার ৭০০ পয়েন্টের ঘরে নেমেছে।

আরো পড়ুন:

প্রথম প্রান্তিকে ইউনিক হোটেল ও ইফাদ অটোসের মুনাফায় বড় উত্থান

ডিএসইতে সূচকের উত্থান, সিএসইতে পতন

আগের কার্যদিবসের চেয়ে ডিএসই ও সিএসইতে আজ টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম বেড়েছে।

বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক দিন ধরে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান দেখা গেলেও লেনদেন শেষে তা পতনে রূপ নেয়। সোমবার সকালে ডিএসইএক্স সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু হয়। তবে, লেনদেন শুরুর ২০ মিনিট পর থেকে সূচকের উত্থান দেখা যায়। লেনদেন শেষ হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল। 

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৪২.৮০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৭৭৪ পয়েন্টে।

এদিন ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৫.২৯ পয়েন্ট বেড়ে ১০০০ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৯.৩৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৬৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

ডিএসইতে মোট ৩৭৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৩২২টি কোম্পানির, কমেছে ৩৫টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬টির।

এদিন ডিএসইতে মোট ৩৪৮ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৯৮ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৮.৯৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৮ হাজার ২৮৭ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪১.৬৯ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৩৬৮ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৫.১১ পয়েন্ট কমে ৮৪৫ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ১৬.৮৭ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ১১৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সিএসইতে মোট ১৫৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ১০০টি কোম্পানির, কমেছে ৪৫টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১১টির।

সিএসইতে ১৪ কোটি৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

ঢাকা/এনটি/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ