দুই একর পাহাড়ি জমিতে সারি সারি খেজুরগাছ। একেকটি গাছের উচ্চতা ১০ থেকে ২০ ফুট। অধিকাংশ গাছে ঝুলছে সবুজ ও লাল রঙের খেজুর। এসব খেজুর ‘বারহি’ ও ‘আম্বার’ জাতের। এ ধরনের খেজুরের চাষ এলাকায় আগে কখনো হয়নি। প্রথমবারের মতো চাষ করে সফল হয়েছেন নুর আলম।

সফল এই কৃষি উদ্যোক্তা খাগড়াছড়ি জেলার বাসিন্দা। জেলার মাটিরাঙ্গায় দক্ষিণ রসুলপুর এলাকায় তাঁর এই খেজুরের বাগান। একসময় আইটি সেক্টরের ব্যবসায় নিয়োজিত ছিলেন নুর আলম। ব্যবসার ফাঁকে শখের বসে জায়গা কিনে গড়ে তোলেন ফলের বাগান। সেই বাগানেই লাগানো হয়েছে এসব খেজুরগাছ।

মাটিরাঙ্গা বাজার থেকে পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণে রসুলপুর এলাকা। গত শনিবার বাগানে গিয়ে কথা হয় নুর আলমের সঙ্গে। তিনি জানান, ১৫ একর জমিতে ফলের বাগান তাঁর। এর মধ্যে দুই একর জমিতে খেজুরগাছ লাগিয়েছেন। বাগানে বারহি জাতের খেজুরগাছ আছে ১২৫টি। আম্বার জাতের গাছ আছে দুটি।

নিজের আগ্রহ থেকে ২০১৮ সালে ব্যবসা ছেড়ে পুরোপুরি চাষাবাদে মন দেন বলে জানান নুর আলম। তিনি জানান, তাঁর বাগানে ড্রাগন, খেজুর, মাল্টা, আম, লটকন, আপেল, আলুবোখারা, বাম্বুটানসহ বিভিন্ন ফলের চাষ হয়েছে। ইউটিউবে ভিডিও দেখে খেজুর চাষে আগ্রহী হয়েছিলেন। এরপর পাহাড়ে বাগানের মাটি পরীক্ষা করে দেখেন খেজুর চাষের উপযোগী কি না। মাটি পরীক্ষার পর ২০১৯ সালে তিনি প্রথমে ইংল্যান্ড থেকে ২৫টি চারা নিয়ে আসেন। পরের বছর সৌদি আরব থেকে আরও ৫০টি খেজুরের চারা নিয়ে এসে রোপণ করেন বাগানে।

গত বছর তিন লাখ টাকার খেজুর বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে অধিকাংশ গাছেই ফলন রয়েছে। এ বছর অন্তত সাত লাখ টাকার খেজুর বিক্রির আশা করছিনুর আলম, বাগানমালিক

নুর আলম বলেন, ‘গাছ লাগানোর তিন বছরের মাথায় ফলন বিক্রি করতে শুরু করেছি। প্রথম বছর বিক্রি করেছি প্রায় এক লাখ টাকার খেজুর। গত বছর তিন লাখ টাকার খেজুর বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে অধিকাংশ গাছেই ফলন রয়েছে। এ বছর অন্তত সাত লাখ টাকার খেজুর বিক্রির আশা করছি।’

বর্তমানে বাগানে এসেই পাইকারেরা ৫৫০ টাকা কেজিতে খেজুর কিনে নিচ্ছেন জানিয়ে নুর আলম বলেন, জেলায় প্রথমবারের মতো তিনি বিদেশি জাতের খেজুরের চাষ করেছেন। তাঁর বাগানের খেজুরের আকার ও স্বাদ আরবের খেজুরের মতোই।

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার দক্ষিণ রসুলপুরে নুর আলমের খেজুরের বাগান.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: খ জ রগ ছ ন র আলম

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটবল দলবিহীন শেষ দেশ মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের ঐতিহাসিক অভিষেক

বিশ্বে ফুটবল দলবিহীন শেষ দেশ হিসেবে পরিচিত মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ অবশেষে ইতিহাস গড়ল। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের আর্কানসাস অঙ্গরাজ্যের স্প্রিংডেলে প্রথমবারের মতো ১১ জনের আনুষ্ঠানিক ফুটবল ম্যাচ খেলতে নামল তারা। প্রতিপক্ষ ছিল ইউএস ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ। যদিও অভিষেক ম্যাচে ৪-০ ব্যবধানে হার মেনেছে প্রশান্ত মহাসাগরের ছোট্ট এই দ্বীপরাষ্ট্রটি।

এই ম্যাচ ছিল আউটরিগার কাপ মিনি-টুর্নামেন্টের প্রথম খেলা। দ্বীপপুঞ্জের নিজ দেশ থেকে প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার দূরে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে স্থানীয় মার্শালিজ প্রবাসীরা বিপুল উৎসাহে সমর্থন জানায়। এটি ছিল এক বিশেষ মুহূর্ত। কারণ, বিশ্বের অন্য কিছু দেশ এখনও ফিফা অনুমোদিত ম্যাচ খেলেনি। আর মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ ছিল একমাত্র দেশ যারা কখনও ১১ জনের পূর্ণাঙ্গ ফুটবল ম্যাচই খেলেনি। জনসংখ্যা ৪০ হাজারেরও কম এই দেশটি এখন বড় স্বপ্ন দেখছে ‘ফিফা ও ওশেনিয়া ফুটবল কনফেডারেশনের (ওএফসি)’ এর স্বীকৃতি পাওয়ার।

দলের প্রধান কোচ লয়েড ওয়ার্স আবেগভরা কণ্ঠে বলেন, “আমরা যখন শুরু করেছিলাম, তখন এটা শুধু কল্পনা ছিল। আজ আমরা বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে প্রথমবার ১১ বনাম ১১ খেলছি। এটা অবিশ্বাস্য। আমরা শিশুদের খেলার সুযোগ, প্রাপ্তবয়স্কদের কোচিংয়ের সুযোগ, সবকিছু ধাপে ধাপে গড়ে তুলেছি। এবার আমরা দেশের হয়ে লড়াই করতে চাই এবং ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে গর্বিত হতে চাই।”

আরো পড়ুন:

বিয়ের আগেই রোনালদো-জর্জিনার বিচ্ছেদ চুক্তি

সেপ্টেম্বরে আর্জেন্টিনার দুই ম্যাচ, অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র সফরে আরও দুই

মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে আগে কখনও ফুটবল জনপ্রিয় হয়নি। জায়গার অভাব, প্রশিক্ষক সংকট এবং খেলাটির প্রতি অনাগ্রহ; সব মিলিয়ে বাস্কেটবলই ছিল সবার প্রথম পছন্দ। এর ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকিও বড় সমস্যা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দেশের গড় উচ্চতা মাত্র দুই মিটার। যা তাদের অস্তিত্বকেই হুমকির মুখে ফেলেছে। তাই ফুটবলকেও তারা ব্যবহার করতে চায় নিজেদের দুরবস্থা বিশ্বকে জানাতে।

আগামী সপ্তাহে দলটি গুয়াম ও টার্কস অ্যান্ড কাইকোস দ্বীপপুঞ্জের বিপক্ষে মাঠে নামবে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফুটবল দলবিহীন শেষ দেশ মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের ঐতিহাসিক অভিষেক
  • ব্রেভিসের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে র‌্যাঙ্কিংয়ে রেকর্ড লাফ