বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে রিকশাচালক তুহিন নিহতের ঘটনায় করা মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর রিমান্ড শুনানি স্থগিত করে আগামী ৭ জুলাই পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।

আজ সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মঈন উদ্দিন কাদির শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জয়নাল আবেদীন প্রথম আলোকে জানান, আইভীকে এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই ছানোয়ার হোসেন। এ সময় আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোলের সৃষ্টি হলে আদালতের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। ভার্চ্যুয়ালি কাশিমপুর মহিলা কারাগার থেকে রিমান্ড শুনানিতে অংশ নেন আইভী।

আদালতে আইভীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবুর রহমানসহ ১০–১২ জন আইনজীবী। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ওমর ফারুক।

আইভীর পক্ষের আইনজীবী আওলাদ হোসেন বলেন, মামলার এজাহারে কোথাও আইভী নিজে উপস্থিত ছিলেন বা তাঁর সম্পৃক্ততা আছে, এমন কিছু বলা হয়নি। এ ছাড়া উচ্চ আদালতে আইভীর জামিন আবেদন করা হয়েছে, উল্লেখ করে রিমান্ড শুনানি স্থগিতের আবেদন জানালে আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের সামনে তুহিন মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর তুহিনের স্ত্রী আলেয়া আক্তার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, কায়সার হাসনাত, গোলাম দস্তগীর গাজী এবং সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আইভীসহ ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। ওই মামলার এজাহারে আইভীর ১১ নম্বর আসামি।

৯ মে সকাল পৌনে ছয়টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগের বাড়ি থেকে সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আইভীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। গত বছরের ২০ জুলাই পোশাককর্মী মিনারুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে আইভীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরকসহ মোট ছয়টি মামলা আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইনজ ব আইভ র

এছাড়াও পড়ুন:

জামিনে মুক্তির পরই ভারতে পালিয়েছেন এসআই আকবর, দাবি নিহতের মায়ের

সিলেটে পুলিশের হেফাজতে নিহত রায়হান আহমদ (৩৪) হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়া জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরই ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে দাবি করেছেন নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম। আজ বুধবার বেলা একটার দিকে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দাবি করেন।

সালমা বেগম বলেন, আকবর হোসেন প্রথমেই ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তখন পুলিশ অনেক কষ্টে কানাইঘাটের ডনা সীমান্ত থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল। জামিন পেয়েই যে পালানোর চেষ্টা করবেন, সেটা স্বাভাবিক ছিল।

২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ। পরে ১১ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী। পরে মহানগর পুলিশের অনুসন্ধান কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে। এরপর হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। প্রধান অভিযুক্ত আকবরকে ৯ নভেম্বর কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।

২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পিবিআই। অভিযোগপত্রে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। অন্য অভিযুক্তরা হলেন এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুন অর রশিদ ও টিটু চন্দ্র দাস, ফাঁড়ির ‘টু-আইসি’ পদে থাকা এসআই হাসান উদ্দিন ও আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত রোববার আকবর হোসেন উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বের হন। এরপর মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষ পিটিশন ফর লিভ টু আপিল দায়ের করে। শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ উচ্চ আদালতের আদেশ স্থগিত করেন। পাশাপাশি আকবর হোসেনকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

সালমা বেগম বলেন, হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত ছয় আসামির মধ্যে আবদুল্লাহ আল নোমান শুরু থেকেই পলাতক। কারাগারে থাকা পাঁচজনের মধ্যে চারজনই জামিনে মুক্ত আছেন। যার কারণে পুরো পরিবার ও মামলার সাক্ষীরা শঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলার বিচারকাজ প্রভাবিত করার আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য তিনি ন্যায়বিচার পেতে প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতি আবেদন জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, সহসভাপতি আমির হোসেন, দুর্নীতি মুক্তকরণ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ হোসেন, সিলেট যুব উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি আফিকুর রহমান, আখালিয়ার মুরব্বি ছানাউল্লাহ ছানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাঁরা আকবর হোসেনকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা ও দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির দাবি জানান।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল ফজল চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার তাঁর জামিন স্থগিত হয়েছে। তাঁকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আত্মসমর্পণ না করলে তাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গ্রেপ্তার করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আ.লীগ কর্মী সন্দেহে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে তিনজন আটক
  • ভোটের মাঠে সরব জামায়াতপন্থি আইনজীবিদের ভোট প্রার্থনা
  • আইনজীবী সমিতির নির্বাচন : হুমায়ূন-আনোয়ার প্যানেলের পক্ষে জমজমাট প্রচারণা 
  • রংপুরে দুইজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ৮ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত
  • দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তারাগঞ্জের ২ এসআই ও ৬ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার
  • হুমায়ূন-আনোয়ারের নেতৃত্বে বিএনপি’র পূর্ণ প্যানেল ঘোষণা
  • নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ৩ প্যানেলের মনোনয়নপত্র জমা 
  • বন্দরে নারী মাদক কারবারিসহ গ্রেপ্তার ২, ইয়াবা ও গাঁজা উদ্ধার
  • নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ৩ প্যালেনের মনোনয়নপত্র জমা 
  • জামিনে মুক্তির পরই ভারতে পালিয়েছেন এসআই আকবর, দাবি নিহতের মায়ের