যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের বৈদেশিক সহায়তা কার্যক্রমে কাটছাঁটের কারণে বিশ্বে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষের প্রাণহানি হতে পারে। এর এক–তৃতীয়াংশই শিশু।

আজ মঙ্গলবার প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে।
বিশ্বখ্যাত চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেট এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। থমকে থাকা মার্কিন সহায়তা কার্যক্রমে গতি ফেরানোর প্রত্যাশা নিয়ে এ সপ্তাহে স্পেনে জাতিসংঘের একটি সম্মেলনে জড়ো হচ্ছেন রাজনীতি–ব্যবসা খাতের বিশ্বনেতারা। এর আগে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলো।

গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে আসেন ট্রাম্প। এর আগপর্যন্ত বৈশ্বিক মানবিক সহায়তা তহবিলের ৪০ শতাংশের বেশি একাই জোগান দিত যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডি। ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের সপ্তাহ দুয়েক পর প্রেসিডেন্টের তৎকালীন ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা ও বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক ইউএসএআইডির কার্যক্রমে কাটছাঁট করার বিষয়ে গর্বভরে ঘোষণা দেন।

এখন গবেষণা প্রতিবেদনের সহলেখক ও স্পেনের বার্সেলোনা ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথের (আইএসগ্লোবাল) গবেষক ডেভিড রাসেলা সতর্ক করে বলছেন, তহবিলে কাটছাঁটের ঘটনা সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে দুই দশকের অগ্রগতিকে হঠাৎ থমকে দেওয়া কিংবা বিপরীতমুখী করার ঝুঁকিতে ফেলেছে।

এক বিবৃতিতে ডেভিড বলেন, অনেক নিম্ন ও মধ্যমআয়ের দেশের ক্ষেত্রে ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আসতে পারে। ফলে যে ধাক্কা আসবে, সেটাকে বিশ্বব্যাপী মহামারি বা বড় ধরনের সশস্ত্র সংঘাতের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে।

১৩৩টি দেশ থেকে সংগ্রহ করা তথ্য–উপাত্ত পর্যালোচনা করে আন্তর্জাতিক গবেষকদের দল অনুমান করেছে, ২০০১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোয় ইউএসএআইডির তহবিলের কারণে সব মিলিয়ে ৯ কোটি ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঠেকানো গেছে।

এখন ইউএসএআইডির অর্থায়নে কাটছাঁট করার ফলে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি ঝুঁকিতে থাকা মানুষের সম্ভাব্য মৃত্যু এড়ানো সম্ভব না–ও হতে পারে। এর মধ্যে ৫ বছরের নিচের ৪৫ লাখের বেশি শিশুও রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিবছর প্রায় সাত লাখ শিশুর মৃত্যু ঘটতে পারে।

গবেষকেরা মডেলিংয়ের মাধ্যমে হিসাব করে দেখিয়েছেন, মার্কিন সরকারের ঘোষিত ৮৩ শতাংশ তহবিল হ্রাস কার্যকর হলে এ প্রাণহানি ঘটতে পারে।

সম্ভাব্য প্রাণহানির এ সংখ্যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত সেনাসংখ্যার চেয়ে বেশি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কোটিখানেক সেনাসদস্যের প্রাণ গিয়েছিল।

আরও পড়ুনইউএসএআইডি বন্ধ করতে ট্রাম্প প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক পরিকল্পনা ঘোষণা২৯ মার্চ ২০২৫আরও পড়ুনইউএসএআইডির সহায়তা স্থগিতে উন্নয়নকর্মীরা কেমন আছেন২৯ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউএসএআইড র তহব ল

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্লোটিলা বহরের ম্যারিনেট গাজা জলসীমা থেকে কত দূরে

দ্য ম্যারিনেট। ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নৌবহরের নৌযান। নৌযানটি এখনো ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখী যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। আজ শুক্রবার আল-জাজিরার অনলাইনে এই তথ্য জানানো হয়।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি বলছে, একমাত্র দ্য ম্যারিনেটকেই এখনো আটক করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। বহরের বাকি নৌযানগুলোকে তারা ইতিমধ্যে আটক করেছে।

দ্য ম্যারিনেট পোল্যান্ডের পতাকাবাহী নৌযান। তবে নৌযানটির মালিকের বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য কোনো নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে পাওয়া যায়নি।

ফ্লোটিলা বহরে ভেসে চলা একমাত্র জাহাজ ম্যারিনেট কোথায়, দেখুন লাইভ ট্র্যাকারে

নৌযানটিতে ছয়জন আরোহী আছেন। এই আরোহীদের মধ্যে একজন তুরস্কের অধিকারকর্মী সিনান আকিলতু। তিনি আজ নৌযানটি থেকে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমরা এখন উচ্চ ঝুঁকির এলাকায় প্রবেশ করেছি। আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা দুটি মহৎ পরিণতির যেকোনো একটির দিকে অগ্রসর হচ্ছি।’

ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকারের তথ্যের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানায়, আজ ভোরের দিকে ভূমধ্যসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় চলছিল ম্যারিনেট। এ সময় সূর্যোদয় হচ্ছিল।

ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, ভোর ৪টার দিকে ম্যারিনেটের গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৩ দশমিক ৭৮ নট। (ঘণ্টায় প্রায় ৭ কিলোমিটার)। নৌযানটি গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে প্রায় ৪৩ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ৮০ কিলোমিটার) দূরে অবস্থান করছিল।

আরও পড়ুনগ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজে জলকামান ব্যবহার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী১৩ ঘণ্টা আগেগ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একটি বাদে সব নৌযান আটক করেছে ইসরায়েল

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই ম্যারিনেটকে সতর্ক করে দিয়েছে। তারা বলেছে, যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ ও অবরোধ ভাঙার যেকোনো চেষ্টা প্রতিহত করা হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে নৌযানটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। তবে তা ঠিক করা হয়েছে। নৌযানটি গাজা অভিমুখে চলছে।

ফ্লোটিলা আয়োজকেরা জানিয়েছেন, বহরের ৪২টি নৌযানকে অবৈধভাবে আটকানো হয়েছে। আরোহীদের আটক হয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও ম্যারিনেট পিছু হটছে না।

আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের৯ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনইসরায়েল ‘জলদস্যুর কাজ’ করেছে: এরদোয়ান১৪ ঘণ্টা আগে

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা বলেছে, ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়, ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।

ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিংকের মাধ্যমে সংযুক্ত আছে বলে জানিয়েছে ফ্লোটিলা আয়োজকেরা।

আরও পড়ুনসুমুদ ফ্লোটিলার আটক অধিকারকর্মীরা ২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলে পৌঁছতে পারেন২০ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ