রিকশাচালক তুহিন হত্যা মামলায় আইভীর রিমান্ড শুনানি পিছিয়ে ৭ জুলাই ধার্য
Published: 30th, June 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে রিকশাচালক তুহিন নিহতের ঘটনায় করা মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর রিমান্ড শুনানি স্থগিত করে আগামী ৭ জুলাই পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।
আজ সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মঈন উদ্দিন কাদির শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জয়নাল আবেদীন প্রথম আলোকে জানান, আইভীকে এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই ছানোয়ার হোসেন। এ সময় আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোলের সৃষ্টি হলে আদালতের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। ভার্চ্যুয়ালি কাশিমপুর মহিলা কারাগার থেকে রিমান্ড শুনানিতে অংশ নেন আইভী।
আদালতে আইভীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবুর রহমানসহ ১০–১২ জন আইনজীবী। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ওমর ফারুক।
আইভীর পক্ষের আইনজীবী আওলাদ হোসেন বলেন, মামলার এজাহারে কোথাও আইভী নিজে উপস্থিত ছিলেন বা তাঁর সম্পৃক্ততা আছে, এমন কিছু বলা হয়নি। এ ছাড়া উচ্চ আদালতে আইভীর জামিন আবেদন করা হয়েছে, উল্লেখ করে রিমান্ড শুনানি স্থগিতের আবেদন জানালে আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের সামনে তুহিন মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর তুহিনের স্ত্রী আলেয়া আক্তার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, কায়সার হাসনাত, গোলাম দস্তগীর গাজী এবং সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আইভীসহ ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। ওই মামলার এজাহারে আইভীর ১১ নম্বর আসামি।
৯ মে সকাল পৌনে ছয়টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগের বাড়ি থেকে সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আইভীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। গত বছরের ২০ জুলাই পোশাককর্মী মিনারুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে আইভীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরকসহ মোট ছয়টি মামলা আছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জে চার শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ বাড়িওয়ালার বিরুদ্ধে
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের তারাব পৌরসভার মৈকুলী এলাকায় জালাল মিয়া (৭৮) নামের এক বাড়িওয়ালা তার ভাড়াটিয়াদের চার শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার (১ অক্টোবর) সকালে ভুক্তভোগী ভাড়াটিয়ারা সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেছেন।
এদিকে, সাংবাদিকদের বিষয়টি জানানোর পর বাড়িওয়ালা জালাল মিয়া ও স্থানীয়রা ভাড়াটিয়াদের হুমকি ও থানায় মামলা না করতে চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী রুবিনা বেগম বলেছেন, আমি একটি পোশাক কারখানায় কাজ করি। আমি পরিবার নিয়ে মৈকুলী এলাকায় জালাল মিয়ার ভাড়া বাসায় থাকছি। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কাজ শেষে বাড়িতে ফিরে দেখি জালাল মিয়া আমার ৬ বছরের মেয়েকে বস্ত্রহীন করে ধর্ষণের চেষ্টা চালাচ্ছে। আমি চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এসে আমার মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ করতে যেতে চাইলে জালাল মিয়া ও স্থানীয়রা হুমকি দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায়। আমি তার শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
আরেক ভুক্তভোগী শেফালী বেগম বলেন, কয়েক দিন আগে জালাল মিয়া আমার ১২ বছরের মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এর প্রতিবাদের চেষ্টা করলেও জালাল মিয়া ও স্থানীয়দের কারণে আমি থানায় অভিযোগ করতে পারিনি। আমরা জালাল মিয়ার শাস্তি দাবি করছি।
আরেক ভুক্তভোগী চাঁন মিয়া বলেন, আমরা জালাল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকি। জালাল মিয়া মুদি দোকান করেন। তিনি আমার দুই নাতনিকে ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়েছেন। আমি অন্য জেলা থেকে এসে এখানে থাকি। আমাদের দেখার কেউ নাই। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ভয়ে আমরা প্রশাসনের কাছেও যেতে পারি না। আমরা জালাল মিয়ার বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেহেদী ইসলাম বলেছেন, এমন কোনো ঘটনা আমাদের জানা নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/অনিক/রফিক