‘চট্টগ্রাম বন্দরকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র চলছে’
Published: 30th, June 2025 GMT
চট্টগ্রাম বন্দরকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) নেতারা। আজ সোমবার বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম বন্দরের ফটকে আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে তাঁরা এই মন্তব্য করেন। চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) ইজারা বন্ধের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (টিইউসি) চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে লুকিয়ে থাকা ষড়যন্ত্রকারীরা বন্দরকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে। গত ১০ দিনে বন্দর নিয়ে ৩ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কখনো বলা হচ্ছে, সাইফ পাওয়ার টেকের সঙ্গে চুক্তি তিন মাস বর্ধিত করা হবে। আবার বলা হচ্ছে, আগামী ছয় মাস বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেরাই এনসিটি পরিচালনা করবে। এরপর আবার বলা হয়েছে, নৌবাহিনী দ্বারা বন্দর পরিচালনা করা হবে।
শ্রমিকনেতা তপন দত্ত বলেন, গত ১০ দিনে এনসিটি নিয়ে সরকার ও বন্দর কর্তৃপক্ষ ভিন্ন ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। যাতে প্রতীয়মান হয় যে বন্দরকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার চেয়েও বন্দরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা এক শ্রেণির বন্দর কর্মকর্তাদের মূল উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্কপের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহেদ উদ্দিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে এ ছাড়া বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বন্দর সিবিএর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এস কে খোদা তোতন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতা মহিন উদ্দিন, বিএলএফের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হক প্রমুখ।
সভায় শ্রমিকনেতারা এনসিটিকে দুবাইভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডকে ইজারা দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের প্রধান বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বার এবং অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত, আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ও সর্বোচ্চ সক্ষমতাসম্পন্ন এনসিটি এখন দেশের সবচেয়ে সফল কনটেইনার টার্মিনাল। একে বিদেশি অপারেটরের হাতে তুলে দেওয়ার অপচেষ্টা জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও চরম আত্মঘাতী।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্র-জনতার ক্ষোভ ও গণপ্রতিরোধকে ‘মব’ বলা ফ্যাসিস্টদের ষড়যন্ত্র: হেফাজতে ইসলাম
গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ক্ষোভ ও গণপ্রতিরোধকে ‘মব’ বলা ফ্যাসিস্টদের ষড়যন্ত্র বলে মনে করছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন না হওয়া পর্যন্ত দেশজুড়ে ছাত্র-জনতার গণপ্রতিরোধ জারি থাকবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, জুলাইর ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবী ছাত্র-জনতার সম্মতির ভিত্তিতে ফ্যাসিবাদ নির্মূল করার দায়িত্ব নিয়ে এসেছে গণঅভ্যুত্থানের সরকার। কিন্তু দুঃখজনকভাবে গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের অনেকে এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। এদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের। কিন্তু এক্ষেত্রে তাদের ব্যর্থতা থাকলেও জুলাইর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতা চুপ করে বসে নেই। সরকার ও প্রশাসন যেখানে ব্যর্থ, সেখানেই জুলাই বিপ্লবের ছাত্র-জনতা এগিয়ে আসবে।
তিনি আরও বলেন, ভুলে গেলে চলবে না, এই অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের ষড়যন্ত্রমূলক ঝড়-ঝাপটাগুলো ঠেকিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র-জনতাই। আজকে ছাত্র-জনতার ফ্যাসিবাদবিরোধী ভূমিকাকে ‘মব’ বলার মধ্যে ফ্যাসিস্টদের ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে আমরা মনে করি। তাছাড়া ভবিষ্যতেও যারা ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে চাইবে, তাদের জন্যও জুলাইর ছাত্র-জনতা অশনিসঙ্কেত। সে কারণে জুলাইর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র আরো বিস্তৃত হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র ঠেকাতে ছাত্র-জনতাকে সব বিভেদ-বিভক্তি এড়িয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তা নাহলে অদূর ভবিষ্যতে নব্য ফ্যাসিবাদ সুযোগ বুঝে তাদের ঘাড় মটকে দেবে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ২০১৩ সালে এদেশের আলেম-ওলামা ও তৌহিদি জনতা শাপলা চত্বরে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধের জাগরণ ঘটিয়েছিল। ২০২১ সালে মোদিবিরোধী আন্দোলনেও এদেশের আলেম-ওলামা ও তৌহিদি জনতা আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জীবন দিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিল। তাদের অনুপ্রেরণায় চব্বিশে এসে ছাত্রদের নেতৃত্বে তৌহিদি জনতাসহ সর্বস্তরের জনগণ এক মহাকাব্যিক গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের পতন ঘটায়। সেই গণঅভ্যুত্থান সফল হলেও জুলাই বিপ্লব এখনো অধরা। জুলাই বিপ্লব বাস্তবায়নসহ সারা দেশে ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন না হওয়া পর্যন্ত জুলাইর বিপ্লবী ছাত্র-জনতার গণপ্রতিরোধ জারি থাকবে ইন-শা-আল্লাহ।