মরুর দেশের খেজুর এখন খাগড়াছড়ির পাহাড়ে
Published: 30th, June 2025 GMT
দুই একর পাহাড়ি জমিতে সারি সারি খেজুরগাছ। একেকটি গাছের উচ্চতা ১০ থেকে ২০ ফুট। অধিকাংশ গাছে ঝুলছে সবুজ ও লাল রঙের খেজুর। এসব খেজুর ‘বারহি’ ও ‘আম্বার’ জাতের। এ ধরনের খেজুরের চাষ এলাকায় আগে কখনো হয়নি। প্রথমবারের মতো চাষ করে সফল হয়েছেন নুর আলম।
সফল এই কৃষি উদ্যোক্তা খাগড়াছড়ি জেলার বাসিন্দা। জেলার মাটিরাঙ্গায় দক্ষিণ রসুলপুর এলাকায় তাঁর এই খেজুরের বাগান। একসময় আইটি সেক্টরের ব্যবসায় নিয়োজিত ছিলেন নুর আলম। ব্যবসার ফাঁকে শখের বসে জায়গা কিনে গড়ে তোলেন ফলের বাগান। সেই বাগানেই লাগানো হয়েছে এসব খেজুরগাছ।
মাটিরাঙ্গা বাজার থেকে পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণে রসুলপুর এলাকা। গত শনিবার বাগানে গিয়ে কথা হয় নুর আলমের সঙ্গে। তিনি জানান, ১৫ একর জমিতে ফলের বাগান তাঁর। এর মধ্যে দুই একর জমিতে খেজুরগাছ লাগিয়েছেন। বাগানে বারহি জাতের খেজুরগাছ আছে ১২৫টি। আম্বার জাতের গাছ আছে দুটি।
নিজের আগ্রহ থেকে ২০১৮ সালে ব্যবসা ছেড়ে পুরোপুরি চাষাবাদে মন দেন বলে জানান নুর আলম। তিনি জানান, তাঁর বাগানে ড্রাগন, খেজুর, মাল্টা, আম, লটকন, আপেল, আলুবোখারা, বাম্বুটানসহ বিভিন্ন ফলের চাষ হয়েছে। ইউটিউবে ভিডিও দেখে খেজুর চাষে আগ্রহী হয়েছিলেন। এরপর পাহাড়ে বাগানের মাটি পরীক্ষা করে দেখেন খেজুর চাষের উপযোগী কি না। মাটি পরীক্ষার পর ২০১৯ সালে তিনি প্রথমে ইংল্যান্ড থেকে ২৫টি চারা নিয়ে আসেন। পরের বছর সৌদি আরব থেকে আরও ৫০টি খেজুরের চারা নিয়ে এসে রোপণ করেন বাগানে।
গত বছর তিন লাখ টাকার খেজুর বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে অধিকাংশ গাছেই ফলন রয়েছে। এ বছর অন্তত সাত লাখ টাকার খেজুর বিক্রির আশা করছিনুর আলম, বাগানমালিকনুর আলম বলেন, ‘গাছ লাগানোর তিন বছরের মাথায় ফলন বিক্রি করতে শুরু করেছি। প্রথম বছর বিক্রি করেছি প্রায় এক লাখ টাকার খেজুর। গত বছর তিন লাখ টাকার খেজুর বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে অধিকাংশ গাছেই ফলন রয়েছে। এ বছর অন্তত সাত লাখ টাকার খেজুর বিক্রির আশা করছি।’
বর্তমানে বাগানে এসেই পাইকারেরা ৫৫০ টাকা কেজিতে খেজুর কিনে নিচ্ছেন জানিয়ে নুর আলম বলেন, জেলায় প্রথমবারের মতো তিনি বিদেশি জাতের খেজুরের চাষ করেছেন। তাঁর বাগানের খেজুরের আকার ও স্বাদ আরবের খেজুরের মতোই।
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার দক্ষিণ রসুলপুরে নুর আলমের খেজুরের বাগান.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথমবারের মতো সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের সরাসরি ছবি তুলেছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ
মহাকাশে পাঠানো এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় টেলিস্কোপ হচ্ছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (জেডব্লিউএসটি)। মহাজাগতিক রহস্য অনুসন্ধানের পাশাপাশি মহাবিশ্বের প্রান্তে কী আছে, তা নিয়ে আশ্চর্যজনক ছবি প্রকাশ করে চলেছে টেলিস্কোপটি। এবার প্রথমবারের মতো সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহ বা বহির্গ্রহের সরাসরি ছবি তুলেছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। টিডব্লিউএবি নামের উজ্জ্বল বহির্গ্রহটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১১১ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। পৃথিবীর চেয়ে ১০০ গুণ বড় বিশালাকার বহির্গ্রহটি তরুণ লাল বামন নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সৌরজগতের বাইরে থাকা নতুন গ্রহটি এখন পর্যন্ত সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা সবচেয়ে ছোট বহির্গ্রহ। এর আগে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে শত শত বহির্গ্রহ আবিষ্কার করা হয়েছে। সাধারণত বহির্গ্রহগুলোর প্রদক্ষিণ করা নক্ষত্রকে পর্যবেক্ষণ করে সেগুলোর উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়ে থাকে। এবারই প্রথম সরাসরি কোনো বহির্গ্রহের ছবি তোলা সম্ভব হয়েছে। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে বহির্গ্রহটির তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
বহির্গ্রহ যেহেতু খুব বেশি নিজস্ব আলো নির্গত করে না তাই গ্রহগুলোর ছবি তোলা অত্যন্ত কঠিন। আর তাই বিজ্ঞানীরা সাধারণত ট্রানজিট পদ্ধতি ব্যবহার করে বহির্গ্রহের সন্ধান করেন। এ পদ্ধতিতে নক্ষত্র প্রদক্ষিণ করার সময় আলো কতটা কমে তা পরিমাপ করে বহির্গ্রহগুলোর অবস্থান শনাক্ত করা হয়।
এ বিষয়ে প্যারিস অবজারভেটরির বিজ্ঞানী অ্যান-মেরি ল্যাগ্রেঞ্জ জানিয়েছেন, সাধারণভাবে বহির্গ্রহ শনাক্ত করা সহজ নয়। এগুলোর ছবি তোলা আরও কঠিন। স্পষ্টভাবে বলা যায়, বহির্গ্রহটি লাখ লাখ বছর আগে তৈরি হয়েছে। গ্রহটির কক্ষপথের চারপাশে পদার্থের একটি পাতলা বলয় রয়েছে। একে ট্রোজান রিং বলে।
সূত্র: ডেইলি মেইল