ঘুষ ও দুর্নী‌তির মাধ‌্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বি‌দে‌শে টাকা পাচা‌রের অভিযো‌গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও তার স্ত্রী শাহিন সিদ্দিককে তলব ক‌রে‌ছে দুর্নী‌তি দমন ক‌মিশন (দুদক)।

তাছাড়া মানি লন্ডারিং, রাজস্ব ফাঁকি, ভূমি দখল, ঋণ জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বসুন্ধরা গ্রু‌পের চেয়ারম‌্যান ব‌্যবসায়ী আলহাজ্ব আহমেদ আকবর সোবহানকেও তলব ক‌রে‌ছে সংস্থা‌টি। তা‌দের‌ বুধবার (২ জুলাই) অভিযো‌গের বিষ‌য়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হ‌বে। নির্ধা‌রিত সম‌য়ে তা‌দের‌ সশরী‌রে হা‌জির হ‌তে বলা হ‌য়ে‌ছে।

সোমবার (৩০ জুন) দুদ‌কের প্রধান কার্যাল‌য়ে ক‌মিশ‌নের মহাপ‌রিচালক আক্তার হো‌সেন এ তথ‌্য জানান। দুদক তা‌দের প্রত্যেক‌কে হা‌জির হওয়ার জন‌্য পৃথকভা‌বে নো‌টিশ পা‌ঠি‌য়ে‌ছে।

আরো পড়ুন:

ইভিএম ক্রয়ে অনিয়ম: ইসির ৬ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব

স্ত্রী-ছেলেসহ দুদকের মামলায় আসামি রাজশাহীর আ.

লীগ নেতা বেন্টু

এতে বলা হ‌য়ে‌ছে, আপনা‌দের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনসহ নানা অভিযোগ র‌য়ে‌ছে। এসব অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে আপনার বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।

এজন্য এসব অভিযোগের বিষয়ে আগামী বুধবার (২ জুলাই) দুপুর ১২টায় দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য আপনাদের অনুরোধ করা হলো।

এর আগে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও তার স্ত্রী শাহীন সিদ্দিকের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন আদালত।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) এ আদেশ দেন।

দুদক জানায়, তারিক আহমেদ সিদ্দিকের বারিধারার সাততলা বাড়ি, তার স্ত্রী শাহীন সিদ্দিকের নামে থাকা বারিধারার ফ্ল্যাট ক্রোক করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের নামে থাকা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের জমিও ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এর আগে, তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও তার স্ত্রী শাহীন সিদ্দিকের বিরু‌দ্ধে অনুসন্ধান শুরু ক‌রে দুদক। অভি‌যোগ অনুসন্ধা‌নে সাত সদস্য বিশিষ্ট এক‌টি ক‌মিটি গঠন ক‌রে দুদক।

অন‌্যদি‌কে, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরু‌দ্ধে মানি লন্ডারিং, রাজস্ব ফাঁকি, ভূমি দখল, ঋণ জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান কর‌ছে দুদক।

গত বুধবার ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তা‌দের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব ও শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়ে‌ছেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত র ক আহম দ স দ দ ক দমন ক

এছাড়াও পড়ুন:

জামিনে মুক্তির পরই ভারতে পালিয়েছেন এসআই আকবর, দাবি নিহতের মায়ের

সিলেটে পুলিশের হেফাজতে নিহত রায়হান আহমদ (৩৪) হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়া জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরই ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে দাবি করেছেন নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম। আজ বুধবার বেলা একটার দিকে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দাবি করেন।

সালমা বেগম বলেন, আকবর হোসেন প্রথমেই ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তখন পুলিশ অনেক কষ্টে কানাইঘাটের ডনা সীমান্ত থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল। জামিন পেয়েই যে পালানোর চেষ্টা করবেন, সেটা স্বাভাবিক ছিল।

২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ। পরে ১১ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী। পরে মহানগর পুলিশের অনুসন্ধান কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে। এরপর হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। প্রধান অভিযুক্ত আকবরকে ৯ নভেম্বর কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।

২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পিবিআই। অভিযোগপত্রে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। অন্য অভিযুক্তরা হলেন এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুন অর রশিদ ও টিটু চন্দ্র দাস, ফাঁড়ির ‘টু-আইসি’ পদে থাকা এসআই হাসান উদ্দিন ও আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত রোববার আকবর হোসেন উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বের হন। এরপর মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষ পিটিশন ফর লিভ টু আপিল দায়ের করে। শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ উচ্চ আদালতের আদেশ স্থগিত করেন। পাশাপাশি আকবর হোসেনকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

সালমা বেগম বলেন, হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত ছয় আসামির মধ্যে আবদুল্লাহ আল নোমান শুরু থেকেই পলাতক। কারাগারে থাকা পাঁচজনের মধ্যে চারজনই জামিনে মুক্ত আছেন। যার কারণে পুরো পরিবার ও মামলার সাক্ষীরা শঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলার বিচারকাজ প্রভাবিত করার আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য তিনি ন্যায়বিচার পেতে প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতি আবেদন জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, সহসভাপতি আমির হোসেন, দুর্নীতি মুক্তকরণ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ হোসেন, সিলেট যুব উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি আফিকুর রহমান, আখালিয়ার মুরব্বি ছানাউল্লাহ ছানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাঁরা আকবর হোসেনকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা ও দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির দাবি জানান।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল ফজল চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার তাঁর জামিন স্থগিত হয়েছে। তাঁকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আত্মসমর্পণ না করলে তাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গ্রেপ্তার করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রীতি খেলার শেষে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ, সুনামগঞ্জে প্রাণ হারালেন দুজন
  • সুনামগঞ্জে ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ২
  • জামিনে মুক্তির পরই ভারতে পালিয়েছেন এসআই আকবর, দাবি নিহতের মায়ের